নতুনপাতা
ইচ্ছে
চিরদিনের ভবানীপ্রসাদ মজুমদার
মনীষ দেব
মজার দেশ থেকে ছুটির দেশে — ভবানীপ্রসাদ মজুমদার।
— না কেউ আর পুষবে না টিকটিকি খাঁচাতে! লেখা তো দুর অস্ত —
ছ'হাজার টিকটিকি পুষে রাখি খাঁচাতে।
সারাদিন বলি বসে, 'রাজা হই, রাজা হই
হতভাগা পাজীগুলো 'টিক-টিক' করে কই!
আটপৌঢ় সাদাসিদে ভবানীপ্রসাদ মজুমদার কল্পনার আকাশে ধ্রুবতারা — ছড়ার আকাশে কালপুরুষ চিরদিনের।
কিন্তু ছড়ার আকাশের এই কালপুরুষের জীবনযাপন শব্দচয়ন-শব্দবিন্যাস-শব্দনির্মাণ সবই। তার জীবনের মতো সহজ সরল। হয়তো বা ইচ্ছেডানায় উড়ে যাওয়া ইচ্ছের নাম — ভবানীপ্রসাদ মজুমদার! এক — বিস্ময়!
ধার-বাকির সাদামাটা জীবনে কোচকানো শার্ট, মলিন লুঙ্গি, জীর্ণ বাজারের ব্যাগ হাতে কে আর ভবানীপ্রসাদ মজুমদারের মতো বলে দেবে —
দুর্যোধনের পিশাশুড়ির মায়ের জায়ের ভায়ের
হস্তিনাপুর হাসপাতালে দোকান ছিল চায়ের!
সেই দোকানে ভীমের ছিল সাতশো-টাকা বাকি
ইতিহাসের এসব খবর :আমরা কি কেউ? রাখি?
অনুষ্ঠানে সটান দাঁড়িয়ে — ভূতুড়ে জাতীয় সঙ্গীত শেষে অনাবিল ভূতের স্রষ্টা ভবানীপ্রসাদ মজুমদার বলে যেতেন —
ন্যাড়াভূত, ট্যারাভূত, গ্যাঁড়াভূত পুঁচকে
সাইজে মানায় হার ছোট ছোট চুঁচকে!
ভূতের প্রপিতামহ, পিতামহ তস্য
আটাশ-পুরুষ আমি করে দিই ভস্ম!
ভবানীপ্রসাদ মজুমদার নেই আর অনুভব গুলি শব্দ হয়ে ডানা মেলবে তো ? ডানা মেলবে তো হলুদ ফড়িং — হলুদ সরষে ক্ষেতে ? হলুদ অতসী বনে বাজবে তো ঝুমঝুমি! ঝুমঝুমি পায়ে মশারা কী নাচবে কোরাস হুতুম্বু — ভুতুম্বুর
গানে। প্রাজ্ঞ যখন মেলায় বৃত্ত অক্ষরে অক্ষরে — মাত্রা মেনে — ছন্দ বেধে — পয়ারে বাধেন অন্তলীন।
— ভবানী বলেন — আমি তখন উদ্ভট সব হিজিবিজি লিখে রাখি অন্তহীন।
হয়তো নয়তোর থেকে অজানায় ভবানীপ্রসাদ মজুমদার।
হোক বা ছড়া — নাই বা ছড়া
মজায় মোড়া শব্দ তোমার অন্তহীন।
অজীবন শুয়োপোকা হয়ে গুটি মেরে ছিলে — প্রজাপতি হয়ে উড়ে যাবে বলে একদিন — চিরদিনের ভবানীপ্রসাদ মজুমদার।
Comments :0