College Student Raped

কলেজ ছাত্রীকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ

রাজ্য

College Student Raped

অনিল কুন্ডু 

এক কলেজ ছাত্রীকে জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল কংগ্রেস আশ্রিত দুস্কৃতীর বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় নির্যাতিতা ওই ছাত্রী মন্দিরবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বলে জানা গেছে। তবে অভিযুক্ত ইউনুস হালদার (৪৫) ও তার সহযোগী সাহারুল হালদার (৩২) নামে ওই দুই দুস্কৃতীকে পুলিশ এখনো গ্রেপ্তার করেনি। ডায়মন্ডহারবার হাসপাতালে নির্যাতিতার মেডিকেল পরীক্ষা করা হয়েছে। ডায়মন্ডহারবার কোর্টে গোপন জবান বন্দির জন্য নির্যাতিতাকে হাজির করে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটে গত ১৪ সেপ্টেম্বর মন্দিরবাজার থানার কেচারকুড় গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়।  
অভিযোগ, প্রকাশ্য দিবালোকে একটি অটোতে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর সেকেন্দারপুরে রাস্তার ধারে একটি গোডাউন কাম রিসোর্টে নিয়ে ওই ছাত্রীকে বিবস্ত্র করে ধর্ষণ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, নির্যাতিতার নগ্ন ছবি মোবাইলে তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ারও হুমকি দিয়েছে অভিযুক্ত ওই দুস্কৃতীরা। 


ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, গত ১৪ সেপ্টেম্বর সকালে মন্দিরবাজারে ব্যাঙ্কে গিয়েছিলেন ১৯ বছরের ওই ছাত্রী। সেখানে কাজ শেষে শংকরপুরে একটি অনুষ্ঠান বাড়িতে আসার জন্য তাঁর প্রেমিককে ফোনে জানায়। এরপর ওইখানে তাঁরা দু‘জনে বসে কথা বলছিল। কিন্তু ইউনুস হালদার ও সাহারুল হালদার ওই বাড়িতে ঢুকে ওই দুই প্রেমিক, প্রেমিকাকে জোর করে অটোতে তুলে নিয়ে যায়। সেকেন্দারপুরে ইউনুস হালদারের গোডাউন কাম রিসোর্টে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে একটি দোতলা বাড়ির ছাদের চিলেকোঠায় ওই দু‘জনকে আটকে রাখা হয়। কিছুক্ষণ পরে ইউনুস হালদার ও সাহারুল হালদার আসে এবং সেখান থেকে ওই নির্যাতিতার প্রেমিককে বের করে বাড়ির নীচে একটি ঘরে আটকে রাখে। তারপর তারা ওই ছাত্রীকে মারধর করে। সাহারুল হালদার প্রথমে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করে। প্রবল বাধা দিয়ে নিজেকে রক্ষা করে ওই ছাত্রী। ধর্ষণ করতে না পেরে সাহারুল হালদার নীচে নেমে ইউনুস হালদারের সঙ্গে শলাপরামর্শ করে প্রেমিকের কাছে মুক্তিপণ হিসাবে ২০ হাজার টাকা দাবি করে বলে অভিযোগ। মুক্তিপণ না দিলে নির্যাতিতার প্রেমিককে খুন করার হুমকি দেয় তারা। ভয় পেয়ে নিজের জীবন বাঁচাতে প্রেমিক বাধ্য হয়ে এক অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির ফোনে ১০ হাজার টাকা অনলাইনে পাঠায়। নির্যাতিতার অভিযোগ, এরপর ইউনুস হালদার তাঁর কাছে গিয়ে জামা-কাপড় খুলতে বাধ্য করে। বিবস্ত্র হওয়ার পর তাঁকে ইউনুস হালদার ধর্ষণ করে। তাঁর আরো অভিযোগ, বিবস্ত্র অবস্থায় মোবাইলে ছবি তোলে এবং হুমকি দিয়ে বলে যে, এই ঘটনার কথা কাউকে জানালে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবিগুলি দিয়ে দেবে। দু‘জনকে প্রাণে মেরে দেবে। এরপর সেখান থেকে আমাদের দুজনকে বের করে দেয়। 


এদিকে এই ঘটনার পর নির্যাতিতা ওই ছাত্রী বাড়ি ফিরে কিছু না বললেও ওই দিন রাতে বাড়ির লোকজনের কাছে সব ঘটনার কথা জানায়। গত ১৫ সেপ্টেম্বর স্থানীয় মন্দিরবাজার থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে কলেজের প্রথম বর্ষের ওই নির্যাতিতা ছাত্রী। 
ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির নেত্রী মৈত্রেয়ী রায়। রবিবার এবিষয়ে তিনি বলেন, তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে রাজ্যে জঙ্গলের রাজত্ব চলছে। মহিলাদের কোন নিরাপত্তা নেই। দুস্কৃতীরা মনে করছে রাজ্যে তাদের সরকার চলছে। প্রকাশ্যে জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের ঘটনা প্রমাণ করছে আইনের কোন শাসন নেই। অবিলম্বে অভিযুক্ত দুস্কৃতীদের গ্রেপ্তার করা না হলে থানা ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারী দেন তিনি।

Comments :0

Login to leave a comment