HAM RADIO

হারিয়ে যাওয়া অঙ্কের শিক্ষক ফিরলেন উত্তর প্রদেশের গ্রামে

রাজ্য

পেট্রাপোল থানায় পরিজনদের সঙ্গে অমিত কুমার।

পেট্রাপোল সীমান্ত থেকে পাওয়া গেল ঔরঙ্গাবাদের অঙ্কের শিক্ষককে। হারিয়ে যাওয়া এই যুবক অমিত কুমারের সঙ্গে পরিবারের যোগাযোগ হলো হ্যম রেডিওর তৎপরতায়।  
ঔরঙ্গাবাদের এই বারগো গ্রামের খুবই জনপ্রিয় ও মেধাবী  যুবক অমিত। অঙ্ক করাতেন। চাকরী না পেয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ছিলেন। খোঁজ মেলেনি তাঁর বহুদিন।
এদিকে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে পেট্রাপোলে টানটান উত্তেজনা। তার মধ্যে দেখা মিলল শিরীষ গাছের আড়ালে আবডালে বাঁধের ওপর ভাঙা গাছের ডাল দিয়ে ভেজা মাটিতে অঙ্ক করে চলেছেন এক যুবক। এলাকার মানুষ প্রশ্ন করলে হিন্দিতে বলছেন, আপনাদের কোনও অসুবিধা হচ্ছে? আমায় ছেড়ে দিন। আমায় অঙ্কের সমাধান খুঁজতে হবে।
পাড়ার এক যুবক বিষয়টি পেট্রাপোল থানায় উৎপল দাসকে জানান। তাঁর নির্দেশে হ্যাম রেডিওর ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাবের কাছে খবর আসে পরিমল রায়ের মাধ্যমে। হ্যাম রেডিওর ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাবের সম্পাদক অম্বরীষ নাগ বিশ্বাস
বলেছেন, ‘‘ওই যুবকের সঙ্গে কথা বলতে গেলে আমাকেও অঙ্কের প্রশ্ন করেন ।  কথায় কথায় পঞ্চায়েত প্রধানের নাম পেয়ে যাই আমরা। যুবক বলেন ঔরঙ্গবাদে ওঁর অনেক ছাত্র আছে। সেই সূত্র থেকেই আমার ওর এলাকাতে পৌঁছে যাই।’’
হ্যাম রেডিওর কর্মীরা জানাচ্ছেন খুবই জনপ্রিয় অঙ্কের শিক্ষক ছিলেন অমিত কুমার। বারগো গ্রামে খবর পেয়ে বাবা গামা প্রসাদ সহ আত্মীয় স্বজন পাড়া প্রতিবেশীরা গাড়ি নিয়ে হাজির। ওই যুবক তাঁর এলাকায় ১৫ টি গ্রামের ৩১২ জন ছাত্রছাত্রীকে বিনা পয়সায় অঙ্ক করায়, এক-দুই বছর নয় , ১৪ বছর ধরে । শুধু তাই নয়, যাঁরা পঞ্চায়েতে জন খাটেন, তাঁদেরও সকলকে লেখা শেখানো ও অঙ্ক করাতেন অমিত। 
রবিবার পেট্রাপোল থানাতে আইসি উৎপল দাসের উপস্থিতিতে হ্যাম রেডিও ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাবের সদস্য রুদ্রপ্রসাদ ঘোষ এবং স্থানীয় সমাজ সেবী যুবক কল্যাণ বিশ্বাস উত্তর প্রদেশ থেকে আসা ৭ সদস্যকে কাছে মিষ্টিমুখ করিয়ে মেধাবী ছেলেকে বাবার কাছে তুলে দেন। 
অমিত যাওয়ার সময় শুধু বলে যান, "আপ লোগোকা আগার মাথ মে কই তাকলিব হো তো মেরা পাশ আনা " । মানে, অঙ্কে মুশকিল হলে আমার কাছে আসবেন।

Comments :0

Login to leave a comment