চিন্ময় কর- ঝাড়গ্রাম
ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রের সিপিআই(এম) প্রার্থী সোনামনি মুর্মু টুডু সমর্থনে বৃহস্পতিবার গ্রামে গ্রামে প্রচারে মানুষ সামিল হলেন। জানালেন তাদের সমস্যার কথাও। তৃণমূল ও বিজেপি তাদের ঠকিয়েছে তার প্রতিকারে এদিন প্রচারে সামিল হলেন। এক সময়ের মাওবাদী সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর হয়ে ওঠা এলাকা আজ জড়তা কাটিয়ে গ্রামে গ্রামে সাজিয়ে তুলেছেন লাল ঝান্ডায়।
জঙ্গলের রসদ জোগাড় করেই সংসার চালিয়ে আসছেন বনাঞ্চলের মানুষ কয়েক পুরুষ ধরে। তৃণমূল সরকার ও পুলিশ প্রশাসন সেই জঙ্গলের রসদ ফড়েদের জন্য ব্যাবস্থা করেছে বলে অভিযোগ তুললেন শসাবেদিয়া মৌজার দূর্গা হাঁসদা, লগেন মুর্মু, রবি টুডুরা। তাঁরা বলছেন, গত বর্ষার সময়ও জঙ্গলের কুড়ি ছাতু জোগাড়ে গেলে পুলিশ প্রসাশন তাদের মারধর করে টর্চ লাইট,সাজ সরঞ্জাম কেড়ে নেয়। তাদের সেই অভিযোগও এদিন শুনলেন ঝাড়গ্রামের সিপিআই(এম) প্রার্থী সোনামনি মুর্মু টুডু।
জঙ্গলের রাস্তায় ঝুলছে সাইনবোর্ড, তাতে লেখা রয়েছে জঙ্গলে প্রবেশ নিষেধ। গোয়ালতোড়ের ভালুকবাসা জঙ্গল লাগুয়া পেরুয়াবাদ, মাকলি, শষাবেদিয়া এই রকম একাধিক মৌজায় ঝোলানো বেশীর ভাগ সাইনবোর্ড রঙ চটে আবছা হয়ে গেছে। তাঁরা আতঙ্কে এরপর হয়তো ওদের উচ্ছেদ করতে পারে এই সরকার। দূর্গা হাঁসদা, লগেন মুর্মু, রবি টুডুরা অভিজ্ঞতায় বুঝেছেন জঙ্গলের অধিকার কেড়ে নেওয়ার পর এবার যদি উচ্ছেদ করে লড়াই করতে পাশে থাকবে একমাত্র লাল ঝান্ডা। সিপিআই(এম) প্রার্থীর কাছে এদিন সেই ভরসাই পেয়েছেন তাঁরা।
লাল ঝান্ডার হাত ধরেই বসতি গড়ে উঠেছে জঙ্গল লাগোয়া ছোটো ছোটো রুক্ষ ভূমিতে। জঙ্গলের কাজু, আম কাঁঠাল আনারস জাম এমনকি তালশাঁস আজ তারা আর হাত দিতে পারেন না। বাবুই দড়ি থেকে কলমি লোটা, তুলসী, বাসব, সিঙ্কোনা সবই বন মাফিয়ারা লুঠ করে লরিতে নিয়ে চলে যায়। বখরা তৃণমূল- বিজেপি’র নেতারা পায় সহযোগে আছে পুলিশ। নিষেধাজ্ঞার কারণে রুটি রুজিতে সঙ্কট। নীরব তৃণমূল বিজেপি দুই সরকার।
বামফ্রন্টের সময়ে এঁরাই জঙ্গল রক্ষা করার কাজ করতেন দল গঠন করে। কাজু পেয়ারা, আম কাঁঠাল সহ জঙ্গলের কাঠ বিক্রি হলে তার ৫০ ভাগ পেতেন গ্রামের মানুষ। সেটাও লুঠ হচ্ছে। এলাকার কর্মঠ মানুষ সঙ্কটে গ্রাম ছাড়া হয়ে পরিযায়ী শ্রমিকের তকমা পেয়েছেন।
Lok Sabha Election Jhargram
জঙ্গলমহলের ভরসা লাল ঝান্ডায়
×
Comments :0