SFI DYFI

নতুন খবর আনার বার্তায় ছাত্র-যুব উৎসবে ব্যাপক সাড়া

রাজ্য কলকাতা

‘সময় হয়েছে নতুন খবর আনার’- বর্তমানে রাজ্যে অরাজকতা চলছে। এই পরিস্থিতির বিরুদ্ধে বিকল্পের সন্ধানে 'সুকান্ত শতবর্ষ' পালন করছে ছাত্র-যুবরা। কবি সুকান্তের জন্মশতবর্ষ উদযাপন করছে এসএফআই-ডিওয়াইএফআই। শনিবার ছাত্র-যুব উৎসবের অংশ হিসবে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি থেকে সংগঠনের রাজ্য দপ্তর দীনেশ মজুমদার ভবন পর্যন্ত ম্যারাথন প্রতিযোগীতা এবং দপ্তর থেকে রামলীলা ময়দান পর্যন্ত বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করে দুই সংগঠন। উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট পরিচালক কমলেশ্বর মুখার্জি। উপস্থিত ছিলেন দীপালি ভট্টাচার্য, অভিনেতা বাদশা মৈত্র, শিল্পী মনীষ দেব এবং রাজ্যের ছাত্র-যুব নেতৃবৃন্দ। 
বর্তমান রাজ্য সরকারের সময়কালে সরকারি শিক্ষাব্যবস্থা সংকটে, কাজ নেই, বাড়ছে পরিয়ায়ী শ্রমিক। নিয়োগে দুর্নীতির পাশাপাশি সমস্ত জায়গায় চলছে দুর্নীতি-দুষ্কৃতী চক্র। দেশের সরকার মানুষের মধ্যে বিভাজন তৈরি করছে। এই পরিস্থিতিকে প্রতিহত করতে নতুন প্রজন্মকেই রুখে দাঁড়াতে হয়েছে বারংবার। কবি সুকান্ত সেই ভাবনাকেই শান দিচ্ছে ছাত্র-যুবরা। তাই তাঁর জন্ম শতবার্ষিকীতে তাঁকে স্মরণ করে নানান কর্মসূচী এবং প্রতিযোগীতার আয়োজন করেছে এসএফআই-ডিওয়াইএফআই। গত ১৬ আগষ্ট সূচনা হয়েছিল রাজ্যের প্রত্যেক শাখায় ছাত্র-যুব উৎসব। তারপর রাজ্যের ৬৬০ আঞ্চলিক স্তরে নানা প্রতিযোগীতা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে পালিত হয়েছে অনুষ্ঠান। শনিবার এবং রবিবার সেই কর্মসূচীর শেষাংশ অনুষ্ঠিত হবে। দুদিন ব্যাপি রাজ্য দপ্তর দীনেশ মজুমদার ভবনে এবং রামলীলা ময়দানে আবৃত্তি থেকে শুরু করে  ক্যারাম-দাবা-ক্যারাটে-বিতর্কসভা সহ একাধিক প্রতিযোগীতামূলক অনুষ্ঠান চলবে। 


এদিন, সকাল ৬টায় জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি থেকে দীনেশ মজুমদার ভবন পর্যন্ত ম্যারাথন হয়। পরে সকাল ১১ টায় দীনেশ মজুমদার ভবন  থেকে রামলীলা ময়দান পর্যন্ত শোভাযাত্রার হয়। শোভাযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন ডিওয়াইএফআই রাজ্য সম্পাদক ধ্রুবজ্যোতি সাহা, এসএফআই রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে সহ সংগঠনের রাজ্য ও জেলা স্তরের নেতৃত্বরা। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে পতাকা উত্তোলন করেন এসএফআই এর রাজ্য সভাপতি প্রণয় কার্য্যী এবং ডিওয়াইএফআই রাজ্য সভাপতি অয়নাংশু সরকার। অনুষ্ঠান মঞ্চে কমলেশ্ব মুখার্জী বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, ‘‘আজকের দিনে সামাজিক বোধের অবমূল্যায়ণ এবং বিজ্ঞাণকে অস্বীকার করা হচ্ছে, কুসংস্কারকে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা করা হচ্ছে। ধর্ম ও সম্প্রদায়ের ভিত্তিতে, জাতপাতের ভিত্তিতে, লিঙ্গের ভিত্তিতে মানুষের মধ্যে বিভাজন তৈরির চেষ্টা চলছে। আমাদের বেঁচে থাকাও সংকটে, এমন অনৈতিক পরিস্থিতি তৈরী করা হচ্ছে। সর্বোপরি এক অরাজক পরিবেশ তৈরী হয়েছে। বর্তমান এই সময়ের সঙ্গে অনেকটা মিল কবি সুকান্তের সময়ের সঙ্গে। আর এই সময়েই পরিবর্তন আসে। যাঁদের বিরুদ্ধে এইসমস্ত চক্রান্ত হয়, রুখে দাঁড়ায় সেই খেটে খাওয়া মানুষেরা। আর তাঁদের সংগ্রামে সামিল হয় নতুন প্রজন্ম। যেমন দাঁড়িয়েছিল কবি সুকান্তের সময়ে। আমরা চাই এই বাংলার রাস্তায় আবার আঠারো আসুক নেমে। ছাত্র-যুবদের এমন উৎসব মানুষের সঙ্গে মেলামেশার উৎসব। সমাজ বদলে এর গুরুত্ব অনেক। ’’
এদিন শোভাযাত্রার পর দীনেশ মজুমদার ভবনে দাবা প্রতিযোগীতা হয়। দুপুরে রামলীলা ময়দানে  ক্যারাম, ক্যারাটে এবং ব্যায়াম প্রতিযোগীতা হয়। তারপর নাটক- তাৎক্ষণিক বক্তৃতা, পোষ্টার ও দেওয়াল লিখন প্রতিযোগীতা। বিকেলে রামলীলা ময়দানে বিতর্ক- যেমন খুশি সাজো এবং ক্যুইজ কম্পিটিশন হয়। রবিবার সকাল থেকেই দীনেশ মজুমদার ভবনে আবৃত্তি প্রতিযোগীতা দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচণা হবে। রামলীলা ময়দানে  রবীন্দ্র সঙ্গীত, নজরুল গীতি, গণসংগীত, হিন্দি গান, উর্দু গানের এবং বসে আঁকো ও নৃত্য প্রতিযোগীতা রয়েছে। সবশেষে বিকালবেলা প্রবন্ধ ও তথ্যচিত্র প্রতিযোগিতার ফলাফল ঘোষণা ও পুরস্কার বিতরণ করে ‘সুকান্ত শতবর্ষ ছাত্র-যুব উৎসব’এর সমাপ্তি ঘোষণা হবে।

Comments :0

Login to leave a comment