JADAVPUR STUDENT'S DEATH

নিহত ছাত্রের বাড়িতে চক্রবর্তী, নাগরিক মিছিল যাদবপুরে

রাজ্য জেলা

SFI TMCP JADAVPUR UNIVERSITY STUDENTS POLITICS BENGALI NEWS SWAPNADIP STUDENTS DEATH

ভয়াবহ অপরাধ হয়েছে যাদবপুরে। মৃত পড়ুয়াটির পরিবারের কাছে কিংবা তার বন্ধুবান্ধবের কাছে মুখ দেখাবার যোগ্যতা আমরা হারিয়ে ফেলেছি। এই ঘটনা নিয়ে অহেতুক রাজনীতি করা বন্ধ হোক। যারা এটা নিয়ে রাজনীতি করছেন তারা ভয়াবহ অন্যায় করছেন। গোটা রাজ্যের মানুষ এই বিষয়ে সহমত। শুক্রবার নদীয়ার রানাঘাটে যাদবপুর কাণ্ডে মৃত ছাত্রের বাড়িতে যান সিপিআইএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী। সেখানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এমনটাই জানান তিনি। 

চক্রবর্তী বলেন, গোটা রাজ্যের মানুষের দাবি র‌্যাগিং মুক্ত শিক্ষাঙ্গন। শিক্ষাঙ্গনকে বহিরাগতদের দাপাদাপি মুক্ত করতে হবে। এর পাশাপাশি যাদবপুরের মত বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা ক্ষুন্ন করার চক্রান্ত চলছে। সেটাও বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। এই চক্রান্ত রুখতে প্রয়োজন ছাত্র-শিক্ষক এবং শিক্ষা কর্মীদের ঐক্য। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, রাজ্যের মানুষ এই দাবিগুলির প্রতি দায়বদ্ধ মনোভাব দেখাবেন। 

যাদবপুর কাণ্ডে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই কমিটিকে কড়া আক্রমণ করে চক্রবর্তী বলেন, এই কমিটির কাজ কি? ইতিমধ্যেই তো তদন্ত চলছে। তাহলে কি এই কমিটি গড়ে তদন্তকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হবে? প্রশ্ন করেন তিনি। চক্রবর্তী আরো বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী প্রথম থেকেই তদন্তকে প্রভাবিত করার চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন। সেই জন্যই তিনি গোটা ঘটনার দায় মার্কসবাদীদের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করেন। এই চক্রান্তে সফল না হওয়ায়, নিজের মতো করে একটা তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। 

তৃণমূল এবং বিজেপিকে কড়া আক্রমণ করে চক্রবর্তী বলেন, যাদবপুরের মুক্তচিন্তার সংস্কৃতি এদের চক্ষুশূল। তাই চেষ্টা চলছে কিভাবে জনমানসে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে  হেয় প্রতিপন্ন  করা যায়। তৃণমূল এবং বিজেপি উভয়ে মিলিতভাবে এই কাজ করার চেষ্টা করছে। কখনো নিজেরা সরাসরি করছে, আবার কখনো পিছন থেকে কোন বাহিনীকে উস্কানি দিচ্ছে। 

এই প্রসঙ্গে চক্রবর্তী আরো বলেন, ইচ্ছাকৃতভাবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কৃতিকে আক্রমণ করা হচ্ছে। আসলে যাদবপুরের মুক্তচিন্তার সংস্কৃতিকে তৃণমূল বিজেপির মত কর্তৃত্ববাদী শক্তিগুলি ভয় পায়। ভারতবর্ষের অন্যান্য ক্যাম্পাসে একই ঘটনা না ঘটলে হয়তো যাদবপুরের সংস্কৃতিকে দায়ী করা যেত। আইআইটিতেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে সাম্প্রতিক সময় । আসলে যাদবপুর কে দাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। আমরা এর তীব্র বিরোধী। এই ঘটনার জন্য ছাত্ররা নয়, যাদবপুরের কর্তৃপক্ষ দায়ী। তাঁরা এতদিন কোনও ব্যবস্থা নেননি কেন? রাজ্য সরকারের ভূমিকা কী ছিল?  তৃণমূলের নেতারাও স্বীকার করতে বাধ্য হচ্ছে, বামফ্রন্ট সরকারের সময়কালে  যাদবপুরে রেগিং এর মত ঘটনা ঘটত না।

এদিন যাদবপুরের ঘটনার প্রতিবাদে পথে নামে নাগরিক সমাজ।  সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটা নাগাদ যাদবপুর সুকান্ত সেতু থেকে তালতলা ইইডিএফ অবধি মিছিল করে নাগরিক সমাজ। মিছিলের সামনের সারিতে ছিলেন সুজন চক্রবর্তী, মহিলা আন্দোলনের নেত্রী মালিনী ভট্টাচার্য, শতরূপ ঘোষ, অধ্যাপক দেবেশ দাস, চলচিত্র শিল্পী বিমল চক্রবর্তী, অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র প্রমুখ। মিছিল থেকে র‌্যাগিং বিরোধী সংস্কৃতি গড়ে তোলার দাবি জানানো হয়। মিছিলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন এবং বর্তমান পড়ুয়ারাও সামিল হন। 

Comments :0

Login to leave a comment