দেশের প্রধানমন্ত্রী নয় আরএসএসের একনিষ্ট কর্মীর মতো বক্তব্য রাখলেন নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার অযোধ্যার রাম মন্দিরের পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা ছিলেন তিনি। এছাড়া ছিলেন আরএসএস প্রধান মোহন ভগবত এবং উত্তর প্রদেশের রাজ্যপাল আনন্দিবেন পেটল মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
মোদী বলেন, দাসত্বের মানসিকতা থেকে মুক্ত হতে হবে ভারতকে। প্রধানমন্ত্রী যখন দেশকে দাসত্বের মানসিকতা থেকে মুক্ত হওয়ার কথা শেখাচ্ছেন তখন তিনি নিজে অপারেশন সিঁদুরের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপের কাছে মাথা নত করেছিলেন। মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজে দাবি করেছেন যে তার কথায় পাকিস্তান এবং ভারত সামরিক সংঘাত থামিয়েছে। ভারত পাকিস্তানের সামরিক সংঘাত থামানো নিয়ে মার্কিন হস্তক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয় বিরোধীদের পক্ষ থেকে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সাহস হয়নি সংসদে দাঁড়িয়ে বলার যে মার্কিন রাষ্ট্রপতি ভুল তথ্য দিচ্ছেন। এছাড়া ইজরায়েল যখন প্যালেস্তাইনে একের পর এক হামলা চালাচ্ছে রাষ্ট্রসঙ্ঘে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে মার্কিন চাপে সরব হয়নি ভারত।
৬ ডিসেম্বর ১৯৯২ সালে রাম জন্মভূমি আন্দোলনের নাম করে ভেঙে দেওয়া হয় বাবড়ি মসজিদ। গোটা দেশে সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়ায় আরএসএস এবং বিজেপি। পরবর্তী সময় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সেই জমিতে তৈরি হয়েছে রাম মন্দির। লোকসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে ২২ জানুয়ারি ২০২৪ সালে মন্দিরের উদ্বোধন করেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু সেই নির্বাচনে ধাক্কা খায় বিজেপি। অযোধ্যা কেন্দ্রেই পরাজিত হয় বিজেপি।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন যে শতাব্দীর ক্ষত এবং যন্ত্রণা সেরে উঠছে কারণ রাম মন্দিরের কাজ আনুষ্ঠানিক ভাবে শেষ হয়েছে। রাম মন্দিরকে কেন্দ্র করে প্রতিটা ক্ষেত্রে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থের ব্যবহার করেছে বিজেপি এবং আরএসএস। এদিনও তার কোন ব্যাতিক্রম হলো না।
পতাকা উত্তোলনের মুহুর্তটিকে "যুগান্তকারী" বলে অভিহিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে অযোধ্যা আরেকটি ঐতিহাসিক মাইলফলক প্রত্যক্ষ করছে এবং আরও যোগ করেছেন যে "সমগ্র দেশ এবং বিশ্ব রামে নিমজ্জিত।"
প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন, "আমাদের রাম বৈষম্য করেন না এবং আমরাও একই চেতনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি।" প্রধানমন্ত্রী মুখে বলছেন তিনি এবং তার দল বৈষম্য করেন না। কিন্তু দেখা গিয়েছে ধর্মের নামে, জাতের নামে মানুষের মধ্যে প্রতিদিন বিভাজন তৈরি করছেন তারা। এনডিএ সরকারের আমলে দেশে অর্থনৈতিক বৈষম্য বেড়েছে। রামের মন্দির তৈরি করে যেমন নিজের প্রচার করছেন প্রধানমন্ত্রী তেমন ভাবে গরীব মানুষের জমি, জঙ্গল আদানি, আম্বানিদের হাতে তুলে দিয়ে মানুষকে ঘর ছাড়া করছেন। প্রতিদিন দেশে বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। অথচ বিজেপির মুখে শোনা যাচ্ছে রাম রাজ্যের কথা।
Narendra Modi
দাসত্বের মানসিকতা ছাড়ার কথা মার্কিন ‘দাস’ মোদীর মুখে
×
Comments :0