Salim

সরকার সাফল্যের খতিয়ান নিয়ে মিথ্যা বলছেন মুখ্যমন্ত্রী, মানুষের সমর্থন নিয়ে চলছে বাংলা বাঁচাও যাত্রা : সেলিম

রাজ্য বাংলা বাঁচাও যাত্রা

রাজ্য সরকারের সাফল্য নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যেই তথ্য পেশ করেছেন তা মিথ্যা। মঙ্গলবার সিপিআই(এম) রাজ্য সদর দপ্তর মুজফ্‌ফর আহমেদ ভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে বললেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। এদিন মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন তার সরকারের আমলে ২ কোটি বেকারের চাকরি হয়েছে। পাল্টা সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মিথ্যা কথা বলছেন। উনি বলছেন তার আমলে দুকোটি চাকরি হয়েছে, কিন্তু দেখা যাচ্ছে রাজ্য জুড়ে বেকারত্ব বিরোধী আন্দোলন হচ্ছে। ছেলে মেয়েরা অন্য রাজ্যে চলে যাচ্ছেন কাজে জন্য।’ তিনি বলেন, সরকারকে শ্বেতপত্র প্রকাশ করে বলতে হবে কোন দপ্তরে বা কোন ক্ষেত্রে কত নিয়োগ হয়েছে। কয়েকদিন আগে দেখা গিয়েছে পুলিশের চাকরির পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। প্রশ্নপত্র বিক্রি হয়েছে। এসএসসি পরীক্ষায় দুর্নীতি রাজ্য দেখেছে। এই সব দুর্নীতির বিরুদ্ধেই বাংলা বাঁচাও যাত্রা চলছে। ভোটের আগে তৃণমূল বিজেপি হিন্দু মুসলিম করছি। আমরা মানুষের দাবি নিয়ে পথে নেমেছি।
তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী দাবি করছে এক কোটির বেশি মানুষকে নাকি সরকার দারিদ্র সীমার ওপরে নিয়ে এসেছে। কি ভাবে এনেছে? কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে সরকারকে সেই সব জানাতে হবে। সেলিম বলেন, ‘গোটা পৃথিবীর মধ্যে সব থেকে দ্রুত সব থেকে কম সময় সব থেকে বেশি সংখ্যায় মানুষ দারিদ্র সীমার ওপর উঠে এসেছিল জ্যোতি বসুর মুখ্যমন্ত্রীত্বের প্রথম পাঁচ বছরে।’
মঙ্গলবার সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক বলেন, ‘মানুষের সমর্থন নিয়ে বাংলা বাঁচাও যাত্রা চলছে। আজ রাতে দক্ষিণ দিনাজপুর হয়ে মালদহ জেলায় প্রবেশ করবে। তিনদিন সেখানে থাকবে।’ মহম্মদ সেলিম ৫ ডিসেম্বর ফের যোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন। সেলিম জানিয়েছেন বীরভূম থেকে সিপিআই(এম) পলিটব্যুরো সদস্য রামচন্দ্র ডোমের নেতৃত্বে একটি মিছিল মালদহে এসে যুক্ত হবেন। 
ওড়িশায় বাঙালি ব্যবসায়ীদের রাজ্য ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে। এর সমালোচনা করে সেলিম বলেন, ‘ওড়িশার বিজেপি সরকার সেই রাজ্য বসবাসকারি বহু বাঙালি ব্যবসায়ীকে ৭২ ঘন্টার মধ্যে রাজ্য ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে। এই সিদ্ধান্র সরাসরি দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর ওপর আঘাত। ভারত দেশের নাগরিক যে কোন রাজ্যে যেতে পারেন থাকতে পারেন।
কেন্দ্রের নতুন সঞ্চার সাথীর সমালোচনা করে সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক বলেন, ‘ভারত সরকারের টেলি কমিউনিকেশন দপ্তর বলছে সব স্মার্টফোনে ‘সঞ্চার সাথী’ অ্যাপ ডাউনলেোড করতে বলছে। এই সিদ্ধান্ত সংবিধান বিরোধী। নাগরিকদের ব্যাক্তিগত বিষয় সরকার কোন ভাবে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে যে কোন দক্ষিণপন্থী সরকার এই কাজ করে।’ অভিযোগ করে সেলিম বলেন, সরকারের নিজস্ব কোন পরিকাঠামো নেই এই নজরদারি করার, দেখা যাবে কোন মার্কিন বা ইজরায়িলী সংস্থাকে এই কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। এই অ্যাপ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন সেলিম।
এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে এসআইআর নিয়ে সরব হয়েছেন সেলিম। তিনি বলেন, ‘ফলতায় সব থেকে বেশি কারচুপি হয়েছে এসআইআরে কমিশনের বিশেষ পর্যবেক্ষক বলেছে তিনি খতিয়ে দেখবেন বিষয়টা। আমাদের কথা হচ্ছে কেন আগে থেকে মৃতদের নাম বাদ দেওয়া হয়নি। কেন তাদের নাম বাদ দিয়ে ফর্ম বিলি করা হয়নি? যদি সেই কাজ হতো তাহলে মৃতদের ফর্ম কোথাও যেত না আর একশো শতাংশ ফর্ম জমা দেওয়ার কথা কমিশন বলতো না। ভোটার তালিকা ত্রুটি মুক্ত করতে গেলে আগে মৃতদের নাম বাদ দেওয়া সব থেকে বেশি প্রয়োজন ছিল।’
ওয়াকফ প্রসঙ্গে সেলিম বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী বলেছিল রাজ্যে ওয়াকফ আইন চালু করতে দেবে না। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের বারন থাকা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার ওয়াকফ সম্পত্তি আপলোড করার নির্দেশিকা জারি করলো। আসলে উনি মুখে যা বলেন কাজে তা করেন না। আরএসএস যা চায় সেটা করেন। সিএএ, এনআরসির সময় সবার আগে ডিটেনশন ক্যাম্পের জন্য জমি চিহ্নিত করেছিল রাজ্য সরকার।’

Comments :0

Login to leave a comment