JANA AJANA — TAPAN KUMAR BIRAGYA / NATUNPATA / 4 AUG.

জানা অজানা — সোমড়াবাজারের মোহনভোগ / নতুনপাতা

ছোটদের বিভাগ

JANA AJANA  TAPAN KUMAR BIRAGYA  NATUNPATA  4 AUG

জানা অজানা

সোমড়াবাজারের মোহনভোগের গল্প
তপন কুমার বৈরাগ্য

কাটোয়া ব্যান্ডেল রেল লাইনে সোমড়াবাজার এলেই শোনা যায়
মিষ্টান্ন বিক্রেতাদের কাছ থেকে-সোমড়াবাজারের বিখ্যাত মিষ্টান্ন
মোহনভোগ। এই মিষ্টি খেলে সকলের দেহ ও মন ভরে যায়।
অপূর্ব স্বাদের এই মিষ্টান্ন। মোহন মিত্র যিনি শান্তিপুরের বিখ্যাত
গুরুমহাশয় ছিলেন।তিনি খুব সৎ এবং নিষ্ঠাবান ছিলেন।
যার জন্য তাঁকে চরম দারিদ্রতার মধ্যে দিন কাটাতে হতো।
তার পুত্র রামেশ্বর মিত্র ছিলেন শিক্ষিত ও বুদ্ধিমান। তিনি বুদ্ধিবলে
মুঘলসম্রাট ঔরঙ্গজেবের হিসাব রক্ষক পদে নিযুক্ত হন।


সালটা সম্ভবত১৭০৪হবে।ঔরঙ্গজেবের কাজকর্মে খুশি হয়ে
ঔরঙ্গজেব তাঁকে মুস্তাকি উপাধি দিলেন। কথিত আছে
মুস্তাকি উপাধি পাওয়ার পর রামেশ্বর মিত্র মুস্তাকি
মনে মনে স্থির করলেন সম্রাটকে নিজেরহাতের তৈরি মিষ্টান্ন 
খাওয়াবেন। তিনি সোমড়াবাজারে ফিরেএলেন।
ভাবতে লাগলেন কি মিষ্টি তিনি সম্রাটকে খাওয়াবেন।
অনেক ভেবেচিন্তে তিনি মানুষের রসনা মোহিত মিষ্টান্ন তৈরি করলেন।
এই মিষ্টান্ন তৈরি করলেন সুজি ,চিনি,দুধ প্রভৃতি দ্বারা।
কয়েকদিন পর সম্রাটের দরবারে উপস্থিত হলেন তিনিএই মিষ্টান্ন নিয়ে।
সম্রাটতো খেয়ে বড্ড খুশি।সম্রাট রামেশ্বরের কাছে জানতে
চায়লেন--দারুণ মিষ্টি।এই মিষ্টির নাম কি?
রামেশ্বর মিষ্টির তো নাম দেন নি।


হঠাৎ মনে পড়লো তার বাবার নাম। বাবার নাম যেহেতু মোহন।তাই
বুদ্ধি করে বললেন এই মিষ্টির নাম মোহনভোগ।
সেই থেকে সোমড়াবাজারে মোহনভোগের নাম দিকেদিকে ছড়িয়ে
পড়লো। এর আগে সোমড়াবাজারের কোনো নাম ছিলো না।
এই অঞ্চলে সোমরস কারবারীরা বাস করতো। তারাই এই অঞ্চলের নাম
দেন সোমড়াবাজার।সোমড়াবাজারে রামেশ্বর মিত্র মুস্তাকিদের তৈরি
অনেক মন্দির আছে।এই মন্দিরগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য--হর সুন্দরী
মন্দির,নিস্তারিণী মন্দির,আনন্দময়ী মন্দির,রাধাকুঞ্জ ইত্যাদি।
বর্তমানে সোমরাবাজারে অনেক মিষ্টির দোকান আছে।প্রতিটা
মিষ্টির দোকানেই আছে মোহনভোগ।
এখানকার অনেক মানুষেরই জীবন ও জীবিকা গড়ে উঠেছে
এই মোহনভাগকে কেন্দ্র করে। 

Comments :0

Login to leave a comment