TRIPURA LEFT INC CAMPAIGN

ত্রিপুরায় বা-কংগ্রেস প্রচারে মানুষের সাড়া

জাতীয়

বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস জয়ের জন্য সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়েছে। জেলা স্তরে উভয় দলের নেতা-কর্মীরা স্থানীয়স্তরে একসাথে কাজ করছে। ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। শুক্রবার একথা বলেছেন সিপিআই (এম) রাজ্য সম্পাদক জীতেন্দ্র চৌধুরি। অন্যদিকে তিপ্রা মথা প্রধান প্রদ্যোৎ কিশোর দেববর্মা বলেছেন, বিজেপি’র বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে ১৬ ফেব্রুয়ারি ভোট দিন। মথা প্রধানের এই কথা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ত্রিপুরার রাজনৈতিক মহল। শুক্রবার দশরথ দেব ভবনে বামফ্রন্ট নেতৃবৃন্দ নির্বাচনী ইশ্‌তেহার প্রকাশ করেন। বামফ্রন্ট আহ্বায়ক নারায়ণ কর, সিপিআই (এম) রাজ্য সম্পাদক জীতেন্দ্র চৌধুরি এবং বামফ্রন্টের অন্যান্য শরিক নেতৃবৃন্দ সাংবাদিক সম্মেলনে ইশ্‌তেহারটি প্রকাশ করেন। প্রার্থী তালিকার মতো নির্বাচনী ইশ্‌তেহারও বামফ্রন্টই প্রথম প্রকাশ করলো। বামফ্রন্টের আহ্বায়ক নারায়ণ কর বলেন, বিজেপি একক সংখ্যায় আটকে যাবে। 


সাংবাদিক বৈঠকে যৌথ প্রচার নিয়ে প্রশ্নের জবাবে জীতেন্দ্র চৌধুরি বলেন, প্রথম পর্বে আসন বোঝাপড়া শেষ হয়েছে। ৬ ফেব্রুয়ারি যুগ্ম আবেদন রাখা হবে দু’দলের পক্ষ থেকে। মহকুমা স্তরে সভায় বামফ্রন্ট নেতৃবৃন্দও উপস্থিত থাকবেন। উভয় দলের নেতা-কর্মীরা স্থানীয়স্তরে একসঙ্গে কাজ করছে। মানুষই উভয় দলকে একসাথে এনেছেন। সারা রাজ্যে মানুষের ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। ভোট হিংসামুক্ত হবে কিনা, এই প্রশ্নের জবাবে জীতেন্দ্র চৌধুরি বলেছেন, নির্বাচন কমিশন আশ্বস্ত করেছেন কিন্তু এখনই আত্মসন্তুষ্টিতে ভুগতে রাজি নই। তিনি বলেন, মানুষ বদ্ধপরিকর, পরিস্থিতি যা-ই হোক, যার ভোট যাকে দেওয়ার তাঁরা দেবেন। কোনও পরিস্থিতি ভোটারদের এবার আটকাতে পারবে না বিজেপি। 
বিজেপি বিরোধী ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের বৃত্ত আরও প্রসারিত করা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সিপিআই (এম) রাজ্য সম্পাদক বলেছেন, তিপ্রা মথার কাছে প্রকাশ্যে আবেদন করেছি। প্রার্থী ঘোষণার সময়েও বলেছি, আজও বলছি। এখনও যদি কিছু ব্যবস্থা করা যায় আমরা করবো। আমাদের প্রধান লক্ষ্য বিজেপি-কে পরাস্ত করা। সবার একই শত্রু। মানুষের প্রয়োজন অনুসারে সংবিধান সংশোধন হয়। কেন্দ্রীয় সরকারকে বাধ্য করতে পারি আমাদের কথা শোনার জন্য। যৌথ ঘোষণাপত্রের জন্য আলোচনা করতেই পারি। 


শাসক দল যেমন হিংসা করছে, ক্ষমতা পরিবর্তন হলে তাদের কর্মীদের উপর হিংসা হবে বলে লোকজন ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টা করছে বিজেপি। এনিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তরে জীতেন্দ্র চৌধুরি বলেন, আমরা বদলায় বিশ্বাসী না। হিংসার কোনও সুযোগ থাকবে না। শান্তি ও দীর্ঘমেয়াদি বন্ধুত্ব থাকুক। বিভিন্ন দল থাকবে, প্রতিয়োগিতা থাকবে, কিন্তু হিংসার পথে না। 
বামফ্রন্টের ইশ্‌তেহারে বলা হয়েছে, বিজেপি-আইপিএফটি জোট সরকার ত্রিপুরাকে ধ্বংসের কিনারায় নিয়ে গেছে। ত্রিপুরার মানুষ এই দুর্বিষহ যন্ত্রণাকর অবস্থার অবসান চান। মানুষ চান রাজ্যে গণতন্ত্র- শান্তি-সম্প্রীতি- ধর্মনিরপেক্ষতার বাতাবরণ এবং আইনের শাসন ফিরে আসুক। মানুষ চান কাজ-উপার্জনসহ মানুষের বেঁচে থাকবার মতো ব্যবস্থা নিশ্চিত হোক। মানুষ অবশ্যই চান দেশের সংবিধান ত্রিপুরায় কার্যকরীভাবে সচল হোক। এই লক্ষ্যে বিজেপি-কে পরাস্ত করতে ত্রিপুরার নির্বাচকমণ্ডলীকে বামফ্রন্ট প্রার্থীদের জয়যুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছে নেতৃবৃন্দ।


এদিকে শুক্রবার বিজেপি-কে কড়া আক্রমণ করে তিপ্রামথা প্রধান প্রদ্যোৎ কিশোর দেববর্মা বলেছেন, পাঁচ বছর ত্রিপুরাকে ধর্ম, ভাষার নামে ভাগ করার চেষ্টা করা হয়েছে। শুধু ত্রিপুরা না, গোটা দেশে ভাগ করে শাসন করার কৌশল নিয়েছে শাসক দল। তাঁর আবেদন,  ১৬ ফেব্রুয়ারি বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে ভোট দিন। শুক্রবার সামাজিক মাধ্যমে এই কথা বলেছেন প্রদ্যোৎ কিশোর দেববর্মা। এদিনে আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মার বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন তিনি। এদিন খোয়াই জেলার কৃষ্ণপুর কেন্দ্রে বিজেপি’র নির্বাচনী সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে আসামের মুখ্যমন্ত্রী তিপ্রামথা এবং সিপিআই (এম)-কংগ্রেসের আসন সমঝোতাকে এক সঙ্গে আক্রমণ করেন। তিপ্রামথাকে ভোট দেওয়া মানে ভোট নষ্ট করা কারণ তারা সরকার বানাতে পারবে না। সিপিআই (এম)-কংগ্রেস আসন সমঝোতাকে সুবিধাবাদী বলেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী। জবাবে এদিন রাত ৮টা নাগাদ টুইট করে তিপ্রামথা প্রধান প্রদ্যোৎ কিশোর বলেছেন, ভোট কখনও নষ্ট হয় না। এটা অধিকার। বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীকে তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন ১৯৮৪ সালে বিজেপি’র দুই সাংসদ হওয়াটা ভোট নষ্ট ছিল না, সূচনা ছিল। ইতিহাস মনে করিয়ে দেয় আজ আমরা কোথায় আছি। আদিবাসীদের সাংবিধানিক অধিকারকে অস্বীকার করবেন না। আমরা জিতবো এবং আমরা সেটা জানি। 
 

Comments :0

Login to leave a comment