বাতিল করতে হবে নয়া পেনশন প্রকল্প। ফিরিয়ে আনতে হবে পুরনো পেনশন প্রকল্পই। সারা দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এই দাবি উঠল জলপাইগুড়িতে। এখানেই শুরু হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি পেনশনার্স সমিতি, জলপাইগুড়ি জেলা শাখার ২১তম দ্বি-বার্ষিক জেলা সম্মেলন।
প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের সময় চালু হয় নতুন পেনশন প্রকল্প। শেষ বেতনের অর্ধেক পেনশনের অঙ্ক ছিল পুরনো প্রকল্পে। তা তুলে দিয়ে পেনশনের অঙ্ক অনিশ্চিত করা হয় শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের হাত ধরে। সারা দেশে চলছে প্রতিবাদ। এ রাজ্যে সে সময় বামফ্রন্ট সরকার নতুন ব্যবস্থা কার্যকর হতে দেননি। আর তৃণমূল ছিল বাজপেয়ীর মন্ত্রিসভায়।
সম্মেলনে দাবি উঠে আরও। কর্মক্ষেত্রে নারীদের সুরক্ষা, পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য প্রকল্পের সমস্যা দূর করা, শ্রমকোড বাতিলের দাবিও জানান অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা। বুধবার জলপাইগুড়ি কর্মচারী ভবনে কমরেড তপন অধিকারী মঞ্চ এবং সমীর ভট্টাচার্য নগরে অনুষ্ঠিত হয় সম্মেলন। বর্ণাঢ্য মিছিল শহরের এক বৃহৎ অংশ পরিক্রমা করে। রক্ত পতাকা উত্তোলন ও শহীদ বেদীতে মাল্যদানের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের অনুষ্ঠানিক সূচনা হয়। কাজল রায়চৌধুরী, দীনেশ বর্মন এবং অঞ্জলি চক্রবর্তীকে নিয়ে গঠিত সভাপতিমন্ডলী সমগ্র সম্মেলনটি পরিচালনা করেন।
সম্মেলন উদ্বোধন করেন রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির জলপাইগুড়ি জেলা শাখার সম্পাদক মনোজিৎ দাস। তিনি বলেন, দেশের সরকার কর্পোরেটের স্বার্থ রক্ষা করা ছাড়া সাধারণ গরিব মানুষের জন্য ন্যূনতম দায়িত্বটুকুও পালন করছে না। বরং রাষ্ট্রের প্রধান ধর্মীয় প্রধানের ভূমিকাও নিচ্ছেন। ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ, বহুত্ববাদী ঐতিহ্য ও সংবিধানের পরিপন্থী। সমস্ত রাষ্ট্রয়ত্ত সংস্থা বেসরকারিকরণের মধ্য দিয়ে সরকার শ্রমিক শ্রেণীর স্বার্থও বিঘ্নিত করছে। পাশাপাশি রাজ্যের স্বৈরাচারী, বঞ্চনাকারী সরকারের বিরুদ্ধেও লড়াই সংগ্রামকে জোরালো করতে হবে।
সাংগঠনিক বক্তব্য রাখেন অরুণা ঘোষ এবং ইন্দ্রজিৎ ঘোষ। সম্পাদকীয় প্রতিবেদন পেশ করেন সুভাষ বিশ্বাস এবং আয়ব্যয়ের হিসাব পেশ করেন সুশান্ত চৌধুরী। জবাবী ভাষণ দেন বিদায়ী জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গ রায়।
সুভাষ বিশ্বাসকে সভাপতি, গৌরাঙ্গ রায়কে সম্পাদক এবং সুশান্ত চৌধুরীকে কোষাধ্যক্ষ করে মোট ৫১ জনের জেলা কমিটি নির্বাচিত হয়। শীতের মধ্যে বৃষ্টি উপেক্ষা করেও শতাধিক প্রবীণ সদস্যরা সকাল ৯টা থেকে সম্মেলনে ছিলেন।
Comments :0