শঙ্কর ঘোষাল: পূর্ব বর্ধমান
রবিবার সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির পূর্ব বর্ধমান জেলা সম্মেলন উপলক্ষে খন্ডঘোষে প্রকাশ্য সমাবেশ হয়। সভায় বক্তব্য রাখেন সর্বভারতীয় প্রবীণ মহিলা নেত্রী বৃন্দা কারাত। তিনি এদিন শত্রুদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, শাসকদল সংগ্রামের ঝান্ডাকে নিচু করে দেবে ভেবে সন্ত্রাস, খুনের রাজনীতি কায়েম করেছিল এই রাজ্যে। তার বিরুদ্ধে লড়েই সাহস নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন মহিলারা, সম্মেলনে শপথও নিয়েছেন লড়াই জারি রাখার। উদাহরনও তৈরি করেছেন তাঁরা, গণতন্ত্র, সংবিধান রক্ষা, ধর্মনিরপেক্ষতা কথা শুধু মুখে বলা নয় পঞ্চায়েত নির্বাচনে লড়েছেন মহিলারা, সাহসের নজীরও গড়েছেন। ৬ মাস পর আবার বিধানসভার নির্বাচন হবে। এবার পরিস্কার ভাবে জানিয়ে দিন আর তৃণমূলের গুন্ডাগিরি বরদাস্ত করবো না। লড়েই মহিলাদের কন্ঠস্বর যাতে বিধানসভায় জাগ্রত থাকে তারও উদ্যোগ নেবো।
তিনি বুথে বুথে মজবুত ঐক্য গড়ে জোরদার লড়ায়ের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, খন্ডঘোষের লোদনা গ্রামে বুথ রক্ষা করতে গিয়ে তৃণমূলের গুন্ডাদের হাতে শহীদ হয়েছিলেন কমরেড দুঃখীরাম ডাল ও কমরেড ফজলে হক। রাজ্যে এমন একাধিক শহীদ হয়েছেন কিন্তু দুঃখীরাম ও ফজলে হক’র ধর্ম আলাদা হতে পারে কিন্তু স্বপ্ন ছিল এক। এই দুই শহীদ শ্রমিক-কৃষকের স্বার্থে লড়ায়ের দায়িত্ব থেকে এক চুল না নড়ে বুথ রক্ষা করতে গিয়ে শহীদ হয়েছিলেন। তবু শত্রুর কাছে মাথা নত করে জীবন থাকতে বুথ ছাড়েননি। মহিলারাও বুথে বুথে মজবুত ঐক্য গড়ে জোরদার লড়ায়ের জন্য প্রস্তুতি নিন।
সমাবেশে বৃন্দা কারাত ছাড়াও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের রাজ্য সভানেত্রী জাহানারা খান, সুপর্না ব্যানার্জি প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন মনিমালা দাস। বৃন্দা কারাত বলেছেন, রাজ্যে জলে কুমীর আর ডাঙ্গায় বাঘ তৃণমূল-বিজেপি দুই অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে সংগঠনকে আরো মজবুত করে সংগ্রাম এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে আমাদের। মোদী প্রতিশ্রুতি আর জুমলাবাজি করে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। বিহারের নির্বাচনে জিতেছে। পশ্চিমবঙ্গ বিহার নয়, বিহারের এস আই আর দেখেছি। ভোটের অধিকার কেড়ে নিতে চায়ছে ওরা। ভোট চুরি করার চেষ্টা করছে। ভয়ের বাতাবরন তৈরি করছে তৃণমূল। সংগ্রামের ময়দানে মহিলাদের অধিকার বুজে নিতে বুথে বুথে গিয়ে মহিলাদের বোঝাতে হবে, ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। তাঁদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলুন, এসআইআর বিহারে মহিলাদের অনেক ভোট কেটে দিয়েছে। আমাদের দায়িত্ব রাজ্যে একজন মহিলার নাম যেন ওরা কাটতে না পারে। গণতন্ত্রের মধ্যে ভোটের অধিকার আছে, এটা সংবিধান দিয়েছে। ওরা কে আমাদের ভোট কেড়ে নেবে? তিনি বলেন বিএলও’রা অনেক জায়গায় শাসকদলের হয়ে কাজ করছে। আমাদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। তিনি আব্হান জানান ধর্মীয় বিভাজনকারী বিজেপি’র ও তৃণমূলের লুট, গুন্ডারাজের বিরুদ্ধে সব মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করুন।
এদিন সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির ২দিনের সম্মেলন শেষ হয়েছে। সম্মেলনে পর্যবেক্ষনমূল বক্তব্য রাখেন প্রবীণ মহিলা নেত্রী অঞ্জু কর। অর্চ্চনা মন্ডল, শান্তি মজুমদার। সম্মেলন থেকে একাধিক প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে। সম্মেলনে ৬১ জনের জেলা কমিটি সর্বসম্মত ভাবে নির্বাচিত হয়েছে। ৫৯ জনের নাম এদিন ঘোষণা করা হয় বাকি ২জন পরে নেওয়া হবে। ২২জনের সম্পাদক মন্ডলীর মধ্যে এদিন ২০ জনের নাম ঘোষণা করা হয়। পরে ২জনকে নেওয়া হবে। সম্মেলন থেকে মনিমালা দাস ও সুপর্না ব্যানার্জি পুর্ননির্বাচিত হয়েছেন। কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হয়েছেন জনা মুখার্জি।
Comments :0