শারদ নতুনপাতা
মণ্ডা মিঠাই
বিসর্জন
অমল কর
উৎসব — উৎসব — উৎসব — বাঙালির মন উৎসবপ্রবণ। উৎসবের বারোমাস্যা। বারো মাসে তেরো পার্বণ ।
সেরা দুর্গোৎসব। আবাহন — আগমনি নিয়ে চলে এক শেষের পর আর-এক আরম্ভের প্রাণন। আর এই উৎসবকে কেন্দ্র করে ধনী থেকে গরিবগুর্বোর মাতন,
অবস্থার রকম ফেরে অবস্থান — উপচারে উপকরণে মাতোয়ারা।
পর্বের পর পর্বের প্রস্তুতির পালা চলে প্রায় সারাবছর, তুঙ্গে ওঠে আকাশে যখন বেজে ওঠে আশ্বিন। নতুন পোশাক শুদ্ধ মন ভিন্ন স্বাদ বিভিন্ন
উদ্যোগ আয়োজন। সনাতনী পরম্পরায় শতাব্দীর পর শতাব্দী চলছে এই প্রথা।
শাস্ত্রীয় বিধানে অকাল বোধন থেকে নানা প্রক্রিয়ায় চলে চর্চা ।
সনাতন ধর্মীয় অনুশাসনে উমা আসেন বাপের বাড়ি ছানাপোনাদের নিয়ে ।
মর্ত্যের পরাক্রম অসুর মহিষাসুর নিধন করে ফের কৈলাসে ফিরে যান।
আকাশ জল অগ্নি বায়ু মৃত্তিকা — এই পাঁচ উপাদানে বোধন, মূর্তির প্রাণপ্রতিষ্ঠা। আর শেষে জলে প্রতিমা নিরঞ্জন ।মর্ত্যে প্রাণীর মৃত্যু যেমন অনিবার্য ,কেন-না
এখানে মরণ একমাত্র অমর, মূর্তি তা সে যত প্রিয়ই হোক বিসর্জন, নিরঞ্জন, ভাসান ,বিজয়া,
বিজয়া দশমী অনিবার্য ।(উমার মায়ের কাছ থেকে কৈলাসে প্রত্যাবর্তন —
দেবালয় শূন্য করে প্রস্থানের অমোঘ বেদনাকে মনে রেখে শোকগাথা —
কি করে 'শুভ বিজয়া' হয় — প্রশ্ন থাকে)।
প্রকৃতিলব্ধ প্রকৃতিতে বিলীন — এই আচার, এই প্রথা। উল্লোল উল্লাসে কেউ কেউ প্রথা ভেঙে নানা যুক্তি খাড়া করে
নিরঞ্জন প্রক্রিয়া বিলম্বিত করে — কোথায় থাকে তখন শাস্ত্র, কোথায় তার বিধান!
বিসর্জন — একটা প্রতীক — প্রতীক আবার আবাহনের, বাঙালির উৎসবের শেষ হয় না — কোনও বিসর্জনেই।
হয়তো আবার উৎসবের আয়োজন।
Comments :0