CPI(M) in the CEO office

সিইও দপ্তরে সিপিআই(এম), গরমিলের চেষ্টা চালিয়েই যাচ্ছে তৃণমূল

রাজ্য কলকাতা

চেতলায় তৃণমূলের পার্টি অফিসে বসেই ফর্ম বিলি করছেন বিএলও

সময় দিচ্ছেন না জেলাশাসকরা। ভোটার তালিকা থেকে মৃতদের নাম বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রেও গাফিলতি রয়েছে। আরেকদিকে নামের বানান, বা পদবি নিয়ে সামান্য সমস্যা থাকলে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
মঙ্গলবার মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের কাছে এমন একাধিক অভিযোগ জানিয়েছে সিপিআই(এম)’র প্রতিনিধিদল। 
মঙ্গলবার সিপিআই(এম)’র একটি প্রতিনিধিদল মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করতে যান। সেই দলে ছিলেন সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শমীক লাহিড়ী, সুমিত দে, রাজ্য সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য পলাশ দাস ও কল্লোল মজুমদার। 
বৈঠকে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে সিপিআই(এম)’র তরফে বলা হয়েছে যে রাজ্যের একাধিক জেলার জেলাশাসকরা সময় দিচ্ছেন না। 
উল্লেখ্য, জেলাস্তরে জেলাশাসকরাই নির্বাচন কমিশনের আধিকারিক হিসেবে কাজ করছেন। তবে এদিন প্রতিনিধিদল দেখা করার পর জানা গিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসকরা সময় দিয়েছেন।
সাত দিন হয়ে গেল বিএলও-রা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফর্ম বিলি করছেন। সঙ্গে থাকছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বিএলএ'রা।
গোটা কলকাতা জুড়েই একাধিক অভিযোগ উঠছে শাসকদলের বিরুদ্ধে। কোথাও বিএলও-কে প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আবার কোথাও নিয়ম ভেঙে তৃণমূলের লোকজন জড়ো হয়ে ফর্ম বিলির সময় থাকছে।
বিএলও-দের বিরুদ্ধেও একাধিক অভিযোগ করা হয়েছে ইআরও-দের কাছে। উত্তর কলকাতার শ্যামপুকুর বিধানসভা কেন্দ্রের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের সমস্ত বিএলও এবং রাজনৈতিক দলের বিএলএ-দের নিয়ে সাধারণ সভা ডাকা হয়েছিল। এখানে সিপিআই(এম)’র পক্ষ থেকে তাদের একাধিক সমস্যার কথা জানানো হয়। তৃণমূলের প্রায় ৫০ জন হাজির এই সভায়। থাকার কথা কেবল বুথ এজেন্টের। 
কলকাতার ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে মোট বুথের সংখ্যা ২৪। হিসেব অনুযায়ী তৃণমূলের ২৪ জন বিএলএ বা বুথ এজেন্টদের থাকার কথা। সভা চলাকালীন সুপারভাইজারের কাছে একাধিক প্রশ্নের উত্তর চাওয়া হয়। তখনই তৃণমূল হই হট্টগোল শুরু করে সভায়। 
ওই অঞ্চলের সিপিআই(এম) নেতা তাপস প্রামাণিক অভিযোগ করেন যে এমন সভায় কিভাবে বাড়তি লোক প্রবেশ করতে পারেন? এই বিষয়ে সুপারভাইজার নিশ্চুপ কেন? এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে সিপিআই(এম)’র সমস্ত বিএলএ সভা ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। তাঁদের স্পষ্ট বক্তব্য, বিএলও এবং বুথ এজেন্টদের এমন সভায় বাইরের কারও ঢোকা বন্ধ করতে হবে।  
ভবানীপুর বিধানসভার ৮২ নম্বর ওয়ার্ডের চেতলা এলাকায় ২৬১ নম্বর বুথের বিএলও ১৭০ প্যারীমোহন রায় রোড সংলগ্ন তৃণমূলের দপ্তরে বসে ফর্ম বিলি করছেন বলে অভিযোগ জানিয়েছে সিপিআই(এম)। ইআরও’র কাছেও দায়ের করা হয় অভিযোগ। সেই বিএলও-কে ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়। 
স্পষ্টভাবে এই বিএলও-কে বলা হয় যে সমস্ত বিএলএ-কে নিয়ে বাড়ি বাড়ি ফর্ম বিলির কাজ করতে হবে। কোনও রাজনৈতিক দলের দপ্তর থেকে ফর্ম বিলি করা যাবে না। 
৬৬ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিআই(এম)’র বিএলএ-দের কাজ করতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, বিএলও-দের প্রভাবিত করে মৃত ভোটারদের নাম রেখে দেওয়ার চেষ্টা করছে তৃণমূল।
সিপিআই(এম) কলকাতা জেলা সম্পাদক কল্লোল মজুমদার বলেন, "এসআইআর’র নামে কমিশন প্রহসন করছে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করছিলাম প্রতি বুথে অন্তত ৭০ থেকে ৮০ জন মৃত ভোটারের নাম রয়েছে। তাঁদের কারও নাম বাদ দেয়নি কমিশন। দীর্ঘ ১৪-১৫ বছর ধরে সেই নাম বাদ দেওয়া হয়নি। বর্তমানে শাসক দলের সাথে যুক্ত হয়ে বিএলও-রা অনেকক্ষেত্রে এই নাম বাদ দেওয়ার কাজ সঠিকভাবে করছেন না।"
কল্লোল মজুমদার জানিয়েছে, অনেক জায়গায় মৃত ভোটার, পদবী এবং বানান সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে অনেকের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। 
তিনি জানান যে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ আগরওয়াল তাঁদেরকে আশ্বাস দেন যে সমস্যা কাটানোর চেষ্টা করা হবে। 
সিপিআই(এম) নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন বেশ কিছু জায়গায় পার্টি পরিচালিত সহায়তা ক্যাম্প বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনাও সামনে এসেছে। শ্যামপুকুর বিধানসভায় কলকাতার ৯ নম্বর ওয়ার্ডেই এমন ঘটেছে।

Comments :0

Login to leave a comment