বিজেপির সাহায্য নিয়ে তৈরি হওয়া তৃণমূলের শীর্ষ নেত্রী মমতা ব্যানার্জির মুখে সম্প্রীতির বার্তা। ৬ ডিসেম্বর ১৯৯২ সালে উগ্র-হিন্দুত্ববাদীদের হাতে বাবরি মসজিদ ভাঙার পর থেকে এই দিনটিতে গোটা দেশ জুড়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক এবং সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে সাম্প্রদায়িক শান্তি সম্প্রীতি বজায় রাখার বার্তা দিয়ে এবং সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিরুদ্ধে কর্মসূচি নেওয়া হয়। আমাদের রাজ্যে প্রতি বছর এদিন বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিরুদ্ধে এবং সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে কর্মসূচি নেওয়া হয়। এবছরও সেই কর্মসূচি হবে। পার্ক সার্কাস থেকে রাজাবাজার পর্যন্ত মিছিল করবে বামপন্থী দল গুলো।
কিন্তু তৃণমূলের পক্ষ থেকে কখনও এই দিনে কোন বড় কর্মসূচি নেওয়া হয় না। এবছর মেয়ো রোডে রাজ্যের শাসক দলের পক্ষ থেকে সংহতি দিবসের ডাক দেওয়া হয়েছে। ছাত্র যুব সংগঠনের ডাকে কর্মসূচি হলেও বক্তা তৃণমূলের জন প্রতিনিধিরা। সভায় নেই মমতা এবং অভিষেক।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি এক্সহ্যান্ডেলে লেখেন, ‘‘শুরুতেই আমি সকলকে ‘সংহতি দিবস’/ ‘সম্প্রীতি দিবস’ উপলক্ষে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। বাংলার মাটি একতার মাটি। এই মাটি রবীন্দ্রনাথের মাটি, নজরুলের মাটি, রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দের মাটি— এই মাটি কখনো মাথা নত করেনি বিভেদের কাছে, আগামীদিনেও করবে না। হিন্দু, মুসলিম, শিখ, খ্রিস্টান, জৈন, বৌদ্ধ — বাংলায় সকলে আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতে জানি। আনন্দ আমরা ভাগ করে নিই। কারণ আমরা বিশ্বাস করি ধর্ম যার যার, কিন্তু উৎসব সবার। যারা সাম্প্রদায়িকতার আগুন জ্বালিয়ে দেশকে ধ্বংস করার খেলায় মেতেছে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই জারি থাকবে। সকলে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখুন।’’
উল্লেখ্য ১৯৯২ সালে এই ঘটনার পর ১৯৯৮ সালে কংগ্রেস ভেঙে তৈরি হয় তৃণমূল। বিজেপির হাত ধরে তাদের উত্থান। বিজেপির সাথে জোট করে ২০১১ সালের আগে একাধিক নির্বাচনে লড়েছেন মমতা। হয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও। প্রশ্ন এখানেই মুখ্যমন্ত্রী যদি সত্যি ধর্ম নিরপেক্ষতায় বিশ্বাস করেন তাহলে কেন তিনি বিজেপির সাহায্য নিয়ে দল তৈরি করলেন, কেনই বা গেলেন মন্ত্রিসভায়।
রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা এদিন মেয়ো রোডের সভায় বলেন, ‘১৯৯২ সালে যখন বাবরি মসজিদ ভাঙা হয় তখন রাজ্যের বামফ্রন্ট শান্তি বজায় রাখতে কোন পদক্ষেপ নেয়নি। মমতা ব্যানার্জি সেই সময় মানুষের ঐক্য বজায় রেখেছিলেন।’ বলে রাখা উচিত এদিনের সভায় শশী পাঁজা যেই কথা বলেছেন তা সম্পূর্ন মিথ্যা। সেই সময় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু সেনা বাহিনী নামিয়ে গোটা রাজ্যে একটাও সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা ঘটাতে দেয়নি। বামপন্থী কর্মীরা বিভিন্ন এলাকা, মহল্লা রক্ষা করেছিল সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার হাত থেকে।
TMC Mamata
আরএসএসের ‘দূর্গা’ মমতার মুখে সম্প্রীতির বার্তা
×
Comments :0