মুক্তধারা
হিরোশিমা থেকে নাগাসাকি
আবার আবার আবার — হিরোশিমার এ ভয়ঙ্কর ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই মাত্র তিন দিন পর তিনিয়ন দ্বীপ থেকে বি টোয়েন্টি নামে একটি বিমান দ্বিতীয় বোমাটি নিয়ে নাগাসাকির উদ্দেশে রওনা হয়। এ বোমাটির নাম দেওয়া হয়েছিল ফ্যাটম্যান। বোমাটি ছিল গোলাকার প্লুটোনাম ক্ষেপণাস্ত্র। নাগাসাকি শহরে ৯ আগস্ট বেলা ১১টা ২ মিনিটে বোমাটি মাটি থেকে ৫০০ মিটার উপরে বিস্ফোরিত হয়। নিমেষে ঝরে গিয়েছিল প্রায় এক লক্ষ ৪০ হাজার প্রাণ। আহত হয় আরও ৭৪ হাজার মানুষ। বোমার তেজস্ক্রিয়তায় শিশুদের মাথার চুল পর্যন্ত উঠে যায় ৷ শিশুরা খাওয়ার শক্তি হারিয়ে ফেলে৷ আর বোমার আঘাতে আহতরা দীর্ঘদিন কষ্ট ভূগতে ভূগতে এক সময় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে ৷ ১৯৫০ সাল পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন লাখে পৌঁছে যায় ৷
১৯৪৫ সালের ৬ই আগস্ট ৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ লগ্ন। মার্কিন বোমারু বিমান বি-টুয়েন্টি নাইন ইনোলা গে 'লিটল বয়' নামে একটি পরমাণু বোমা নিয়ে হিরোশিমার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। ওই দিন সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে প্লেন থেকে বোমাটি নীচের দিকে নিক্ষেপ করা হলে হিরোশিমা শহর থেকে প্রায় ৫০০ মিটার ওপরে সেটি বিস্ফোরিত হয়। মুহূর্তের মধ্যে শহরটির প্রায় ৬০ ভাগ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় এবং নিহত হয় ৭৫ হাজার মানুষ৷
৯ই আগস্ট, ঐতিহাসিক নাগাসাকি দিবস।
কি মর্মান্তিক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৯৪৫ সালের ৬ই আগস্ট সকালে জাপানের হিরোশিমা শহরে লিটল বয় এবং ৯ আগস্ট নাগাসাকি শহরে ফ্যাটম্যান নামের পরমাণু বোমা নিক্ষেপ করে সারা বিশ্বকে হতবাক করে দেয়। মানব জাতি এ চরম নিষ্ঠুরতা দেখে যেন মুহূর্তের মধ্যে থমকে গিয়েছিল গোটা পৃথিবী। কিন্তু এত ধ্বংসযজ্ঞ, রক্তপাত,পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হওয়া সত্ত্বেও তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ট্রুম্যান এ মর্মান্তিক ঘটনার জন্য কখনও অনুতাপ করেননি।
প্রতি বছর ওই ঘটনাকে স্মরণ করে বিশ্বব্যাপী পালিত হয় হিরোশিমা ও নাগাসাকি দিবস। হিরোশিমা-নাগাসাকি দিবস উপলক্ষে একটাই প্রত্যাশা-- পৃথিবী থেকে সকল পরমাণু বোমা ধ্বংস করা হোক। নিশ্চিত হোক বারুদের গন্ধমুক্ত সুন্দর পৃথিবী, যেখানে নতুন প্রজন্মের জন্য থাকবে নিশ্চিত নিঃশ্বাস এবং সুন্দর ভাবে বেঁচে থাকার অধিকার।
যে অধিকার নিয়েই আগামী পৃথিবী বাঁচবে।
Comments :0