Purulia School

বিপজ্জনক বিদ্যালয় ভবন, প্যান্ডেল চলছে পড়াশোনা

জেলা

 

দূর থেকে দেখলে মনে হবে কোন অনুষ্ঠান বাড়ি। রঙিন কাপড় দিয়ে ঢাকা সে প্যান্ডেলে হয়তো খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কাছে গেলেই দেখা যাবে অন্য চিত্র। কোন অনুষ্ঠান বাড়ি নয়। সে প্যান্ডেলের তলায় কাপড় পাতা রয়েছে। প্যান্ডেলের একদিকে চেয়ার-টেবিল নিয়ে বসে রয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকা। আর সেই কাপড়ের উপর বসে পড়াশোনা করচ্ছে ছোট ছোট পড়ুয়ারা। এভাবেই বেশ কিছুদিন ধরেই পুরুলিয়ার কাশিপুর ব্লকের পাথরডিহা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঠন-পাঠন চলছে। কারণ স্কুল ভবনের ভগ্ন দশা। যে কোন মুহূর্তে সে ভবন ধসে যেতে পারে। দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কায় অভিভাবকরা বিদ্যালয়ে তাদের সন্তানদের পাঠাচ্ছিলেন না। গত তিন বছর ধরে নানা জায়গায় জানিয়েও কোন লাভ না হওয়াতে এই অস্থায়ী প্যান্ডেল খাটিয়ে চলছে বিদ্যালয়ের পঠন পাঠন। চরম অসুবিধার সম্মুখীন পড়ুয়ারা এবং শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
এলাকার শিশুদের শিক্ষার স্বার্থে গ্রামবাসীরা জমি দিয়েছিল, অর্থ সাহায্য করেছিল। তারপর পুরুলিয়ার কাশিপুর ব্লকের ইন্দ্রবিল চক্রে পাথরডিহা গ্রামে গড়ে উঠেছিল প্রাথমিক বিদ্যালয়। গত চার পাঁচ বছর ধরে সে বিদ্যালয়ে ভবন ক্রমশ জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। অভিভাবক থেকে শুরু করে স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা প্রশাসনের নানা জায়গায় বহুবার জানিয়েছেন কিন্তু কোন লাভ হয়নি। বিদ্যালয় সূত্রে জানিয়ে জানা গেছে পাথরডিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় শিশু শ্রমিক থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত মোট ৪১ জন পড়ুয়া আছে। এবং দুজন শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছে। ২০১৬ সাল থেকে বিদ্যালয়ের ভবন ধীরে ধীরে বিপদজনক হতে শুরু করে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা তমসা মাঝি মন্ডল জানিয়েছেন বিদ্যালয় ভবনের এমন ভগ্নদশা যে তাতে যে কোনো সময় ঘটে যেতে পারে বড়সড় দুর্ঘটনা। একসময় তারা ওই ভগ্ন বাড়িতে বিদ্যালয় চালাতেন। বৃষ্টি শুরু হলে ছাত্র-ছাত্রী থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকারা সকলে বৃষ্টির মধ্যেই পঠন পাঠন চালিয়ে যেতেন। কিন্তু মাঝে মধ্যে বিদ্যালয়ের ছাদ থেকে চাঙর ভেঙে পড়তো। দেয়াল খসে পড়তো। বিদ্যালয়ের অবস্থার কথা জানিয়ে তারা বিডিও, ডি আই এবং এস আইকে সমস্ত কিছু জানিয়েছেন। কিন্তু কোথাও কোন সমাধান হয়নি।
অবস্থা আরো বেশি বিপদজনক হওয়ার কারণে অভিভাবকরাও সন্তানদের স্কুলে পাঠাচ্ছিলেন না। তাই বাধ্য হয়ে স্কুলের বাইরে প্যান্ডেল খাটিয়ে চলছে পঠন পাঠন। বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র নিরঞ্জন পরামানিক জানিয়েছেন ওই স্কুলের মধ্যে ক্লাস করতে তারা রীতিমত ভয় পেত। এই বিষয়ে ইন্দ্রবিল চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক তুফান কুমার বাগতি জানিয়েছেন নতুন ভবন নির্মাণের জন্য তিনি গোটা বিষয়টি তার ঊর্ধ্বতন ও কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। যতদিন নতুন ভবন না হচ্ছে ততদিন এভাবেই চলছে, চলবে পাথরডিহা প্রাথমিক বিদ্যালয়।

Comments :0

Login to leave a comment