Kolkata Derby

বড় ম্যাচ আর হারতে চান না ক্লেটনরা

খেলা

তখন দু’দলের অনুশীলন শেষ। সবেমাত্র সন্ধ্যে নেমেছে। ইস্টবেঙ্গলের টিম বাস যুবভারতী ছেড়ে হোটেলের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে দিয়েছে। দু’নম্বর প্র্যাকটিস গ্রাউন্ডের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন ইস্টবেঙ্গলের ডিফেন্ডার সার্থক গলুই। তাঁকে দেখতে পেয়েই একটা গাড়ি এসে দাঁড়াল। ওই গাড়িতে ছিলেন এটিকে মোহনবাগানের তিন ফুটবলার লিস্টন কোলাসো, গ্লেন মার্টিনস, সুমিত রাঠি ও আরও একজন। লিস্টন সহ বাকিরাও সার্থককে দেখে হাসি মুখে ডার্বির আগে নিজেদের মধ্যে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন। এক-দেড় মিনিট বাদেই গাড়ি স্টার্ট দিলেন লিস্টন। ডানদিকে টার্ন নিতে গিয়ে ব্যালেন্স হারায় গাড়ি। আর একটু হলেই ড্রেনে পড়ে যেত! কোনওরকমে সামলে নেন লিস্টন। ফুলের একটি টব ভাঙে। বড় ম্যাচের দু’দিন আগেই দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারত! যদিও কোনও ফুটবলারেরই কিছু হয়নি। শুধুমাত্র গাড়ির একটা চাকা ড্যামেজ হয়। সেটা ঠিক করতেই ঘণ্টাখানেক লেগে যায়। গাড়ি ঠিক হওয়ার পরই হোটেলে ফেরেন তিন ফুটবলার।


তিনজনের মধ্যে দু’জনই আগামী রবিবারের ম্যাচে খেলবেন। লিস্টন এদিনও ছন্দে ফেরার চেষ্টা চালিয়ে গেলেন। বহুদিন তিনি ফর্মে নেই। গোল পাচ্ছেন না। তাঁকে নিয়ে চিন্তা বাড়ছে এটিকে মোহনবাগান টিম ম্যানেজমেন্টের। বৃহস্পতিবার সবুজ-মেরুনের অনুশীলনে তেমন তীব্রতা ছিল না। ফিল-গুড পরিবেশের রাখার জন্য নিজেদের মধ্যে ফুট ভলিবল খেলেছে ফুটবলাররা। এরপরও বিশাল কেইথ, বাকি গোলকিপারদের গোলের নিচে দাঁড় করিয়ে শুটিং করেছে হুগো বুমোস, মনবীররা। কয়েকটা শট গোলে রাখলেন মনবীর। বড় ম্যাচের আগে নিজেকে শান দিলেন। তবে, এখনও কি ফিট নন কেরালা ব্ল্যাস্টার্স ম্যাচে জোড়া গোল করা কার্ল ম্যাকহিউ? কারণ, তিনি এদিন দলের সঙ্গে অনুশীলনে নামেননি। শুরুতে সুমিতের সঙ্গে সাইক্লিংয়ে ব্যস্ত ছিলেন। তারপর একটা বল হাতে নিয়ে মাঠের চারিদিক ঘুরলেন। ম্যাকহিউ ডার্বিতে শুরু করতে না পারলে মোহনবাগানের পক্ষে চাপ হতে পারে। কার্ড সমস্যায় খেলতে পারবেন না ব্রেন্ডন হামিল। তাঁর জায়গায় খেলবেন স্লাভকো। তাঁকে অনুশীলনে যথেষ্ট সক্রিয় দেখাল। এদিন শুভাশিস বসু বললেন, ‘এখনও অবধি একটি ডার্বিতে হারিনি। এবারও জিতব। জিততেই হবে। কারণ আমাদের তিন নম্বরে থেকে নিজেদের মাঠে খেলার সুবিধেটা সুনিশ্চিত করতে হবে।’

অন্যদিকে, বিকেল চারটে থেকেই পাশের ট্রেনিং গ্রাউন্ডে অনুশীলন করছিল ইস্টবেঙ্গল। স্টিফেন কনস্টাইনটাইনের তত্ত্বাবধানে। ইস্টবেঙ্গলের অনুশীলন দেখে মনে হলো, মুম্বাই ম্যাচের একাদশ যারা খেলেছিলেন, শেষ মুহূর্তে যদি কোনও বদল না হয়, এই একাদশই খেলবে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে! এদিন সিচ্যুয়েশন ও সেটপিস  প্র্যাক্টিসের উপর জোর দিয়েছে লাল হলুদ। ওই সময় ইস্টবেঙ্গলের এক সাপোর্ট স্টাফ মোহনবাগানের অনুশীলনে ঢুকে পড়েন। বল কুড়ানোর জন্য। তারপর ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলাররা দু’দলে ভাগ হয়ে কিছুক্ষণ ম্যাচ খেলে নিজেদের মধ্যে। শেষ ছ’টি ডার্বি হেরেছে ইস্টবেঙ্গল। চলতি মরশুমেই দু’টো। সুপার কাপে যদি সাক্ষাৎ না হয়, তাহলে এটাই মরশুমের শেষ ডার্বি। এমনিতেও স্টিফেনের দলের কাছে হারানোর কিছু নেই। ডার্বি জিততে পারলে সমর্থকরা রাগ-ক্ষোভ-অভিমান সব ভুলে যাবে। তাই, যেনতেন প্রকারেণ বড় ম্যাচ জিততে চাইছে মোবাশির রহমান, ক্লেটন সিলভারা। অনুশীলন শেষে মোবাশির বলে গেলেন, ‘আমাদের হারানোর কিছু নেই। আইএসএল শেষ ম্যাচ এটা আমাদের। সেই ম্যাচটা ডার্বি। এই ম্যাচ জিতেই আইএসএল মরশুমটা ভালোভাবে শেষ করতে চাই। ডার্বি জেতার জন্য দল ক্ষুধার্ত।’

 

 

Comments :0

Login to leave a comment