SMC Board Meeting

শিলিগুড়ি কর্পোরেশনের বোর্ড সভায় সরব বামপন্থী কাউন্সিলরা

জেলা


অনুমোদনপ্রাপ্ত ও অনুমোদনহীন মিলিয়ে শহরের রাস্তাগুলিতে প্রায় ২৫ হাজার টোটো চলাচল করছে। কিন্তু শহরে নির্দিষ্ট কোন টোটোস্ট্যান্ড নেই। অনিয়ন্ত্রিত টোটো চলাচলে নাজেহাল শহর শিলিগুড়ি। সুষ্ঠু নিয়ন্ত্রণ ও পরিকল্পনার অভাবে শহর গতি হারাচ্ছে। অজানা কারোর প্ররোচনায়, ইন্ধনে শহরে প্রতিদিন টোটো স্ট্যান্ডের সংখ্যা বাড়ছে। শুক্রবার কর্পোরেশনের মাসিক বোর্ড সভায় শহরের যানজট সমস্যা নিয়ে সরব হলেন সিপিআই(এম)’র পরিষদীয় দলনেতা মুন্সী নুরুল ইসলাম। শহরের বড় একটি সমস্যা যানজট সমস্যা নিরসনের জন্য বর্তমান বোর্ডের মেয়রের অনেক আশ্বাস ছিলো। পুলিশ, প্রশাসন, কর্পোরেশনের যৌথ উদ্যোগে এবিষয়ে একাধিক সভাও হয়েছে। তারপরেও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা তো দূরের কথা, বরং সমস্যা দিন দিন আরো বাড়ছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শহরের দূষণের পরিমান। গাড়ির সংখ্যাও ক্রমবর্ধমান। বর্তমান বোর্ডের এও আশ্বাস ছিলো শহরের মূল রাস্তায় টোটোর নিয়ন্ত্রণ করা হবে। পাশাপাশি হিলকার্ট রোডে টোটোর চলাচল নিষিদ্ধ করা হবে। শহরের বাস্তব চিত্র অন্য কথা বলছে। টোটো ছাড়াও শহরমুখী অজস্র ছোট গাড়িগুলির কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। বর্তমানে গোটা শহর জুড়ে সমস্ত ব্যবস্থাটাই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। শহরের স্কুল, কলেজ থেকে শুরু করে অফিস, কোর্ট কাছারি সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরগুলি রয়েছে হাসপাতাল মোড় এলাকাস্থিত। ফলে ছোট বড় সমস্ত যানবাহনের অভিমুখই এই এলাকায়। সেবিষয়ে চিন্তাভাবনা ছাড়াই বর্তমান বোর্ড পাবলিক ট্রান্সপোর্টকে শহরের বাইরে স্থানান্তরিত করার পরিকল্পনা নিয়েছে। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, আগে এতো সহজে শিলিগুড়িতে আসা যেত না। আজকের শিলিগুড়ি চেনাই যায় না। সম্প্রতি তাঁর সভার দিন শহরের যানজট বীভৎস আকার নিয়েছিলো। অ্যাম্বুলেন্স হাসপাতালে পৌঁছাতে পারেনি। 
সেবক রোডে ট্রাফিক পুলিশের নাকের ডগাতেই অবৈধ টোটো স্ট্যান্ডে দুই লাইনে রাস্তার ওপর টোটোগুলি দাঁড়িয়ে থাকছে। শিলিগুড়ি বঙ্গ ভবন সংলগ্ন দুইলেনের রাস্তাটি অবৈধভাবে টোটো পার্কিং’র দরুন এক লেনের রাস্তায় পরিনত হয়েছে। হাসপাতাল মোড় থেকে ইস্ট বেঙ্গল রোডের দিকে এগোলে বিএসএনএল দপ্তরের সামনের রাস্তার বেহাল অবস্থা। ১২নং ওয়ার্ডের ইস্ট বেঙ্গল রোড শেষে হরেন মুখার্জি রোড ধরে সন্ধ্যার পরে চলাচল করা দূর্বিসহ। কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের পাশে রাস্তার ধারে অবৈধভাবে ফাস্ট ফুডের দোকান বসছে। একইসাথে টোটো স্যান্ড বানিয়ে টোটোগুলি সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকছে। 
এই রকম একাধিক উদাহরন তুলে ধরেছেন সিপিআই(এম) কাউন্সিলার নুরুল ইসলাম বলেন, দূষণের ক্ষেত্রে দিল্লির সাথে পাল্লা দিতে চলেছে শহর শিলিগুড়ি। শিলিগুড়ি শহরের যানজট নিয়ন্ত্রন করা না গেলে ওল্ড দিল্লির অবস্থা হয়ে দাঁড়াবে। আলাদাভাবে গড়ে উঠবে নতুন শিলিগুড়ি। কিন্তু পলিউশনের মাত্রা সম্পর্কে অবহিত নয় বর্তমান। এবিষয়ে এসজেডিএ’র বর্তমান বোর্ডও নিশ্চুপ রয়েছে। শিলিগুড়ি বর্ধমান রোডে অবৈজ্ঞানিকভাবে ফ্লাইওভার তৈরী করা হচ্ছে। এরফলে সমস্ত গাড়িগুলো ফ্লাইওভার দিয়ে নেমে এয়ারভিউ মোড়ে এসে নামবে। বিকল্প রাস্তা না থাকায় গাড়িগুলো যাবে কোনদিকে। ফলে আগামীদিনে শহর আরো ভয়ঙ্কর অব্যবস্থার মুখে পড়তে চলেছে। 
শিলিগুড়ি সূর্যসেন পার্কে নবজাগরনরে পথিকৃৎদের মূর্তি স্থানান্তর নিয়েও বোর্ড সভাতে সোচ্চার হয়েছেন বামপন্থী কাউন্সিলররা। মর্যাদা সহকারে মূর্তিগুলোকে পার্কে পুনঃস্থাপিত করার দাবি জানিয়েছেন তারা। শহরের রাস্তায় পথ কুকুরদের দাপট, কাঞ্চনজঙ্ঘা ক্রীড়াঙ্গনে রাজনৈতিক সভা নয়, খেলার মাঠে খেলাধূলার প্রসার ঘটানো, স্থানীয় বাসস্ট্যান্ডকে স্থানান্তরিত না করা, হাইকোর্টের সিদ্ধান্তে শহরের অবৈধ নির্মান ভাঙা এবং কর্পোরেশনের নিজস্ব সিদ্ধান্তে অবৈধ নির্মান ভাঙা নিয়ে পক্ষপাতিত্ব হচ্ছে না তো? এই বিষয়গুলি তুলে প্রশ্ন ও মোশন উত্থাপন করেছেন বাম কাউন্সিলার শরদিন্দু চক্রবর্তী, মৌসুমী হাজরা। উপস্থিত ছিলেন দীপ্ত কর্মকার।

Comments :0

Login to leave a comment