অতি গরিবিকে হাটাতে বিকল্প লালঝাণ্ডাই। কেরালার উদাহরণ টেনে শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গ প্রাদেশিক কৃষকসভার মঞ্চ থেকে সেই সাফল্য মনে করালেন সারা ভারত কৃষকসভার সাধারণ সম্পাদক বিজু কৃষ্ণান।
শুক্রবার বর্ধমানের সভা থেকে তিনি বলেন, ‘‘দিল্লিতে নরেন্দ্র মোদী আর এখানে মমতা ব্যানার্জির সরকারের মনোভাবে ফারাক নেই। কিন্তু কেরালায় বামফ্রন্ট সরকার বিকল্প পথে হেঁটেছে। গরিব মানুষকে কেবল খাদ্যশস্য নয়, অতি গরিব ৯০ লক্ষ পরিবারকে দিয়েছে বিনামূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় ষোলটি পণ্য।’’
প্রাদেশিক কৃষক সভার রাজ্য সম্মেলনের প্রকাশ্য সমাবেশে সভাপতিত্ব করেছেন সংগঠনের সভাপতি বিপ্লব মজুমদার। বক্তব্য রেখেছেন রাজ্য সম্পাদক অমল হালদার, দেশের প্রবীণ কৃষকনেতা এবং সারা ভারত কৃষকসভার সহসভাপতি হান্নান মোল্লাও। মঞ্চে ছিলেন ত্রিপুরার কৃষকনেতা পবিত্র কর সহ নেতৃবৃন্দ।
বিজু বলেছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে কৃষকরা সরকারি দামে ধান বেচতে পারছেন না। কেরালায় সরকার তিন হাজার টাকা কুইন্টালে ধান কিনছে। তা’হলে মোদী বা মমতা ব্যানার্জির সরকার কেন এই দামে কিনতে পারে না? আমাদেরই বিকল্প উদাহরণ জনতার সামনে হাজির হতে হবে। কেরালার অভিজ্ঞতা বলতে হবে। সেরাজ্যে অতি গরিবি হটাতে পেরেছে লালঝাণ্ডার সরকার। চীনের পর পেরেছে কেরালা।’’
কেরালার অভিজ্ঞতা জানিয়ে বলেছেন যে ৬৪ লক্ষ মানুষকে ২ হাজার টাকা পেনশন দিয়েছে সেরাজ্যের সরকার। সরকারি স্কুল, স্বাস্থ্য পরিষেবা উন্নত করেছে।’’
বিজু বলেন, ‘‘মালদা, মুর্শিদাবাদ সহ বাংলার বহু জেলা থেকে কেরালায় বহু মানুষ কাজ করতে যান কেন? কারণ লড়াই করে সঙ্গত মজুরির দাবি আদায় হয়েছে। তাঁরা বাড়তি মজুরি পান। পশ্চিমবঙ্গেও এমন মজুর-কৃষকদের সরকার গড়তে হবে। তার জন্য লড়াই গড়তে হবে। শ্রমিক-কৃষক ঐক্য গড়ে চলবে লড়াই। এমন লড়াই যা প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ঝুঁকতে বাধ্য করেছিল।’’
সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’-র গল্প মনে করান বিজু। তিনি সেই গানের কথা বলেন বাংলাতেই- ‘ভালো জনে রইল ভাঙা ঘরে, মন্দ যে সে সিংহাসনে চড়ে’। তিনি বলেন, আজও সেই অবস্থা, দেশে বা রাজ্যে। সোনার ফসল ফলায় যে কৃষক সে দাম পায় না। মজুরি পায় না শ্রমিক। তাই সেই, ‘দড়ি ধরে মারো টান, রাজা হবে খান খান।’ লালঝাণ্ডা নিয়ে লড়াই হলে শ্রেণিশত্রু পরাজিত হবেই।
বিজু আরও বলেন, ‘সোনার বাংলা’ গানে নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে আসামের বিজেপি সরকার। আসলে আরএসএস রবীন্দ্রনাথের চিন্তাধারা বিরোধী। এরপর একদিন বলবে ‘একবার বিদায় দাও মা’ গাওয়া দেশদ্রোহী। আমরা এই শক্তির বিরুদ্ধে লড়ছি। জিএসটি, নোটবন্দি করে লুটে এখন বলছে ‘জিএসটি উৎসব’ কর। জিএসটি কমানোর লাভ আমাদের মিলছে না। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক নেই, চিকিৎসা নেই। লকডাউনে অসংখ্য পরিযায়ী শ্রমিক বিপন্ন হয়েছেন। তাই সব অংশকে এক হয়ে গণতন্ত্রের শত্রুদের পরাজিত করার আহ্বান জানান তিনি।
Vijoo Krishnan
অতি গরিবিকে হটাতে বিকল্প লালঝাণ্ডাই, বর্ধমানে বললেন বিজু কৃষ্ণান
শুক্রবার বর্ধমানের উৎসব ময়দানে বিজু কৃষ্ণান।
×
Comments :0