ধূসরবেলা
মহরম
মনীষ দেব
আশুরা — আজ মুক্তির দিন।
নীরব সম্মান জানানোর দিন — ধর্ম তোমাকে মহান করে নি — আশুরা। আশুরা তুমি মহান আত্মত্যাগের জন্য। আশুরা তোমাকে ধর্ম ছোয়নি ছুঁয়েছে মানুষ হৃদয় দিয়ে ভালবাসা দিয়ে। কারবালার প্রান্তর ছুঁয়ে তুমি অমর হোসেন — সেদিন হিজরি মহরম মাসের তারিখ ১০ আশুরা – মরুপ্রান্তরে অবরুদ্ধ তৃষ্ণার্থ এক মৃত্যুর স্বরলিপি লিখে গেছে। ধর্ম তুমি ছুঁয়োনা — মানুষ ছুঁয়েছে মহরম — 'যুদ্ধ' তুমি নিষিদ্ধ আজ — আজ আশুরা।
'চন্দ্র' মাস মেনে নববর্ষ আসে, হিজরি নববর্ষ প্রথম মহরমের মাস দেয়ালের গায়ে দিনলিপি বদলায়, দিন বদলায় না! তাই আশুরার দিন মেলায় যাবে না' রুবেনা, রাজিবুলের লাশ ছুঁয়ে কথা দিয়ে ছিল, না মহরমের মেলার মাঠে আসেনি রুবেনা, যেখানে রাজিবুলের লাশ পড়ে ছিল। এ এক অন্য কারবালা — এক অন্য শহীদের মাঠ। হয়তো মৃত্যু ঠেলেই ফিরবে জীবন — স্বপ্ন বুকে, বাম পথে ফিরবে গ্রাম।
নান খাটাই খাওয়া হয়নি, মেলা থেকে কেনা হয়নি রঙিন ঢোল-টুমটুমি। রাজিবুল তোমার তাজিয়া শিবিকাতে বইবে না কেউ। গাইবে না কেউ মার্সিয়া। তোমার জন্য মাতম করতে হবে না আর, তোমার ওপর মাতম দেখেছে বাংলা। হরেকরকম পতাকায় যখন ঢেকে যাবে মাজার। তখন রাজবুল তোমার প্রিয় কলমিলতায় ডাল - গরম ভাত আর শাপলার ভেলা ভাজায় পাত পেড়ে দেবে রুবেনা — দুঃখিনী মায়ের কার্তিক - আবু - হাসমতদের। এ এক অন্য মহরম — অন্য আশুরা। রাজিবুল, হৃদয়ে তোমার ভালবাসার নিশান উড়িয়ে — বুকের গভীরে তোমার তাজিয়া বয়ে নিয়ে যাবে রুবেনা — হৃদয়ের সব কটা জানালা খুলে।
Comments :0