RAJA RAMMOHUN — MANISH DEB

ধূসরবেলা — রাজা রামমোহন / মনীষ দেব

সাহিত্যের পাতা

RAJA RAMMOHUN BY  MANISH DEB

রাজা রামমোহন

মনীষ দেব

 


 

কথা দিচ্ছি – রামমোহন, তোমার অলকামঞ্জরীর সতীদাহর লাঙ্গুলপাড়ায় যাব। তোমার বৌঠানের কান্না শুনতে যাব – রামমোহন। বাতাস কি এখনও কাঁদে – অলকামঞ্জরী ? – গাঁয়ের ধারে লাঙ্গুলপাড়ায় ? বৌঠান তোমার পুড়ে যাওয়ার বেদীতে কী ঝড়ে পড়ে ফুল। বৃষ্টি মুখর বেলায় তোমার সতী বেদী ভিজে যে বৃষ্টিরা গড়িয়ে পড়ে সে কী তোমার কান্না বৌঠান ? যে বেদীমূলে পুড়ে গেছো অলকামঞ্জরী বৌঠান — তাঁর শিয়রে জেগে আছে তোমার "রামমোহন।" এদেশের শিয়রে আজও জেগে আছে রামমোহন – তাই পুড়ে যায় না আর কোনও অলকামঞ্জরী। তাই তোমার পাড়ায় যাব বৌঠান, রামমোহনের শপথের পাড়ায় যাব।

 

 

তবু জল্লাদের উল্লাস ফিরে ফিরে আসে – তাই পুড়ে যায় মানুষ – পুড়ে যায় বিশ্বাস। যে ধূসর মলিন জীবনে – প্রজাপতির ডানার রঙ মেখে দিয়ে ছিলে – রামমোহন, ডিরোজিও, বিদ্যাসাগর, মধুসুদন – তারা সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে – জল্লাদের উল্লাসভূমিতে।

 

 

এই ধূসরবেলা'য় ফিরে এসো – ভারতপথিক। পথিকেরা পথের বাঁকে, পথ হারিয়েছে সময় – তুমি আর রাজা নও রামমোহন, যে মোগলরা তোমায় রাজা বলে ছিল, তাঁরা আর ইতিহাসে নেই। জল্লাদের বদ্ধভূমিতে রুদ্ধ মোগলরা, অবরুদ্ধ রামমোহন এবং আক্রান্ত বিদ্যাসাগর। অনলোচিত ডিরোজিও, অবহেলিত মধুসূদন — দাঁড়াও পথিকবর....।
 

 

রামমোহন —
কবে যেন, আমরা বেঁচে দিয়েছি তোমাদের নবজাগরণ, নীরবে-নিভৃতে। লজ্জা-ঘৃণা সব ত্যাগ করেছি, বিবেক বেঁচেছি নীলামে। আমরা এখন অন্ধকারের গড্ডালিকা প্রবাহে তলিয়ে যাচ্ছি — 
            আত্মসম্মানহীন
            বিবেকহীন
            ঘৃণ্য-ক্লীবের মত আমরা 
– ইতিহাস মানি না 
– বিজ্ঞান মানি না 
– দেশ মানি না 
– জাতি মানি না 
 অপরাধের ঘূর্ণিপাকে অপরাধী হয়ে বেঁচে থাকা একটা সমাজ – 
            যার একটা নবজাগরণ ছিল। 
            যার একটা রামমোহন ছিল।

 

 

Comments :0

Login to leave a comment