স্কুল শিক্ষা দফতরের সরকারি নির্দেশকে সরাসরি অমান্য করে নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা শুরু করার অভিযোগ উঠেছে ধূপগুড়ি ব্লকের বৈরাতিগুড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে। এর ফলে ছাত্রছাত্রীদের পাঠদানে অন্তত ৬ দিনের গুরুতর ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন অভিভাবক ও শিক্ষা সংশ্লিষ্ট মহল। প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। বিদ্যালয় পরিচালন সমিতির সভাপতিকে প্রশ্ন করা হলে তিনি দাবি করেন যে বিষয়টি তাঁর জানা নেই।
৩০ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে প্রকাশিত শিক্ষা দফতরের নির্দেশিকায় স্পষ্ট জানিয়েছিল ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির ৩য় সামষ্টিক মূল্যায়ন ১ ডিসেম্বর ২০২৫-এর আগে নেওয়া যাবে না এবং তা ১০ ডিসেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে শেষ করতে হবে। কিন্তু সমস্ত নিয়ম উপেক্ষা করে ধূপগুড়ি ব্লকের বৈরাতিগুড়ি উচ্চবিদ্যালয়ে ৩য় সামষ্টিক মূল্যায়ন শুরু করা হয়েছে ২৫ নভেম্বর থেকেই। নিয়ম বহির্ভূতভাবে পরীক্ষা নেওয়ায় ছাত্রছাত্রীদের হাতে থাকা মূল্যবান প্রস্তুতির সময় এবং ক্লাসে সরাসরি পাঠদানের সময় থেকে ৬ দিন কমে গেল। বছরের শেষ লগ্নে এসে এই দিনগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ঘটনায় অভিভাবক মহলে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়েছে। সরকারি নির্দেশ অমান্য করে কীভাবে স্কুল কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা শুরু করল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে শিক্ষামহলেও।
নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির জোনাল সম্পাদক সঞ্জয় ঘোষ এ প্রসঙ্গে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, "সরকারি নির্দেশিকায় নির্দিষ্ট তারিখ থাকা সত্ত্বেও কেন একটি স্কুল তা মানল না? এই হঠকারী সিদ্ধান্তের ফলে ছাত্রছাত্রীরা মানসিক চাপের মুখে পড়েছে এবং প্রস্তুতির পর্যাপ্ত সময় পায়নি। আমরা জানতে চাই, কোন যুক্তিতে এই নির্দেশ লঙ্ঘন হলো। ভবিষ্যতে যাতে এমন সিদ্ধান্ত ছাত্রছাত্রীদের ক্ষতির কারণ না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।”
বিদ্যালয়ের এই সিদ্ধান্তে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে অন্যতম নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর অভিভাবক ঝুমা দে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “বছরভর ক্লাস না হওয়ার অভিযোগ তো আগেই ছিল। তার উপর আবার পরীক্ষা এগিয়ে এনে বাচ্চাদের ওপর বাড়তি চাপ চাপানো হচ্ছে। আমার মেয়ে প্রস্তুতির সময়ই পেল না। আমরা অভিভাবকরা কিছু জানতেই পারিনি। এভাবে হঠাৎ পরীক্ষা নিলে বাচ্চাদেরই তো ক্ষতি হবে। স্কুল চাইলে নিয়ম মেনে ডিসেম্বরেই পরীক্ষা নিতে পারত।”
Comments :0