বইকথা
সবার প্রিয় লীলা মজুমদার
প্রদোষকুমার বাগচী
তোমাদের মনের মতো একগুচ্ছ গল্প
এতদিন তোমাদের অনেক গল্পের বই, মজার বই, অঙ্কের বইয়ের কথা বলেছি। এবারে তোমাদের একটা নতুন গল্পের বইয়ের কথা লিখব। অনেক বড় বড় লেখকের লেখা এখানে আছে যা পড়লে মন ভালো হয়, মনে প্রশ্ন জাগে, আসল নকল চিনতে সুবিধা হয়। এই বইটিতে যাঁরা লিখেছেন তাঁদের নাম তোমরা অনেকেই শুনেছো, অনেকে হয়তো সবার নাম শোননি। তোমাদের জন্য এত স্বনামধন্য লেখককে একজায়গায় জড়ো করে তাদের লেখা তোমাদের তুলে ধরেছেন যিনি তিনি আর কেউ নন, তোমাদের প্রিয় লীলা মজুমদার। আর তার সঙ্গে রয়েছেন জয়ন্ত চৌধুরী।
তোমরা যারা ক্লাস সিক্স সেভেন বা এইট নাইনে পড়ছো তাদের কাছে এই গল্পগুলি ভালো লাগবে। প্রথমে রয়েছে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের আত্মচরিত।মানুষ মারা গেলে শ্রাদ্ধ কীভাবে করা হবে তা নিয়ে এই লেখাটি তোমাদের মনে অনেক প্রশ্ন জাগিয়ে তুলবে।নানা কথা ভাবতে শেখাবে। এখানে একটি গল্প আছে কুলদারঞ্জন রায়ের। এই গল্পটিও তোমাদের ভাবনাকে নাড়া দেবে। আমরা যারা দেবতা দেবতা করি বা ভগবান ভগবান করি তাদের কাছে ব্রহ্মা বিষ্ণু মহেশ্বর সকলের বড় দেবতা। একবার ব্রহ্মা আর বিষ্ণুর ঝগড়া হলো তাদের মধ্যে কে বড় তা নিয়ে। ব্রহ্মার পক্ষে যোগ দিলেন ব্রাহ্মণগণ আর বিষ্ণুর পক্ষে বৈষ্ণবরা। শুরু হলো তুমুল যুদ্ধ। এমন যু্দ্ধ যে সৃষ্টি বুঝি ধ্বংস হয়! এই যুদ্ধে যে আগুন জ্বলেছিল তা শেষপর্যন্ত তাদের দুজনের মাঝে স্তম্ভস্বরূপ দাঁড়িয়ে মহাদেব এসে নেভালেন। ব্রহ্মা আর বিষ্ণু অবাক হলেন ঐ স্তম্ভের ক্ষমতা দেখে। তখন দুজনে ঝগড়া ছেড়ে স্তম্ভের পরিচয় পেতে ব্যস্ত হলেন। কিন্তু কেউই তার চূড়া বা গোড়া দেখতে পেলেন না আদি অনন্তহীন এই চূড়ার। শেষে ব্রহ্মা মিথ্যা কথা বলে বিষ্ণুর উপর প্রভূত্ব বিস্তার করতে চাইলেন। এতে মহাদেব খুব রেগে গেলেন। তারপর যে কি হলো তা আর বলছি না। তোমরা দেখে নিও। তবে দেবতারাও নিজের স্বার্থের জন্য যদি মানুষের মতো মিথ্যা কথা বলে তাহলে তোমাদের মনে দেবতা নিয়ে হয়তো অনেক প্রশ্ন আসবে। তবে মিথ্যা বললে যে ফল খারাপ হয় সেটা তো মহাদেব বুঝিয়ে দিয়েছিলেন ব্রহ্মাকে। আসলে এই গল্পগুলি তোমাদের ভাবনার খোরাক যোগাবে।
এই বইতে ষোলটি লেখা রয়েছে, যেমন— আত্মচরিত : দেবন্দ্রনাথ ঠাকুর, বারোইয়ারি : কালি প্রসন্ন সিংহ, সমুদ্র পথে : হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, গুজুর পাড়ার পীতাম্বর রায় : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, দেয়ালা : অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ফুলের বিবাহ : বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, কে বড় : কুলদারঞ্জন রায়, চড়ুই পাখিরা কোথায় যায় : প্রেমেন্দ্র মিত্র, রাজবন্দীর জবানবন্দী : কাজী নজরুল ইসলাম, ভীল প্রদেশ : রমেশ চন্দ্র দত্ত, আমেরিকার চিঠি : স্বামী বিবেকানন্দ ইত্যাদি আরও অনেকের লেখা এখানে রয়েছে। আর লীলা মজুমদার লিখেছেন আঁকি-বুঁকি। সব মিলিয়ে বইটি হাতে নিলেই তোমাদের মন যেমন ভালো হয়ে যাবে তেমনি অনেক কিছু বুঝতে পারবে, ভাবতেও শিখবে।
বইটি পাওয়া যাবে নিচের ঠিকানায়—
বিমলারঞ্জন প্রকাশন
৮/১সি, শ্যামাচরণ দে স্ট্রিট, কলকাতা—৭০০০৭৩।
Comments :0