অনির্বাণ দে- নবগ্রাম
বিচার চাইছে গ্রাম বাংলাও। তৃণমূলের আখ্যান, আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদ আটকে শহরে। তবে, শিলিগুড়ি থেকে সুন্দরবন। গ্রাম বাংলার মানুষ লাগাতার পথে থেকে জানিয়েছেন, বিচার চাইছে গ্রামও। সেই বিচারের দাবিই সোচ্চার হল শনিবার মুর্শিদাবাদের নবগ্রামে যুবদের ডাকা সমাবেশে। মানুষ এলেন অধিকার আদায়ের প্রত্যয় নিয়ে।
এদিন দুপুরে ডিওয়াইএফআই মুর্শিদাবাদ জেলা ২৪ তম সম্মেলনের প্রকাশ্য সমাবেশে গ্রাম থেকে মানুষ এলেন বিচারের দাবি বুকে নিয়ে। শপথ শোনালেন, বিচার না পাওয়া অবধি রাস্তা আঁকড়ে লড়াই। আরজি করে চিকিৎসক খুন, ধর্ষণে যা সামনে এনেছে সেই দুর্নীতি, লুট, সন্ত্রাস, হুমকির ছবি গ্রামে গ্রামেই। জানালেন, সাম্প্রদায়িক বিভাজন রুখে দিয়েই এই দুর্নীতি আর লুটের শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই চলবে। সমাবেশে ডিওয়াইএফআই রাজ্য সম্পাদক মিনাক্ষী মুখার্জি বলেন, রাজ্যে যখন সকলে বিচার চাইছে। ছাত্র যুব থেকে অভিনেতা অভিনেত্রীও রাস্তায় নেমেছেন। আইনজীবীরা সামাজিক দায়িত্ব থেকে বিচার চাইছেন। সেই সময় রাজ্য সরকার জনগণের ট্যাক্সের লক্ষলক্ষ টাকা খরচ করে আইনজীবী নিয়োগ করেছেন। যাদের উদ্দেশ্য, অপরাধীদের আড়াল করা। মানুষকে বিপন্নতার মুখে ঠেলে দিচ্ছে সরকার। মিনাক্ষী এদিন রাজ্যে দুর্নীতি ইস্যুতে নিশানা করেছেন তৃণমূলকে। তিনি বলেন, দুষ্কৃতীরা টাকার দাপটে রাজ্য প্রশাসন থেকে পুলিশ সকলকে কান ধরে উঠবোস করাচ্ছে। ভাঙন, পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ, বিড়ি শ্রমিকদের মজুরি নিয়ে ভাবতে নারাজ সরকার। দাবি আদায়ে রাস্তায় থাকবে যুবরাই। তিনি প্রশ্ন তোলেন, মুখ্যমন্ত্রী জলে নেমে বন্যা দেখার নাটক করছেন। সেচ দপ্তরের মন্ত্রী কোথায়? বাঁধ তৈরীর লক্ষ লক্ষ টাকা কোথায় গেল? মিনাক্ষী বলেন, হাসপাতাল ওষুধ, চিকিৎসা পরিকাঠামোর অভাবে ধুঁকছে। আইসিডিএস কেন্দ্রে আইরন ট্যাবলেটও পাওয়া যাচ্ছে না। নারীদের মধ্যে রক্তাল্পপ্লতা, অপুষ্টি বাড়ছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে সংকটের দিকে ঠেলে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। আরজি কর কান্ডে সামনে এসেছে এক্সাপায়রি ডেট পেরানো ওষুধের কারবারের ছবি। হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসক, স্বাস্থ্য কর্মীরাও নিরাপদ না। কোথায় যাবেন রাজ্যের মানুষ? মিনাক্ষী বলেন, সরকার ভরসা, ওষুধ, সম্মান বিক্রি করে দিচ্ছে। তাই রাস্তায় নামতেই হবে। আরজি করের ঘটনার পরেও রাজ্যে একের পর এক ধর্ষণ, নারী নির্যাতন চলছে। তিনি বলেন, রাজ্যে কাজ নেই। পরিযায়ী শ্রমিকদের জীবন জীবিকার নিরাপত্তা নেই। ধর্ষণের মতো অপরাধেও সরকার অপরাধীদের পক্ষে। এই সময় রাস্তার দখল রেখেই লড়াই চলবে। সামনে উৎসব। সরকার চেষ্টা করছে সব ভুলিয়ে মানুষকে উৎসবে মাতিয়ে রাখার। উৎসবেও হবে প্রতিবাদের পার্বণ। সব মনে রেখেই প্রতিবাদ জানাবেন মানুষ।
ডিওয়াইএফআই’এর প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক জামির মোল্লা বলেন, লুটেরাদের রাজত্ব আর মানুষ বরদাস্ত করতে চাইছেন না। কেন্দ্রের সরকারের অর্থনীতিতে জনজীবন বিপর্যস্ত। রাজ্য, কেন্দ্র কোনও সরকার কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছে না। লড়াইয়ের রাস্তাতেই থাকবে যুবরা।
এদিন বক্তব্য রেখেছেন ডিওয়াইএফআই জেলা সম্পাদক সন্দীপন দাস, প্রাক্তন যুব নেতা মুকুল মন্ডল। সভাপতিত্ব করেন সৈয়দ নুরুল হাসান। ছিলেন যুব নেতা সফিকুল সর্দার, আলি আকবর। মুর্শিদাবাদ জেলার পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজের দাবি, ভিনরাজ্যে কাজে গিয়ে নিরাপত্তার দাবিতে সরব হন বক্তারা। আহ্বান ওঠে, গ্রাম শহরে একশো দিনের কাজ, শুন্যপদ পুরণ করে কর্মসংস্থানের দাবিতে আন্দোলন তীব্রতর করার।
Comments :0