মুখ্যমন্ত্রীর সভার জন্য মাঠ ভরাতে খালি করা হলো স্কুল। ক্লাস ছুটি দিয়ে ছাত্রছাত্রীদের আনা হলো মুখ্যমন্ত্রীর সভার মাঠে। বৃহস্পতিবার দুপুরে পাঁচলার নেতাজী সংঘের মাঠে মুখ্যমন্ত্রীর সভা প্রশাসনিক সভা ছিল। সেখান থেকে বিভিন্ন জেলার কয়েক গুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন তিনি। যদিও সেই প্রকল্পগুলি উদ্বোধন নিয়ে ইতিমধ্যেই জলঘোলা শুরু রাজনৈতিক মহলে। প্রশ্ন উঠছে প্রকল্পগুলির বাস্তবায়ন নিয়ে। এদিকে তিনি বলছেন রাজ্যের টাকা নেই। অন্যদিকে তিনি সারি সারি প্রকল্প উদ্বোধন করে গেছেন। এর আগেও বহু প্রকল্পের উদ্বোধন হলেও যা আজও বাস্তবায়ন হয়নি। এমন উদাহরন আছ বহু।
এদিন মুখ্যমন্ত্রীর সভার জন্য পাঁচলা নেতাজী সংঘের মাঠে একটি কর্পোরেট টেন্ট করা হয় আগে থেকেই। প্রথম থেকেই সভায় লোক ভরাতে হিমশিম খেতে হয় স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব ও প্রশাসনকে। হাওড়া গ্রামীন এলাকায় এই সভায় যেতে অনীহা দেখা যায় সাধারণ মানুষের মনে। তৃণমূলের পক্ষ থেকে গ্রামীন হাওড়ার বিভিন্ন জায়গায় প্রচার করতে গিয়ে মানুষের বিরুপ মন্তব্য শুনতে পায়। শেষে তারা বাড়ি বাড়ি প্রচার করে টিফিন দেওয়া হবে। গাড়িও থাকবে মোড়ে। তাতেও কিছুটা আশাহত হয়। এক প্রকার চাপে পড়েই তারা স্কুল থেকে ছাত্র নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সভার মাঠ ভরানোর সিদ্ধান্ত গ্রহন করে। সেই মোতাবেক জেলার বিভিন্ন স্কুল থেকে ছাত্রছাত্রীদের পাঁচলা নেতাজী সংঘের মাঠে আনা হয়। প্রশাসনিক স্তর থেকে স্কুল কর্তৃপক্ষকে সেই নির্দেশ দেওয়া হয়।
এমনকি কোন স্কুলকে কত ছাত্র দিতে হবে তারও নির্দেশ দেওয়া হয়। পাঁচলার নেতাজী মাঠ সংলগ্ন চারটি স্কুলকেও সেই নির্দেশ দেওয়া হয়। এদিন পাঁচলা আজিম হাই স্কুল, বেলকুলাই হাই স্কুল, পাঁচলা গার্লস হাই স্কুল ও হাকোলা উমেশ চন্দ্র হাই স্কুল সেই নির্দেশ দেওয়া হয়। জেলার অন্যান্য ব্লকের স্কুলগুলিকেও নির্দেশ দেওয়া একই ভাবে। এদিন পাঁচলা আজিম হাই স্কুল ৪০০ জন, বেলকুলাই হাই স্কুল ২০০ জন, পাঁচলা গার্লস হাই স্কুল ১০০ জন ও হাকোলা উমেশ চন্দ্র হাই স্কুল ২০০জন ছাত্রছাত্রীকে একপ্রকার পাঠাতে বাধ্য হয়। জানুয়ারী থেকে সবে মাত্র ক্লাস শুরু হয়েছে। তারপরেই ছাত্রছাত্রীদের উপর চাপ সৃষ্টি করে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় পাঠানোর নির্দেশকে দুষছেন অভিবাবকরা। দূরের স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের অভিবাবকদের অভিযোগ, খুব সকালেই ছাত্রছাত্রীদের বাসে করে পাঁচলার মাঠে নিয়ে চলে যাওয়া হয়। এদিন গরমও পড়েছিল।
সেই গরমে তিন-চার ঘন্টা একটা বদ্ধ জায়গায় বসিয়ে রাখা হয় তাদের। না ছিল পর্যাপ্ত খাবার। না ছিল জল। এমনকি তাদের বাথরুম করতেও ছাড়া হয়নি। শেষবেলায় দেওয়া হয়েছে একটি টিফিনের প্যাকেট। পাঁচলা মাঠ সংলগ্ন কয়েকটি স্কুলের অভিবাবকদের অভিযোগ, স্কুল থেকে মাঠ অনেকটা দূরে। তাদেরকে অতটা পথ পা হাঁটিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আবার একই রাস্তা দিয়ে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। অতটা পথ বাচ্চা বাচ্চা ছেলেমেয়েরা খুব কষ্ট পেয়েছে।
Comments :0