অমিত কুমার দেব- কোচবিহার
মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল দুজন শিশুসহ এক পরিবারের ৪ জনের। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ধারের নয়নজুলিতে পরে প্রাইভেট কার। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় বাবা-মা সহ দুই শিশুর। মৃত ৩৫ বর্ষীয় সঞ্জিত রায়, তাঁর স্ত্রী ৩৩ বর্ষীয় বিপাশা রায় এবং তাদের দুই শিশু সন্তান, বছর ২ এর ইভান রায় ও সাড়ে ৫ বর্ষীয় ঈশ্বেশ্বরী রায়। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে কোচবিহার ২নং ব্লকের খাপাইডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কালজানি কুড়ার পাড় এলাকায়।
এদিন তুফানগঞ্জে একটি বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ৩ মাস আগে কেনা তাঁর নতুন গাড়ি নিজেই ড্রাইভ করে বাড়ি ফিরছিলেন বানেশ্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্বদিকে অবস্থিত কাউয়ারডারা গ্রামের বাসিন্দা সঞ্জিত রায়। সাথে ছিলেন তাঁর স্ত্রী বিপাশা রায় ও তাঁর দুই সন্তান ইভান এবং ইশ্বেশ্বরী। রাত সোয়া ১১টা নাগাদ তাদের গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এই নয়নজুলিতে পড়ে যায়। গাড়ির জানালার কাঁচ বন্ধ থাকায় তারা কেউই গাড়ির বাইরে বের হতে সক্ষম হননি। ৪জনই ঢলে পড়েন মৃত্যুর কোলে।
এরপর এলাকাবাসীরা হাত লাগান উদ্ধার কাজে।খবর যায় পুন্ডিবাড়ি থানার পুলিশের কাছে। পুলিশ এবং স্থানীয় বাসিন্দারা দীর্ঘক্ষণের চেষ্টায় এই নয়নজুলি থেকে গাড়িটিকে তুলতে সক্ষম হয় এবং গাড়ির কাঁচ ভেঙে ৪জনকে উদ্ধার করা হলেও তাদের একজনকেও বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
নাটাবাড়ি বস পাড়া আপার প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক ছিলেন সঞ্জিত রায় এবং তাঁর স্ত্রী ছিলেন নাটাবাড়ির এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। দুই সন্তানকে নিয়ে সুখী গৃহকোণ ছিল তাদের। আকস্মিক ভাবে তাদের এই মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে তাদের পরিবারের পাশাপাশি গোটা এলাকায়।
রাতেই এই ৪ জনের দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় কোচবিহার এমজেএন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। এখানেই তাদেরকে মৃত বলে ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা। সোমবার তাদের দেহ ময়নাতদন্তের পর তুলে দেওয়া হবে পরিবারের হাতে বলে জানা গেছে।
এদিন এই শোকসন্তপ্ত পরিবারের সাথে দেখা করতে যান কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য। এ পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি তিনি জানান দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রাথমিক অনুমান দ্রুতগতিতে চলছিল গাড়িটি, একারণেই এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।
Comments :0