Siliguri Rape Case

ঝাড়ফুঁকের নামে আদিবাসী কিশোরীকে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ওঝা

জেলা

ঝাড়ফুঁকের নাম করে আদিবাসী তরুনীকে ধর্ষণের অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে বাগডোগরা থানার পুলিশ। ধৃতের নাম রন্টু চিকবরাইক (৩৮)। বাড়ি শিলিগুড়ি মহকুমার ঘোষপুকুরের কমলা চা বাগান এলাকার গুদাম লাইনে। ধৃত কমলা চা বাগানে কাজ করার পাশাপাশি বিভিন্ন চা বাগানে মহিলা শ্রমিক সরবরাহ করতো। একই সঙ্গে বিভিন্ন মহল্লায় ঝাড়ফুঁকের কাজও করতো। অভিযোগ, ঝাড়ফুঁকের নাম করে এলাকার আরো বহু তরুনীকে এইভাবেই সুস্থ করে দেবার নাম করে ধর্ষণ করেছে। এলাকায় সাধুবাবা হিসেবে পরিচিতি ছিলো রন্টুর। 
জানা গেছে, তরুনীর কিছুদিন থেকে মানসিক সমস্যা দেখা দিয়েছিলো। সেই কারণে সাধু বলে পরিচিত রন্টু চিকবরাইক তরুনীর বাড়িতে নিয়মিত আসতো। বাড়ির একটি ঘরে তরুনীকে নিয়ে ঝাড়ফুঁক করতো সাধু। বেশ কয়েক বছর আগে বাবা এবং মাসখানেক আগে দাদার মৃত্যুর পরে বাড়িতে বৃদ্ধা মা ও বৌদির সাথে থাকতো তরুনী। ঝাড়ফুঁকের নামে দিনের পর দিন ধর্ষণের ফলে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে তরুনী। এরমধ্যেই তরুনীর অসুস্থ মায়ের মৃত্যু হয়। গত মঙ্গলবার মারা যাবার আগে গোটা বিষয়টি তরুনীর বৌদি ও প্রতিবেশীদের কাছে জানিয়েছেন তরুনীর মা। এরপরে প্রতিবেশী মহিলারা তরুনীর কাছ থেকে সবকিছু জানতে পেরে তাকে সাথে নিয়ে এসে বাগডোগরা থানায় অভিযুক্ত সাধু রন্টু চিকবরাইকের নামে লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করেন। 
তরুনী ও ওই এলাকার মহিলাদের অভিযোগ পাবার পরে তদন্তে নেমে বুধবার রন্টু চিকবরাইককে গ্রেপ্তার করেছে বাগডোগরা থানার পুলিশ। অন্যদিকে তরুনীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ধৃতকে বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি মহকুমা আদালতে তোলা হলে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কোন বাগানে কাজের অভাব থাকলে সেই বাগানের মহিলা শ্রমিকদের কাজ জোটাত ধৃত রন্টু। সেই সূত্র ধরেই তরুনী ও তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ হয় তার। দীর্ঘ প্রায় আট মাস ধরে তরুনীর বাড়িতে যাতায়াত করছিলো রন্টু। তরুনী মানসিক সমস্যায় ভুগছে জানতে পেরে ঝাড়ফুঁকের মাধ্যমে তাকে সুস্থ করে দেবার আশ্বাস দেয় রন্টু। তরুনীর বাড়িতে এসে ঝাড়ফুঁকের নামে প্রথমে পূজো করতো সে। এরপর থেকে তরুনীকে আলাদা ঘরে নিয়ে গিয়ে প্রতিদিন ধর্ষণ করতে শুরু করে। তরুনীকে হুমকী দিয়েছিলো কাউকে কিছু জানালে ফল ভালো হবে না। তাই ভয়ে ওই তরুনী কাউকে কিছু জানায়নি। কিন্তু অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বাধ্য হয়েই তরুনী তার মা, বৌদি ও প্রতিবেশীদের কাছে গোটা ঘটনা খুলে বলে। এরমধ্যেই তার মা মারা যান। এই ঘটনায় শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার সি সুধাকর বলেন, অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

Comments :0

Login to leave a comment