Debra TMC Leader

সরকারি গাছ কেটে বিক্রির চেষ্টা, অভিযুক্ত তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি

রাজ্য জেলা

টাকা নিয়ে সরকারি গাছের ডাল বিক্রির অভিযোগ উঠল তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতির বিরুদ্ধে। গ্রাম পঞ্চায়েত দপ্তরেই তৃণমূল বসেই তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি তথা প্রাক্তন প্রধান বিনোদ বিহারী দে ১০ হাজার টাকা নিয়েছেন সরকারি গাছের ডাল বিক্রি করার জন্য। ঘটনা হাতে নাতে ধরলেন এলাকার মানুষ। স্থানীয়দের ক্ষোভের মুখে পড়ে ভয়ে এদিন সারাদিন গ্রামপঞ্চায়েত দপ্তর বন্ধ রাখলেন, এলেন না পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধান, সদস্য সহ পঞ্চায়েত কর্মীরা। এই ঘটনা ডেবরা ব্লকের রাধামোহনপুর ১ নম্বর  গ্রামপঞ্চায়েত দপ্তরে। বিডিও দপ্তরে ফোনে অভিযোগ জানালে তিনিও এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় মানুষজন।  
শুক্রবার সকালে এলাকার মানুষ লক্ষ্য করেন রাধামোহনপুর গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার খাসবাজার, চন্দনপুর মৌজায় আট দশ জনের একটি দল গাছের ডাল কেটে যন্ত্রচালিত রিক্সায় তুলছেন। স্থানীয় মানুষ জিজ্ঞেস করলে বলা হয় তারা আষাঢ়ী পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার সড়ক রাস্তার উভয় ধারের গাছের ডাল কাটার অনুমোদন পেয়েছে। সেই অনুমোদনের কাগজ দেখতে চাইলে তারা গড়িমসি মসি করে। এমন অবস্থায় কাগজ আনার নাম করে কয়েকজন গা ঢাকা দেয়। খরব পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় সিপিআই(এম)’র পঞ্চায়েত সদস্য সুমিত অধিকারি। তিনি সঙ্গে সঙ্গে তৃণমূলের প্রধান অনুশ্রী মন্ডললের কাছে ফোন করে জানতে চাইলে, এই বিষয়ে তাঁর কি বক্তব্য, পঞ্চায়েত প্রধান বলেন, এবিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। পঞ্চায়েত দপ্তর থেকে এমন কাউকে গাছ কাটার অনুমোদন দেওয়া হয়নি। তখন গাছ কাটার লোকজনদের একজন নাম সেখ মাজিরেত একটি ভিডিও দেখান। তাতে দেখা যায় গতকাল বৃহস্পতিবার গ্রামপঞ্চায়েত দপ্তরের মধ্যেই পঞ্চায়েত সচীব সহ কর্মীদের সামনে ৫০০ টাকার নোট ২০টি গুনে তৃণমূলের ওই অঞ্চল সভাপতি বিনোদ বিহারীর হাতে তুলে দিতে। সঙ্গে সঙ্গে পঞ্চায়েত দপ্তরের সচীব সেই তৃণমূল নেতার কানে কানে শলাপরামর্শ করার পরই তৃণমূল কংগ্রেসের ওই নেতা মুখে গাছের ডাল কাটার অনুমোদন দিয়ে দিলেন। সেই টাকা যেমন গ্রামপঞ্চায়েত দপ্তরে জমা পড়েনি তেমনি কোনো টেন্ডার না করেই পঞ্চায়েত দপ্তরের মধ্যে টাকা নিয়ে গাছ কাটার অনুমোদন দিয়ে দিলেন। জানা যায় পিংলার থানার কাঠ ব্যবসায়ীদের কাজ থেকে টাকা নিয়ে গাছের ডাল বিক্রি করেন ওই তৃণমূলের নেতা। এই কাজে পঞ্চায়েত দপ্তরের সচীবও যুক্ত। 
বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টায় এই গ্রামপঞ্চায়েত দপ্তরে গ্রামসভা ছিলো। তার আগে বেলা সাড়ে দশটার সময় ওই দপ্তরের মধ্যে এই টাকার লেনদেন হয়। এই তৃণমূল নেতা সহ তার দলবল গ্রামসভা মিটিং আবাস যোজনায় বঞ্চিত মানুষকে হুমকি দিয়ে সভা থেকে তাড়ানোর চেষ্টা করে। জনরোষের মুখে পড়ে পঞ্চায়েত দপ্তর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয় তৃণমূল নেতা সহ তার দলবল। শুক্রবার সকালে সরকারি গাছ কি ভাবে তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতি বিক্রি করে নিজের হাতে টাকা নিতে পারেন তা নিয়ে এলাকায় জনরোষ ছড়িয়ে পড়ে। ৫০-৬০ জন গ্রামবাসী গ্রামপঞ্চায়েত দপ্তরে গিয়ে দেখেন বেলা সাড়ে এগারোটা বাজলেও দপ্তর খোলা হয়নি। সারাদিন গ্রামপঞ্চায়েত দপ্তরে কোনো কর্মী যেমন আসেন নি তেমনি প্রধান, উপপ্রধান কেউই আসেননি। 
এবিষয়ে বিডিওকে জানালে তিনি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। গ্রামপঞ্চায়েত দপ্তরে তৃণমূলের নেতার টাকা নেওয়া ও গাছ কাটার অনুমোদন দেওয়ার ছবি কথপোকত্থন সহ পঞ্চায়েত দপ্তরের সচীবের সাথে কানে কানে শলাপরামর্শ করার ছবি বিডিওকে পাঠালে তিনি সেই বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে বলে জানান। আগামী সোমবারের মধ্যে আইনি পদক্ষেপ না নিলে গ্রামপঞ্চায়েত দপ্তর ঘেরাও করে অচল করা হবে বলে জানান এলাকার মানুষ।

Comments :0

Login to leave a comment