MAMATA BJP CPIM

মমতার চোখে সিপিআই(এম) না কি এখন বিজেপি’র ‘বন্ধু’!

রাজ্য

 বিজেপি’র দীর্ঘদিনের জোটসঙ্গী এবং এডিএ’র মন্ত্রীও ছিলেন। মোদী সরকারের মন্ত্রীকে রাজ্য মন্ত্রীসভায় ঠাইঁ দিয়ে এখন সিপিআই(এম)-কে বিজেপি’র ‘বন্ধু’ বলে মন্তব্য করলেন মমতা ব্যানার্জি। কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের দলীয় মঞ্চ থেকে সিপিআই(এম) ও কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণ করলেন মমতা ব্যানার্জি। 
সিপিআই(এম)’কে বিজেপি’র বন্ধু বলে মমতা ব্যানার্জির বক্তব্য, ‘‘সিপিএম আজও বিজেপি-কে জেতাতে চায়। সবচেয়ে বড় বন্ধু হয়ে গেছে বিজেপি’র। পঞ্চায়েত থেকে লোকসভা, বিধানসভা সর্বত্র দেখে নিন।’’ মমতা ব্যানার্জি আজও সিপিআই(এম)-কে বিজেপি’র বন্ধু বলার জন্য টেনে এনেছেন অতীতকে। আশ্রয় নিয়েছেন মাত্রাছাড়া মিথ্যাচারের।
কেন্দ্রের বিরুদ্ধের এদিন আর্থিক বঞ্চনার আন্দোলন মঞ্চ থেকে অতীতেও এরাজ্যে সিপিআই(এম) একই আন্দোলন করতো এটা জানিয়ে সেই আন্দোলনের সঙ্গে মমতার আন্দোলনের পার্থক্য বোঝাতে মিথ্যাচার করতে কসুর করেননি মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, সিপিএম বঞ্চনা নিয়ে মিটিং মিছিল করলেও তারা কেন্দ্র থেকে সব টাকাই পেত। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিনহা তাঁকে একান্তে সব জানিয়েছিলেন। তবে যশবন্ত সিনহা অটলবিহারী বাজপেয়ীর যে মন্ত্রীসভায় অর্থমন্ত্রী ছিলেন তাতে শামিল ছিলেন মমতা ব্যানার্জিও। 
বিজেপি সরকারকে সমর্থন শুধু নয়, সেই মন্ত্রীসভায় রীতিমতো ক্যাবিনেট মন্ত্রী হওয়ার অতীত নিয়ে এদিন মমতা ব্যানার্জি কিছু না বললেও তাঁর পাশে বসে শুনিয়েছেন এখন মমতা ব্যানার্জির দলের সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা। ২৭ বছর ধরে বিজেপির সঙ্গে যুক্ত থেকে দু’দুবার ক্যাবিনেট মন্ত্রীর পদ নিয়ে কীভাবে কাজ করেছেন তা এদিন বর্ণনা করেছেন সাংসদ। এমনকি, মুখ্যমন্ত্রীর সামনেই অটলবিহারী বাজপেয়ীকে প্রাণপুরুষ বলে একাধিকবার সম্বোধন করেছেন। আবার মমতার রাজ্য মন্ত্রীসভাতেও আছেন মোদী সরকারের একদা মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়।
এদিন ধরনা মঞ্চ থেকে শালীনতার স্তর অতিক্রম করে মমতা ব্যানার্জি আক্রমণ করতে শুরু করেন। এমনকি বিভিন্ন সম্প্রদায়কে টেনে এনে উসকানিমূলক বক্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, ‘‘হিন্দুদের সুড়সুড়ি দিচ্ছে বিজেপি। আর সিপিএম-কংগ্রেস মিলে মুসলমানদের সুড়সুড়ি দিচ্ছে। ও করবে হিন্দু, ও করবে মুসলমান। আর আমরা হিন্দু, মুসলমান, শিখ করে বাদ।’’ 
কংগ্রেসের ন্যায় যাত্রাকেও কটাক্ষ করেছেন তিনি। নাম না করে আক্রমণ করেছেন রাহুল গান্ধীকেও। তিনি বলেন, ‘‘প্রথমেই চলে এল বাংলায়। ভাবলো, এখানে এসে মুসলমানদের একটু সুড়সুড়ি দিই। বাংলায় যে আসবে আমি জানতেই পারলাম না। আমাকে প্রশাসন থেকে সব খবর নিতে হলো। আমাকে একবারের জন্য বলেনি। বাংলা না বেছে তুমি উত্তর প্রদেশ, বেনারস, লক্ষ্ণৌ গেলে না কেন?’’ 
মণিপুর থেকে রাহুল গান্ধী ন্যায় যাত্রা আসাম হয়ে বাংলায় প্রবেশ করার পর থেকেই একের পর এক বাধা দিয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু তারপর এদিনই বীরভূমে প্রবেশ করে নির্ধারিত রুট অনুযায়ী যাত্রা প্রবেশ করেছে ঝাড়খণ্ডে। ফলে দেশের অন্যান্য রাজ্যেও যে যাবে তা মমতা ব্যানার্জির অজানা নেই। কিন্তু ন্যায় যাত্রার জন্য রাহুল গান্ধীর নাম না করে ‘বসন্তের কোকিল’ বলে তীব্র কটাক্ষ করেছেন কংগ্রেসের কর্মসূচির। 
রাহুল গান্ধীর চায়ের দোকানে বসা, সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলাকে আক্রমণ করে এদিন ধরনা মঞ্চ থেকে মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, ‘‘এখন নির্বাচন এসেছে বলে নতুন করে সব ফটো শ্যুট করা হচ্ছে। যারা কোনোদিন চা দোকানে বসেনি, চা বানাতে জানে না, বাচ্ছাদের আদর করেনি, শিশু বলতে কী সেটাই জানে না। বিড়ি বাঁধতে জানে না, বিড়ির বদলে অন্য কিছু খায়, তারাই এখন বসন্তের কোকিল হয়েছে।’’ 
এবার আবার কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রসঙ্গ এনে নিজে ৪৮ ঘণ্টা ধরনায় থাকবেন বলে ঘোষণা করেছেন। আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই ধরনা চলবে।
 

Comments :0

Login to leave a comment