ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ। এদিন দুপুর ১২টা থেকে মাধ্যমিকের ইংরেজি পরীক্ষা শুরু হয়। প্রায় একই সময়ে একটি ইংরেজি প্রশ্নপত্রের তিনটি পাতার ছবি ভাইরাল হতে শুরু করে। একটি ছবি অনুযায়ী, প্রশ্নপত্রের ১০ নম্বর পৃষ্ঠায় ভয়েস চেঞ্জ, ইনডায়রেক্ট স্পিচ এবং সিম্পেল সেন্টেন্স'র ৩টি এবং ফ্রেজাল ভার্বের ৩টি প্রশ্ন রয়েছে। একই পৃষ্ঠার ছয় নম্বর প্রশ্নে চারটি শব্দ দেওয়া রয়েছে। শব্দগুলি হল ‘লস’, ‘আনপ্রোটেক্টেড’, ‘আ পারসন হু মুভস ফ্রম ওয়ান প্লেস টু আনাদার’ এবং ‘ওয়ার্ক’। প্রশ্নপত্রের ছয় নম্বরে একটি কম্প্রিহেনশন রয়েছে। সেখান থেকে এই শব্দগুলির মানে খুঁজতে বলা হয়েছে পরীক্ষার্থীদের।
একইভাবে প্রশ্নপত্রের দুইয়ের পাতায় গান্ধীজী সংক্রান্ত একটি কম্প্রিহেনশন দেওয়া হয়েছে। ভাইরাল হওয়া প্রশ্নপত্র অনুযায়ী, ২ এবং ৩ এর পাতা মিলিয়ে এই প্যাসেজ থেকে মোট ৮টি পাঁচ নম্বর এবং তিন নম্বরের প্রশ্ন করা হয়েছে। এই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনও প্রকাশ করে গণশক্তি।
বেলা ৩টের সময় পরীক্ষা শেষ হয়। তখন মিলিয়ে দেখা যায় যে ওই তিনটি ছবি মাধ্যমিকের ইংরেজি প্রশ্নপত্রেরই। এই বিষয় স্পষ্ট হতেই শুরু হয় শোরগোল। এই প্রশ্নপত্র প্রথম ভাইরাল হওয়া শুরু হয় মালদা জেলা থেকে। পরবর্তীকালে রাজ্যের সর্বত্র তা ছড়িয়ে পড়ে।
শোরগোল সামাল দিতে আসরে নামে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। পর্ষদ সভাপতি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, প্রশ্ন লিক হয়নি। পরীক্ষা শুরুর দেড় ঘন্টা পরে কেউ ইচ্ছাকৃত ভাবে প্রশ্নপত্রের কয়েকটি পৃষ্ঠার ছবি ভাইরাল করে দিয়েছে। মালদা জেলা প্রশাসনকে এই বিষয়টি তদন্ত করে দেখার অনুরোধ করা হয়েছে।
পর্ষদ সভাপতি দেড়ঘন্টা পরে ছবি ভাইরাল হওয়ার তত্ত্ব দিলেও, ছবি ৩টি পরীক্ষা শুরুর আগেই ছড়াতে শুরু করে। শিক্ষক মহলের বক্তব্য, নিঃসন্দেহে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। এবং এরফলে যদি কেউ কয়েক নম্বরও বাড়তি পেয়ে যায়, তাহলে তা গোটা পরীক্ষা ব্যবস্থাকে কলুষিত করে। তাছাড়া পর্ষদ সভাপতি বলেছেন, চক্রান্ত হয়েছে। অর্থাৎ তিনি ঘুরিয়ে প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন।
তাঁদের আরও দাবি, ভেন্যু সুপারভাইজার, পরীক্ষা কেন্দ্রের হেডমাস্টার কিংবা গার্ডের দায়িত্বে থাকা শিক্ষকদের কেউই পরীক্ষা চলাকালীন মোবাইল ব্যবহার করতে পারেন না। এবং তাঁদের পক্ষে পরীক্ষা শুরুর আগে প্রশ্ন ছড়িয়ে দেওয়াও সম্ভব নয়। তাই পরীক্ষা শুরুর আগেই এই ঘটনা ঘটেছে। এবং পর্ষদ সভাপতির বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট, বিগত বছরগুলির মতো এই বছরও মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে পর্ষদ।
Comments :0