প্রবন্ধ / 'মুক্তধারা'
বিস্মৃত বাঙালির জীবনচরিত: রাজনারায়ণ এবং 'সেকাল-একাল' সম্পর্ক
সৌ র ভ দ ত্ত
বিশিষ্ট চিন্তাশীল পণ্ডিত, সাহিত্য ব্যক্তিত্ব রাজনারায়ণ বসু সেকাল ও একাল'কে বেঁধেছিলেন একসূত্রে।শৈশবকালে তাঁর স্কুল জীবনের বর্ণনায় ব্রিটিশ ভারতের শিক্ষাপ্রণালীর অনেক অনালোচিত দিক উঠে আসে।গোঁড়া হিন্দু শম্ভু মাস্টার কপালে চওড়া চন্দনের তিলক লাগিয়ে স্কুলে আসতেন।তৎকালীন সময়ে শম্ভু মাস্টারের স্কুলে ভারতীয় বালকদের শাস্তি প্রদানের পদ্ধতিটি বেশ আকর্ষক।স্কুলের ইংরেজি শিক্ষক গ্রিফ সাহেবের মানুষেরা ফ্রেল (ল্যাতিন Ferula) নামক একটি বাঁটওয়ালা কাঠের মোটা চাকতি দিয়ে ছাত্রদের মারতেন।তবুও ছাত্ররা শিক্ষককে সম্মান ও শ্রদ্ধাপ্রদর্শন করত।উনিশ শতকীয় সেই সময়পর্বে শিক্ষা ব্যবস্থা এখনকার মতো এতটা নৈরাজ্যপূর্ণ, বে-আব্রু হয়ে যায়নি।বর্তমানে কালের নিয়মে শিক্ষাক্ষেত্রে শাস্তি প্রথাও অবলুপ্ত হয়েছে।ফলত ছাত্ররা ক্লাসরুমে শিক্ষককে সেরকম সম্ভ্রমবোধ করে না।ছাত্র বিশৃঙ্খল আচরণ করলে সামান্য শাসন করতে গেলে ছাত্র বা অভিভাবক কর্তৃক শিক্ষক নিগ্রহের ঘটনা অহরহ ঘটে।কিন্তু,এগারো বছরের বালক রাজনারায়ণের বর্ণনায় ব্রিটিশ ভারতে ইংরেজদের ভারতীয় বালকদের শাস্তি দেওয়ার ভীতিকর কাহিনি উঠে এসেছে।
এরপর যদিও রাজনারায়ণ বসু শম্ভু মাস্টারের স্কুল ছেড়ে ভর্তি হন স্কটিশ ঘড়ি ব্যবসায়ী ডেভিড হেয়ার সাহেবের স্কুলে।তখনকার দিনে সেই স্কুলের নাম ছিল–"School Society School "।হেয়ার সাহেবই এই স্কুলের প্রধান ছিলেন।এবং ভারতীয় মানুষজন স্কুলটিকে হেয়ার স্কুল বলেই চিনতেন।
ইংরেজদের মনে ভারতীয়দের প্রতি বিদ্বেষ বহুলাংশে ছিল।ভারতীয়রা ময়লা বা নেটিভ সেই অর্থে বাঙালি বালকগণকে হেয়ার স্কুলে পরিষ্কার,পরিচ্ছন্নতা বিষয়ক বিশেষ পাঠ দেওয়া হত।
(চলবে)
Comments :0