বইকথা
অঙ্কের ভূত কি সত্যিই আছে?
প্রদোষকুমার বাগচী
আজ তোমাদের একটা নতুন ধরনের বইয়ের কথা বলবো। বইটির নাম অঙ্কের ভূত। তোমাদের অনেকেই হয়তো অঙ্কের নামে ভূত দেখতে পাও। আমি এমন একজনের কথা বলছি সে ক্লাস সেভেনে পড়ে। নাম তার মতিলাল। মতিলাল এমনি খুব ভালো ছেলে কিন্তু অঙ্কের নামে মাথা ঘোড়ে। অঙ্কের ক্লাস শুরু হলেই শরীর গুলিয়ে আসে। মাথা ভন ভন করে। চোখে লাল নীল তারা জ্বলে। আর অঙ্কের যিনি শিক্ষক বিপদতারণ স্যার তিনি ওই মতিলালকে নিয়েই পড়েন। ব্ল্যাকবোর্ডে একটা শক্তমতো অঙ্ক লিখে বলেন, মতিলাল বাবা একটূ অঙ্কটা কষে দে। ব্যাস, বলা মাত্রই সে যেন ক্যামন হয়ে পড়ে, ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে, মাথায় পাটিগণিত আর বীজগণিতের সূত্রগুলো একসাথে জট পাকাতে থাকে। মতিলালকে দেখে স্যার বলেন, বাবা মতিলাল অঙ্কে তোর এত ভয়! একেবারে গা ঘামছে দেখি তোর। যার অঙ্কে ভয় নেই তার ভূতেও ভয় নেই। তুই তাহলে ভূতের খুব ভয় পাস নিশ্চয়ই। যা নিজের জায়গায় বসে পড়।
মতিরাম ছাড়া পেয়ে ভাবে স্যারকে একবার জিজ্ঞাসা করলেই তো হয়, আপনি ভূতে ভয় পান কিনা? এমনিতে তো শুনি সকলে বলে আপনি অঙ্কের জাহাজ। তাহলে আপনি ভূতকে নিশ্চয়ই ভয় পান না। সেটা কি সত্যই। কিন্তু কথাগুলো স্যারকে আর জিজ্ঞাসা করতে পারে না মতিলাল।
মতিলালের অঙ্কে ভয় হলে কি হবে, এমনিতে সে খুব চালাক চতুর আর দুষ্টুও। পরে একদিন স্যার কে সেই মতিলালই একবার ভূতের ভয় দেখিয়েছিল। স্যার কিন্তু সেটা টের পেয়ে গিয়েছিল যে ওটা মতিলালের কাজ। কি করে মতিলাল ভয় দেখালো আর স্যারেরই বা কি মনে হলো সেটাই আসল মজা। সেটা আমি আর বলছি না। এখন তোমরা যদি এই ‘অঙ্কের ভূত’ বইটি পড় তাহলেই বুঝতে পারবে আসল ভূতের মজা কোথায়।
তবে বইটিতে কেবল অঙ্কের ভূতেরই গল্প আছে তা নয়, আছে নানা মজার গল্প, যেমন— ঘুম নেই হরিমোহনবাবুর, তারাপদর কান্ডকারখানা, ঠাকুরদার রকমারি ভূত, ছেলেধরা, রাজামশাই ও বুড়ির গল্প, নীল পাহাড়ের দেবতা, গুমদোর জামাই, ভূতের বিয়ে, কুড়িয়ে পাওয়া ম্যাজিক ছাতা ইত্যাদি চমৎকার একগুচ্ছ গল্প। কোনটা ছেড়ে কোনটা পড়বে বইটি খুললে তোমরা আর ঠিকই করতে পারবে না। মনে হবে সব কটাই আগে পড়ে ফেলি। আর তার সঙ্গে রয়েছে মানানসই সব ছবি। প্রচ্ছদ আর অলংকরণ করেছেন অবি সরকার। এবার বইটির ঠিকানা বলে দিই।
বইটির প্রকাশক— সঞ্চিতা। প্রকাশ স্থান— পুরুলিয়া। বইটি লিখেছেন তরুণকুমার সরখেল। প্রকাশকাল —২০১৪। দাম ৫০ টাকা।
Comments :0