NATUNPATA / MONDA MITHI — NATUN BANDHU / BISHAL NAG / 6 JANUARY

নতুনপাতা / মণ্ডা মিঠাই — নোবেল পেলেন না ‘স্টিফেন হকিং’ — বিশাল নাগ / ৬ জানুয়ারি ২০২৪

ছোটদের বিভাগ

NATUNPATA  MONDA MITHI  NATUN BANDHU   BISHAL NAG  6 JANUARY

নতুনপাতা  

মণ্ডা মিঠাই

নোবেল পেলেন না ‘স্টিফেন হকিং’
বিশাল নাগ

নোবেল পুরস্কার কে প্রথম চালু করেন ? ১০০ জনকে প্রশ্ন করলে ৩০ থেকে ৪০ জন উত্তর দিতে পারবেন। কিন্তু প্রায় সকলেই জানেন এটা সারা বিশ্বের সেরা মর্যাদার পুরস্কার। বিস্ফোরক ডিনামাইটের আবিষ্কারক আলফ্রেড নোবেল এই পুরস্কারের গোড়াপত্তন করেন ১৯০১ সালে, এবং প্রতি বছর পুরস্কার দেবার জন্য একটি তহবিল গঠন করেন। প্রতি বছর অক্টোবর মাসে এই পুরস্কার প্রাপকদের নাম ঘোষণা করা হয়। বর্তমানে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসা শাস্ত্র, অর্থনীতি, সাহিত্য এবং শান্তি -র জন্য নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। 
অনেকে তাদের অবদানের জন্য দু’বার নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন, আবার অনেকের বিশাল অবদান থাকলেও নোবেল পুরস্কার পাননি। যেমন বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্র বসু নোবেল পাননি। তবে সমাজ জীবনে উল্লেখযোগ্য অবদান-কারী প্রায় প্রত্যেক সাহিত্যিক, বৈজ্ঞানিক ও সমাজকর্মীরই নোবেল পুরস্কারের আকাঙ্ক্ষা থাকে।  
আমাদের দেশে প্রথম নোবেল পুরস্কার পান কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য। তবে নোবেল পাওয়া অত সহজ কাজ নয়। 
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় ব্যাপক জনপ্রিয়তা ও তাত্ত্বিক পদার্থবিদ্যায় বিশাল অবদান সত্ত্বেও স্টিফেন হকিং নোবেল পুরস্কার পান নি। 
তবে কর্মক্ষেত্রে অবদানের জন্য বহু মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার হকিং পেয়েছেন। তার একটা সংক্ষিপ্ত তালিকা – 
অ্যাডামস পুরস্কার (১৯৬৬)
এডিংটন পদক (১৯৭৫)
ম্যাক্সওয়েল পদক ও পুরস্কার (১৯৭৬)
গাণিতিক পদার্থবিদ্যায় ড্যানি হাইনম্যান পুরস্কার (১৯৭৬)
হিউ পদক (১৯৭৬)
আলবার্ট আইনস্টাইন পদক (১৯৭৮)
রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির স্বর্ণ পদক (১৯৮৫)
ডিরাক পুরস্কার (১৯৮৭)
উলফ পুরস্কার (১৯৮৮)
প্রিন্স অব অ্যাস্টুরিয়াস পুরস্কার (১৯৮৯)
অ্যান্ড্রু গেম্যান্ট পুরস্কার (১৯৯৮)
নেলর পুরস্কার ও লেকচারশিপ (১৯৯৯)
লিলিয়েনফেল্ড পুরস্কার (১৯৯৯)
রয়্যাল সোসাইটি অব আর্টসের আলবার্ট পদক (১৯৯৯)
কপলি পদক (২০০৬)
প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম (২০০৯)
ফান্ডামেন্টাল ফিজিক্স পুরস্কার (২০১২)
বিবিভিএ ফাউন্ডেশন ফ্রন্টিয়ারস অব নলেজ পুরস্কার (২০১৫)

