Farakka Rape-Murder Case

ফরাক্কায় শিশুর ধর্ষণ খুনে দোষী সাব্যস্ত দুই

রাজ্য জেলা

ফারাক্কার শিশুকন্যার খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত দুই জনকেই দোষী সাব্যস্ত করল আদালত।  বৃহস্পতিবার আদালতে পেশ করা হয় দুই অভিযুক্তকে। দুজনই দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। গত ১৩ অক্টোবর  সকালে ভয়ঙ্কর ঘটনার সাক্ষী থেকেছিল ফারাক্কা। সকাল থেকেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না নয় বছরের এক শিশুকে। মামার বাড়ি বেড়াতে এসে সকালে ফুল তুলতে গিয়েছিল ওই শিশু। তারপর থেকেই নিখোঁজ ছিল সে। দুপুরে দীনবন্ধু হালদার বলে এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় বস্তাবন্দী দেহ। শিশুর মায়ের দাবি ছিল, ধর্ষণ করা হয়েছে শিশুকে। কিন্তু ঘটনা ধামাচাপা দিতে ময়দানে নামে পুলিশ। বেলা ১২ টার দিকে ফারাক্কায় উদ্ধার হয়েছিল ওই শিশুর দেহ। সেদিনই মূল অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রাতেই মরদেহ নিয়ে আসা হয় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ঘটনার খবর পেয়ে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান ডিওয়াইএফআই জেলা সম্পাদক সন্দীপন দাস, জেলা সভাপতি সৈয়দ নুরুল হাসান সহ ডিওয়াইএফআই নেতৃত্ব। রাতে জানা যায়, পরিবার বারবার বলা সত্বেও এফআইআর’এ নেই ধর্ষণের ধারা। পরিবার অনড় থাকে, মর্গের সামনে দীর্ঘ অবস্থান করেন ডিওয়াইএফআই নেতারা। অবশেষে চাপের মুখে এফআইআর’এ ধর্ষণের ধারা যোগ করে পুলিশ। তবে ১৪ তারিখ ময়নাতদন্ত হওয়ার কথা থাকলেও   সেদিন হয় নি। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ময়নাতদন্তের দাবি জানানো হয় পরিবারের পক্ষ থেকে। পরিবারের দাবিতে লড়াইয়ে থেকেছে ডিওয়াইএফআই নেতারা। ১৫ তারিখও হয়রানির শিকার হয়েছে পরিবার। অবশেষে সেদিন মর্গের বাইরে বিক্ষোভ দেখান ছাত্র, যুব ও পরিবারের সদস্যরা। তারপর শুরু হয় ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়া। তবে চার্জশিট দিতে দেরি করছিল পুলিশ। তদন্তের গতি স্পষ্ট চকরা হয় নি পরিবারের কাছে। ২৮অক্টোবর ফারাক্কায় জাতীয় সড়ক অবরোধ করে এসএফআই, ডিওয়াইএফআই। ছিলেন মিনাক্ষী মুখার্জি, ধ্রুবজ্যোতি সাহা। পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে লাগাতার আন্দোলনে থেকেছে ডিওয়াইএফআই।
এদিন জঙ্গিপুর আদালতে সরকারি আইনজীবি বিভাস চ্যাটার্জি জানান,‘‘আদালত দুই ধৃতকেই দোষী সাব্যস্ত করেছ। তিনি জানান, ফুল তুলতে পছন্দ করতেন ওই শিশু। ফুলের লোভ দেখিয়ে ওই শিশুকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল দীনবন্ধু হালদার। এক মহিলা শিশুকে বাড়িতে ঢুকতে দেখেন। এপর প্রতিবেশী শুভজিৎ হালদারকে ডেকে আনে সে। দুজন মিলেই শিশুর মুখে কাপড় চাপা দিয়ে নির্যাতন, ধর্ষণ করে। দেহ বস্তায় ঢুকিয়ে রেখে দেয় আলনায়।’’ সরকারি আইজনীবী আরও জানান, ‘‘পোস্ট মর্টেমে বহু আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নৃসংশ অত্যাচার চালানো হয়েছিল। দীনবন্ধু হালদারকে ঘটনার দিনই গ্রেপ্তার করা হয়। পরে গ্রেপ্তার করা হয় শুভজিৎ হালদারকে। শুক্রবার দোষীদের সাজা ঘোষণা হবে।’’
ডিওয়াইএফআই মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক সন্দীপন দাস বলেছেন,‘‘শিশুর মায়ের অদম্য জেদ। পরিবারের বিচারের দাবির কাছে হার মেনেছে পুলিশের তথ্য প্রমাণ লোপাটের প্রচেষ্টা। ধর্ষণ আড়াল করে অপরাধীদের অক্সিজেন জোগাতে চেয়েছিল পুলিশ। ডিওয়াইে আই, এসএফআই, মহিলা সমিতির কর্মীরা রাস্তায় থেকে লড়াই করেই বিচার আদায় করে নিয়েছে।’’

Comments :0

Login to leave a comment