প্রবীর দাস
মমতা ব্যানার্জি এবং তার সরকার শেষ কথা বলবে না। শেষ কথা বলবে বাংলার মেয়েরা বাংলার মায়েরা। মঙ্গলবার স্বরূপনগরের তেঁতুলিয়ায় শহীদ নুরুল ইসলাম কলেজ প্রাঙ্গণ, হাসনাবাদ, দেগঙ্গার চৌরাসিয়া ও দত্তপুকুরের সভা থেকে এমনই হুঁশিয়ারি দেন ডিওয়াইএফআই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সম্পাদক মিনাক্ষী মুখার্জি।
এদিন বিকালে এসএফআই,ডিওয়াইএফআই এবং সারাভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির আহ্বানে আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত মহিলা চিকিৎসকের উপর পাশবিক নির্যাতন ও খুনে জড়িত দোষী এবং আড়ালকারীদের শাস্তির দাবিতে আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর শিয়ালদহ স্টেশন থেকে মিছিল উপলক্ষে জেলা জুড়ে অসংখ্য সভা মিছিল হয়। ‘‘দাবি এখন একটাই, আমার দিদির বিচার চাই’’। এই স্লোগান তুলে তেঁতুলিয়া হাইস্কুল সংলগ্ন খাদ্য আন্দোলনে শহীদ নুরুল ইসলামের সমাধিস্থল থেকে এদিন বিকালে মিছিল শুরু হয়। মিছিলের শুরুতে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে রাখেন গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতা হামাল উদ্দিন আহমেদ। আশ্বিনের মেঘলা বিকালে ঝিরঝিরে বৃষ্টি উপেক্ষা করে মিছিল শুরু হয়। একরত্তিরা হাতে জাস্টিস ফর আরজি কর, আমি বড় হচ্ছি আমার নিরাপত্তা কোথায়, তিলোত্তমার বিচার চাই, রাজপথ ছাড়ি নাই লেখা প্লাকার্ড নিয়ে পা মেলায় মিছিলে। সর্বভারতীয় ছাত্র নেতা সৃজন ভট্টাচার্য, ডিওয়াইএফআই উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি সফিকুল সরদার, মহিলা নেত্রী যশোধরা বাগচী সহ অন্যান্য ছাত্র যুব মহিলা নেতৃবৃন্দ তারাও মিছিলের অগ্রভাগে থেকে মিছিলকে নেতৃত্ব দেয়। মিছিল এসে শেষ হয় শহীদ নুরুল ইসলাম কলেজ প্রাঙ্গণে। সেখানে সভা হয়। সভাপতিত্ব করেন যুবনেতা সরিফুল ইসলাম। সভায় মিনাক্ষী মুখার্জি ছাড়াও বক্তব্য রাখেন ছাত্র নেতা সৃজন ভট্টাচার্য, যুবনেতা সফিকুল সরদার, ছাত্র নেত্রী
সোনালী মজুমদার ও সারাভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভানেত্রী যশোধরা বাগচী।
আমার দিদির বিচার চাই দাবিতে মিছিল স্বরূপনগরে।
সভাগুলি থেকে মিনাক্ষী মুখার্জি বলেন, বাংলার মেয়েরা, বাংলার মায়েরা ভালো নেই। বড় দুঃখে, বড় কষ্টে, বড় বেদনায়, বড় শোকে আছে বাংলার মায়েরা বাংলার মেয়েরা। তাই আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর আরজি করের তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের বিচারের দাবিতে দুপুর ১টায় শিয়ালদহ স্টেশন থেকে মিছিল হবে। সেই মিছিলে আপনারা আসুন। আমরা অপেক্ষায় থাকবো। বাংলার মেয়েদের মানুষ হিসাবে বাঁচার অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত করতে এই অমানবিক সরকারকে ফের একবার জোড়সে ধাক্কা দেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। আর জি কর প্রসঙ্গ টেনে এনে মিনাক্ষী মুখার্জি বলেন, নিন্দুকেরা বলছে আমরা ছাত্র যুব মহিলারা না কি আর জি কর নিয়ে রাজনীতি করছি। আরজি করের তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন যারা করলো, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে রাস্তায় নেমে মিছিল মিটিং অবস্থান করাকে যদি রাজনীতি মনে হয় তবে হ্যাঁ, আমরা রাজনীতিই করছি। নির্যাতিতা তরুণীর মৃতদেহ হুড়মুড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় ছাত্র যুব মহিলাদের আটকে দেওয়া যদি রাজনীতি হয় হ্যা, আমরা রাজনীতি করছি। গত ৮ আগস্ট তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ খুনের ঘটনা সহ আরজি করে ঘটে যাওয়া ঘটনার নানান পরাম্পরা তুলে ধরে মিনাক্ষী মুখার্জি বলেন, দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত আমাদের লড়াই চলবে।
এদিন জেলা জুড়ে বেশ কয়েকটি সভা হয় ছাত্র যুব মহিলাদের ডাকে। সভাগুলি থেকে আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর শিয়ালদহ স্টেশন থেকে দুপুর ১ টায় আর জি করের নির্যাতিতার বিচারের দাবিতে যে মিছিল হবে সেই মিছিলে আসার আহ্বান জানান ছাত্র যুব মহিলা নেতৃবৃন্দ। এদিন স্বরূপনগরের তেঁতুলিয়ার সভা থেকে সৃজন ভট্টাচার্য বলেন, এই আন্দোলন চালিয়ে নিয়ে যেতে হবে। উৎসব হবে পুজা হবে এবং যেকোন ধর্মীয় অনুষ্ঠান হবে। সমান্তরালভাবে আন্দোলনও চলবে। সারদা, নারদা রোজভ্যালি কেলেঙ্কারি দেখেছি। বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ তৃণমূলের নেতাদের টাকা নিতেও দেখেছি। ১৩ বছর ধরে চুরি দুর্নীতি, রাহাজানি সহ অনেক অন্যায় দেখেছি। শুধু আরজি কর নয় সমস্ত অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলবে। আর জি কর নিয়ে সাধারণ মানুষ রাস্তায়। আমরা বামপন্থীরা তাদের পাশে আছি।
Comments :0