উৎপল মজুমদার- মালদহ
এখনও বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে মালদা জেলার বন্যা পরিস্থিতি। বন্যায় ফের দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে মালদহের মানিকচকে। এই বছর এখনও পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে যার মধ্যে রয়েছে দুই শিশুও। মৃতদের নাম পরিমল মন্ডল(২১) ও বঙ্কিম মন্ডল(১৮)। বাড়ি ভুতনীর শঙ্করটোলায়। স্থানীয় সূত্রে পাওয়া খবরের বিবরণে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুই ভাই একটি টিনের নৌকা করে জমি থেকে পাট কেটে যখন বাড়ি ফিরছিল। তখন হঠাৎই ঝড় বৃষ্টি শুরু হলে তাদের নৌকা উল্টে যায়। দুই ভাই সহ নৌকা নদীতে তলিয়ে যায়। খবর পেয়ে এলাকার লোক ওদের খোঁজাখুঁজি শুরু করে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এদের মৃতদেহ উদ্ধার করা যায়নি। এদিন সন্ধ্যায় বর্ষণমুখর মালদহের চাঁচলের চন্ডীগাছি এলাকায় একটি পুরানো বটগাছের ডাল ভেঙে একটি বাড়িতে পড়লে অপু দাস নামে বছর ৩২ এর যুবকের ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয়।
বর্ষায় মালদহের নদী তীরবর্তী মানুষ বন্যা ও ভাঙনের আতঙ্কে থাকেন। বিশেষত, রতুয়া-১ ব্লক, মানিকচক এবং কালিয়াচক-২ ও ৩ ব্লকের নদী তীরবর্তী মানুষেরা ঘরবাড়ি ছেড়ে অস্থায়ী আস্তানায় চলে যেতে বাধ্য হন সর্বস্বান্ত হয়ে। শুধু বাড়িঘর নয়, চাষের জমি, সরকারি সম্পত্তি রাস্তাঘাট— এমনকি অনেক জায়গায় স্কুলবাড়িও নদীগর্ভে তলিয়ে যায়। অথচ ভাঙন রোধে কোনও স্থায়ী ব্যবস্থাই নিচ্ছে না কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার।
ভূতনী চরের তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার লক্ষাধিক মানুষের জনজীবন বিধ্বস্ত ও বিপর্যস্ত। নানাবিধ সমস্যার মধ্যে তারা দিন কাটাচ্ছেন। ভূতনীর দক্ষিণ চণ্ডীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গুমানিটোলায় ইরফাজ মিঞা নামে তেরো মাসের এক শিশু সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামতে গিয়ে তলিয়ে যায়। মৃত্যু হয় তার। উত্তর চণ্ডীপুরের ভীমটোলায় দু’বছরের চন্দ্রভানু মণ্ডলের মৃত্যু হয়েছে ঘরের সামনেই বন্যার জলে ডুবে। এদিকে আবার এদিন ফরাক্কা ব্যারেজের সবকটি গেট খুলে দেওয়ার কারণে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে কালিয়াচক ব্লকের তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা। জলের তলায় ঘর-বাড়ি-জমি বাগান সব। ফুলহরের জল ঢুকে গিয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর ব্লকের কিছু অংশেও। এখনো বিপজ্জনক মালদা জেলার বন্যা পরিস্থিতি তবে, সরকারি ত্রাণ ব্যবস্থাও অপ্রতুল।
Comments :0