বিরল কালো চিতাবাঘের সংখ্যা ও তাদের গতিবিধি জানতে আরও ট্র্যাপ ক্যামেরা বসতে চলেছে পাহাড়ে। পাশাপাশি এই ট্র্যাপ ক্যামেরার মাধ্যমে কালো চিতাবাঘের সংরক্ষণের দিকগুলিও নজরে রাখা হবে। পাহাড়ে কালো চিতাবাঘ (ম্যালানিস্টিক লেপার্ড)’র সংখ্যা সহ যাবতীয় তথ্য সম্পর্কে অবগতির জন্য কার্শিয়াঙ বনদপ্তরের পক্ষ থেকে ট্র্যাপ ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গত কয়েক বছর পাহাড়ের রাস্তায় মাঝেমধ্যেই রাতের অন্ধকারে কালো চিতাবাঘের দেখা মিলেছে। বিভিন্ন সময় রাতের বেলায় পাহাড়ের শুনশান রাস্তায় দেখা মেলা ওই কালো চিতাবাঘকে ব্ল্যাক প্যান্থার বলে অনেকেই অনুমান করেছেন। কিন্তু পরবর্তীতে কালো চিতাবাঘের পাহাড়ের রাস্তায় দেখা মেলার বিষয়টি বনদপ্তরের পক্ষে সুনিশ্চিত করা হয়েছে। কার্শিয়াঙ বনদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের নভেম্বরেই কার্শিয়াঙের বিভিন্ন জঙ্গল এলাকায় আন্তর্জাতিক সংস্থা, কেন্দ্রীয় বনমন্ত্রক ও রাজ্য বনদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে আরও পঞ্চাশেরও বেশী সিসি ক্যামেরা বসানো হবে। আপাতত পাহাড়ে দুটি কালো চিতাবাঘ রয়েছে বলেই বনাধিকারিক ও কর্মীদের অনুমান। তবে সেই সংখ্যা নিশ্চিত করতেই ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারির বন্দোবস্ত হয়েছে। পাহাড়ী যে সমস্ত রাস্তায় রাতের অন্ধকারে কালো চিতাবাঘ নজরে এসেছে সেই সমস্ত রাস্তায় আটটি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এছাড়াও ইতোমধ্যেই কালো চিতার গতিবিধি জানতে জেলার গ্রামীণ হোম স্টেগুলির প্রায় ৬০টি গোপন ক্যামেরা বন্দী দৃশ্যের প্রতিও নজর রাখার কাজ শুরু করেছে কার্শিয়াঙ বনবিভাগের কর্মীরা।
উল্লেখ্য গত ২০২০ সালে মিরিকের পাহাড়ী রাস্তায় প্রথম কালো চিতার দেখা মেলে। ওই বছরেই মিরিকের ওকাইতি চা বাগান লাগোয়া ৯ নম্বর ডিভিশন সংলগ্ন রাস্তা কালো চিতার পার হওয়ার দৃশ্য সকলের সামনে আসে। এরপর ২০২২সালে মানেভঞ্জন থেকে একটি কালো চিতার মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। পরবর্তীতে গত ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসের ২৪ তারিখে দার্জিলিঙের চিত্রেতে বাজারের রাস্তা পারাপার করতে দেখা যায় একটি কালো চিতাকে। ওই বছরের নভেম্বরেও মিরিকের রাস্তা কালো চিতার আনাগোনা নজরে এসেছিলো। ফের চলতি বছরের গত ৭ জুন কার্শিয়াঙ থেকে কয়েক কিমি দূরত্বের চিমনি এলাকায় কালো চিতাবাঘ দেখা যাওয়ার পরবর্তীতে কার্শিয়াঙের বাগোরার জঙ্গলে গত ১৫ অক্টোবর একটি কালো চিতাবাঘকে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। পরের দিন ১৬ অক্টোবর গিমিকে ফের কালো চিতাবাঘের অস্তিত্ব ধরা পড়ে।
রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) রাজেশ কুমার জানিয়েছেন, কালো চিতাবাঘের শরীরে ডিএনএ’র কারণে কালো রঙের মাত্রা বেশী। খুব কম দেখা পাওয়া যায়। তবে পাহাড়ের রাস্তায় বিরল কালো চিতাবাঘের ঘোরাফেরা করার ছবি একাধিকবার সামনে এসেছে। যেকারণে নজরদারি বাড়ানো ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কার্শিয়াঙ বনবিভাগের ডিএফও দেবেশ পান্ডে বলেন, পাহাড়ের বেশ কয়েকটি চা বাগান সহ চিতার বিচরনের ক্ষেত্রগুলিতে আপাতত আটটি ট্র্যাপ ক্যামেরা বসানো হয়েছে। কার্শিয়াঙের জঙ্গলে নভেম্বরে আরো বেশ কিছু ট্র্যাপ ক্যামেরা বসানো হবে।
Black Leopard
বিরল চিতাবাঘের গতিবিধি জানতে আরো ট্র্যাপ ক্যামেরা পাহাড়ে
×
Comments :0