বহু মর্যাদাপূর্ণ বই তিনি লিখেছেন - 
কালের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস (A Brief History of Time) (১৯৮৮)
কৃষ্ণগহ্বর, শিশু মহাবিশ্ব ও অন্যান্য রচনা (Black Holes and Baby Universes and Other Essays) (১৯৯৩)
দ্য ইউনিভার্স ইন আ নাটশেল (The Universe in a Nutshell) (২০০১)
অন দ্য সোল্ডার্স অব জায়ান্টস (On the Shoulders of Giants)(২০০২)
গড ক্রিয়েটেড দ্য ইন্টিজার্স: দ্য ম্যাথমেটিক্যাল ব্রেকথ্রুস দ্যাট চেঞ্জড হিস্ট্রি (God Created the Integers: The Mathematical Breakthroughs That Changed History) (২০০৫)
দ্য ড্রিমস দ্যাট স্টাফ ইজ মেড অফ: দ্য মোস্ট অ্যাস্টাউন্ডিং পেপার্স অব কোয়ান্টাম ফিজিক্স অ্যান্ড হাউ দে শুক দ্য সায়েন্টিফিক ওয়ার্ল্ড (The Dreams That Stuff Is Made of: The Most Astounding Papers of Quantum Physics and How They Shook the Scientific World) (২০১১)
মাই ব্রিফ হিস্ট্রি (My Brief History) (২০১৩)

আলফ্রেড নোবেলের ইচ্ছাপত্র অনুযায়ী জনপ্রিয়তা এ পুরস্কারের নিরিখ নয়। তবে কি হকিং অবিশ্বাস্য প্রতিভার অধিকারী নন? তিনি কি যুগান্তকারী আবিষ্কার করেননি? হ্যাঁ, তা করেছেন। যেমন ব্ল্যাক হোল। 
প্রচলিত ধারণা ব্ল্যাকহোল সব শুষে নেয়, এমন কি আলোও। স্টিফেন  হকিং এই ধারণা ভেঙ্গে চুরমার করে দেন। তিনি অঙ্ক কষে প্রমাণ করেন ব্ল্যাকহোলও বিকিরণ করে , এক ধরণের জ্যোতি – “হকিং বিকিরণ”, ওই বিকিরণে একদিন ব্ল্যাকহোল কর্পূরের মত উবে যাওয়ার কথা। ওই বিকিরণ যদি বাস্তবে মাপা যেত হকিং নিঃসন্দেহে নোবেল প্রাইজ পেতেন। আলফ্রেড নোবেলের শর্ত অনুযায়ী শুধু তত্ত্ব আবিষ্কার করে পুরস্কার মিলবে না, তত্ত্ব প্রমাণিত হতে হবে। 
কত দিন লাগতে পারে “হকিং বিকিরণ’ প্রমাণিত হতে?একটা ব্ল্যাকহোল উবে যেতে সময় লাগবে ১ এর পর৬৭ টি শূন্য বসালে যে সংখ্যা হবে তত বছর। ততদিন অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু মানুষের আয়ু মাত্র ৮০-১০০ বছর।
এতটা পড়ে পাঠক নিশ্চয় হাসছেন। বিখ্যাত ভারতীয় বৈজ্ঞানিক অশোক সেন বলেছেন – “ ব্ল্যাক হোল বিষয়ে হকিং এর গবেষণা আমার এবং আমার মত বহু বিজ্ঞানীকে পথ দেখিয়েছে। ভবিষ্যতেও দেখাবে”। 
হকিং যখন তার তত্ত্ব আবিষ্কার করেন তখন তা প্রমাণ করার মত প্রযুক্তি হাতে ছিল না, তবে বর্তমানে প্রযুক্তির উন্নতিতে অদূর ভবিষ্যতে তা প্রমাণ করা সম্ভব হবে বলে আশা করা যায়।
 

Comments :0

Login to leave a comment