Narahari Shrestha

সাক্ষাৎকারে নরহরি শ্রেষ্ঠ:
‘একা নই, গোটা দল খেলছে’

খেলা

শুভঙ্কর দাস

 

সন্তোষ ট্রফি টুর্নামেন্টে এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ গোলদাতা বাংলার নরহরি শ্রেষ্ঠ। টানা তিন ম্যাচে জোড়া গোলের নায়কও বটে। আপাতত কল্যাণীতে চলছে বাংলা দলের ক্যাম্প। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই শুরু হবে মূলপর্ব। আর এরই মাঝে গণশক্তি ডিজিটালের সঙ্গে খোলামেলা আড্ডায় কিছুক্ষণ। 

এই নিপাট ফুটবলীয় আড্ডায় উঠে এল অনেক কথাই। যেমন, ‘কোচ বিশ্বজিত ভট্টাচার্য আমাদের কাছে ফাদার ফিগার। শুধু তাই নয়, তাঁর গলায় বারবার শোনা গেল একটি কথা, ‘আমি একা নই, গোটা দল হিসেবে মাঠে পারফর্ম করছি আমরা সকলে। সত্যিই বঙ্গ ফুটবল এক শ্রেষ্ঠ-কেই পেয়েছে, যে উজাড় করে দিচ্ছে নিজেকে প্রতিদিন। 

গণশক্তি- এখনও পর্যন্ত দুরন্ত পারফরম্যান্স এবং টুর্নামেন্টের টপ স্কোরার। কেমন লাগছে

শ্রেষ্ঠ- ভালো লাগছে পারফর্ম করতে পেরে। তবে আমি একা নই, গোটা দল ভালো খেলছে। আমরা যে লক্ষ্য নিয়ে এগিয়েছি, তা প্রাথমিকভাবে পূরণ হয়েছে। আমরা ভালোভাবেই কোয়ালিফাই করতে পেরেছি। ফাইনাল রাউণ্ডে আমরা আরও ভালো খেলতে পারব বলে আশা রাখছি। 

গণশক্তি- মূলপর্বের জন্য কীভাবে নিজেদের তৈরি করছ ?

শ্রেষ্ঠ- আমরা যেভাবে সিরিয়াসলি আগের ম্যাচগুলোর জন্য তৈরি হয়েছিলাম, সেইভাবেই নিজেদেরকে গুছিয়ে নিচ্ছি। আরও কয়েকজন ফুটবলার স্কোয়াডে যুক্ত হয়েছে। অবশ্যই আমাদের লক্ষ্য ট্রফি জয়। 

গণশক্তি- ভবিষ্যতে কী লক্ষ্য

শ্রেষ্ঠ- আপাতত আমি এবং গোটা দলের ফোকাস সন্তোষ ট্রফি। এই মুহূর্তে ট্রফি জয় ছাড়া কোনো লক্ষ্যই নেই। যেটার জন্য এতদিন ধরে লড়াই করছি সবাই মিলে, যে মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছি। সেই লক্ষ্য পূরণের পর বাকি বিষয় নিয়ে ভাবব।

গণশক্তি- সন্তোষ ট্রফিতে গোলশূন্য ম্যাচ চলছে, কিন্তু তুমি নামার পরেই জোড়া গোল। রহস্যটা কী

শ্রেষ্ঠ- সেইরকম কিছু না। আমি একা নই, সবাই পাশে ছিল বলেই গোল পেয়েছি। কোচের সেই মুহূর্তে পরিকল্পনায় আমি ছিলাম, তাই মাঠে নেমেছিলাম। নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি সবসময়। বাসুদেব মাণ্ডি ছিল আমার পাশে, ওর পাস থেকে গোল করেছিলাম। আমি একা নই,  গোটা দল এবং কোচিং স্টাফরা পাশে ছিল বলেই গোল করতে পেরেছি মাঠে নেমে। 

গণশক্তি- ফুটবল জার্নির শুরু কীভাবে

শ্রেষ্ঠ- আমার বাবাও ফুটবল খেলতেন, তাঁকে দেখেই শুরু। আমার মা ভীষণভাবে আমাকে সাপোর্ট করেন। 

গণশক্তি- তোমার রোল মডেল কে

শ্রেষ্ঠ- ব্রাজিলের রোনাল্ডো। এখন সবাই ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো কিংবা মেসির ফ্যান বেশি হয়। তবে আমার কাছে রোনাল্ডো খেলা,  স্কিল এবং এবিলিটির দিক থেকে অনেক এগিয়ে। উনি ৯ নম্বর জার্সি পড়ে মাঠে নামতেন এবং আমিও নম্বর ৯ পরেই মাঠে নামি (কিছুটা হেসে)। 

গণশক্তি- অবসর সময় কীভাবে কাটাও

শ্রেষ্ঠ- বেশিরভাগ সময় বাইরে থাকি। ফলে যেটুকু সময় বাড়িতে থাকার সুযোগ হয় বা অবসর সময় পাই, পরিবারের সঙ্গেই সময় কাটাই। তবে ছোটবেলার বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে গল্প করতেও দারুণ লাগে। 

গণশক্তি- কোচ বিশ্বজিত ভট্টাচার্যের পেপটক এবং ড্রেসিংরুমের গল্পটা একটু শোনাবে?

শ্রেষ্ঠ- স্যার আমাদের খুব ভালোভাবে গাইড করেন, বিশ্বাস করেন আমাদের। স্যার জানেন যে, কে কোন পজিশনে ভালো খেলতে পারে। আমরাও স্যারকে ভীষণভাবে ভালোবাসি এবং শ্রদ্ধা করি। মাঠের ভিতরে এবং বাইরে দু-জায়গাতেই খুব সাহায্য পাই স্যারের থেকে। আমাদের লাইফস্টাইল,  খেলার ধরণ এবং সমস্ত বিষয়ে স্যারের নজর থাকে। আমাদের কাছে ফাদার ফিগার। আমাদের পরিবারের বাইরে যদি কেউ সঠিক অভিভাবক থাকেন, তাহলে সেটা বিশ্বজিত স্যার। জুনিয়র এবং সিনিয়র ফুটবলারদের সমান চোখে দেখেন তিনি।

গণশক্তি- উঠতি ফুটবলার এবং বাংলার ফুটবলপ্রেমী দর্শকদের জন্য তোমার কী বার্তা থাকবে

শ্রেষ্ঠ- জীবনে ওঠাপড়া থাকবেই। আমার জীবনেও এসেছে। তবে লক্ষ্য না হারিয়ে নিজের ফোকাস ঠিক রেখে এগোতে পারলে লক্ষ্যে পৌঁছানো যাবেই। সাময়িক চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে হবে সঠিকভাবে। দর্শকদের বলব আমাদের দলকে সাপোর্ট করুন, নিশ্চয়ই ভালো কিছু করে দেখাতে পারব আমরা।

Comments :0

Login to leave a comment