Farmer Commits Suicide

কালনায় ফের আত্মঘাতী ঋণগ্রস্থ কৃষক

রাজ্য জেলা

প্রকৃতি, আবহাওয়া, পরিবেশ-পরিস্থিতি অনুকূল না হওয়ায় চাষ করে লাভ হচ্ছে না কৃষকদের। তাই ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন কালনা ২ ব্লকের বাদলা গ্রাম পঞ্চায়েতের সিমলা গ্রামের শশীকান্ত সাঁতরা (৪৮)। কিন্তু সেই ঋণ কোনোভাবেই পরিশোধ করার উপায় না পেয়ে শেষ পর্যন্ত তিনি আত্মহনের পথ বেছে নেন বলে জানান তার নিকট আত্মীয়রা। মৃতের বড় ছেলে সুব্রত সাঁতরা জানান, বাবা অন্যের বিঘা চারেক জমি ঠিকা নিয়ে চাষ করতেন। এই কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঋণ করে ফেলেছিলেন। এমনকি একটি বেসরকারি সংস্থা থেকে ঋণ নিয়েছিলেন,  সেই সংস্থাকে মাসে ২০০০ টাকা করে কিস্তি দিতে হতো। এই কিস্তি দিতেও বাজার থেকে বাবাকে ঋণ করতে হতো। ঋণ করতে করতে বাবা ঋণে ডুবে গিয়েছিলেন। জমিতে আলু ও শসা লাগানো আছে। নিম্নচাপে বৃষ্টিতে আলু নষ্ট হয়েছে। শসার অবস্থা একই। তাই হতাশায় বাবা শনিবার দুপুরে স্নান করতে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। মা খোঁজাখুঁজির পর শসার জমিতে গিয়ে বাবার অচৈতন্য দেহ দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধার করে তাঁকে প্রথমে চাগ্রাম পরে কালনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ডাক্তারবাবু দেখার পর মৃত বলে ঘোষণা করেন। রবিবার মৃতদেহের ময়না তদন্ত হয়। ইতিপূর্বে কৃষক আত্মহত্যার ঘটনায় দেখা গেছে। ঋণের দায়ে কৃষকের আত্মঘাতী হওয়ার কথা উঠলেই সেখানে সরকারি ভাবে তদন্ত করানো হয়। আর তার বেশিরভাগই রিপোর্ট আসে এই বলে যে ঋণের দায়ে নয়,  তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন পারিবারিক কলহের জেরে। আত্মঘাতী কৃষক শশীকান্ত সাঁতরার ক্ষেত্রেও কি রিপোর্ট উঠে আসে সেটাই এখন দেখার। 
সারা ভারত কৃষক সভার পূর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি শুকুল শিকদারের বক্তব্য রাজ্য ও কেন্দ্র কোন সরকারই কৃষকের পাশে নেই। তাই এইরকম ঘটনা ঘটে চলেছে লাগাতার। তিনি আরো বলেন, শুধু কালনার শশীকান্ত সাঁতরা নয়, গোটা রাজ্যে অভাব ও চাষের কারণে কয়েক শত গরিব, কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। গ্রামের অধিকাংশ সমবায় সমিতি লুট হয়ে গেছে, শাসক দলের নেতারা সমবায়ের টাকা আত্মসাৎ করার পর সেই সমবায় সমিতিগুলি হয় উঠে গেছে, নয়তো ধুঁকছে। সেখানে আর গরিব মানুষ ঋণ পায় না। এখন গ্রামের মহাজন আর মাইক্রোফিনান্সের কোপে পড়ে দেউলিয়া হতে বসেছে। শাসক দলের মদতে মাইক্রোফিনান্সের চড়া সুদের ফাঁসে কৃষকরা ঋণগ্রস্ত হয়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হচ্ছেন।
 

Comments :0

Login to leave a comment