রাহুল গান্ধীর লোকসভা সদস্যপদ ফিরিয়ে দিন। এই আর্জি নিয়ে লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লার সঙ্গে দেখা করলেন অধীর চৌধুরী। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের রায় ঘোষণার কিছু পরেই এই আবেদন জানান লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা।
রাহুল গান্ধীর দু’বছরের কারাদণ্ডের রায়ে এদিন স্থগিতাদেশ জারি করেছে সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চ। সুরাটের নিম্ন আদালতের ওই রায়ের জেরেই লোকসভার সদস্য পদ খারিজ হয়ে গিয়েছিল রাহুল গান্ধীর।
চৌধুরী সংবাদমাধ্যমে এদিন বলেছেন, ‘‘সত্য সামনে আসবেই। ষড়যন্ত্র করে রাহুল গান্ধীর সদস্যপদ খারিজ করা হয়েছে।’’ এদিনই রায়ের পর প্রতিক্রিয়ায় দলের অন্যতম নেতা প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেছেন, ‘‘সূর্য, চাঁদ এবং সত্যকে ঢেকে রাখা যায় না।’’
চৌধুরী বলেছেন, ‘‘আমরা চাই অনস্থা প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় রাহুল গান্ধী অংশ নিন। তার আগেই তাঁর সদস্যপদ ফিরিয়ে দেওয়া হোক। অধ্যক্ষের কাছে সেই আবেদন জানিয়েছি।’’
লোকসভায় ৮ আগস্ট অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর আলোচনা শুরুর সূচি ঠিক করেছেন অধ্যক্ষ ওম বিড়লা। ১০ আগস্ট আলোচনার জবাবী ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
চৌধুরী বলেছেন, ‘‘আমাদের আশঙ্কা রাহুল গান্ধীর সদস্যপদ ফেরাতে দেরি করার রাস্তা নেবে বিজেপি। নতুন নতুন বাধা তৈরি করবে।’’
বিচারপতি বিআর গাভাই, পিএস নরসিমহা এবং সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ এদিন রাহুলের কারাদণ্ডে স্থগিতাদেশ জারি করেছে। ২০১৯’র লোকসভা নির্বাচনের আগে রাহুলের ভাষণ ঘিরে অপরাধমূলক মানহানির মামলা দায়ের হয় সুরাটের নিম্ন আদালতে। বিজেপি’র এক নেতা দায়ের করেন মামলা। দু’বছরের কারাদণ্ড ঘোষিত হয়। সুরাটের জেলা আদালত এবং গুজরাট হাইকোর্টও রাহুলের শাস্তি বহাল রাখে। যার জেরে দ্রুত সাংসদ পদ খারিজের ব্যবস্থা করে বিজেপি।
এদিন স্থগিতাদেশ জারি করে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, কারাদণ্ডের মেয়াদ এক দিন কম হলেও সাংসদ পদ খারিজের প্রশ্ন উঠত না। সেই সঙ্গে রাহুলকেও সতর্ক করে বলেছে যে ভাষা ব্যবহারে সংযত হওয়া উচিত। রাহুলের পক্ষে আদালতে ‘শেষ সুযোগ’ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। বলা হয় কোনও ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে অসম্মান করার উদ্দেশ্য ছিল না।
নরেন্দ্র মোদীর মেয়াদে দেশের ব্যাঙ্কের টাকা জালিয়াতি করে বিদেশে পালানোর ঘটনা পরপর রয়েছে। এমন দুই ব্যবসায়ী নীরব মোদী এবং ললিত মোদীর উল্লেখ করে রাহুল বলেছিলেন সব চোরদের পদবী ‘মোদী’ কেন।
শীর্ষ আদালত এদিন নিম্ন আদালতের রায়কে সমালোচনা করেছে। বিচারপতিরা বলেছেন, কেন সর্বোচ্চ শাস্তিই দেওয়া হলো নিম্ন আদালতের রায়ে তার কোনও ব্যাখ্যা নেই।
২৩ মার্চ রাহুলের সদস্যপদ খারিজ হয় রায় ঘোষণার পরপরই। তার আগে আদানির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সম্পর্ক জানতে চেয়ে লোকসভায় প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। লোকসভার বিবরণী থেকে বাদ দেওয়া হয় সেই বক্তৃতাও। দু’বছর কারাদণ্ড ঘোষিত হলে সাংসদ পদ খারিজের সংস্থান রয়েছে। কংগ্রেসের বক্তব্য ছিল যে নিম্ন আদালত রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন জানানোর জন্য সময় দিয়েছিল। তাঁকে এখনই গ্রেপ্তার না করার নির্দেশও দিয়েছিল। আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার আগে সাংসদ পদ খারিজ আসলে সংসদ থেকে রাহুলের নাম ছেঁটে ফেলতে বিজেপি’র চক্রান্ত।
Comments :0