মধুসূদন চ্যাটার্জি- রানীবাঁধ
অবশেষে খাঁচায় বন্দি হল বাঘিনী জিনাত। রবিবার বিকেলে ঘুমপাড়ানি গুলি করে বাঘিনীকে বাগে আনেন প্রশিক্ষীত বন কর্মীরা। বাঘিনী জিনাত শনিবার ভোর চারটে নাগাদ পুরুলিয়ার মানবাজার ২ ব্লকের বোরো এলাকা থেকে বেরিয়ে বাঁকুড়ার রানীবাঁধ ব্লকের নারকোলির কাছে গোঁসাইডিহি গ্রামের ঝোপে আশ্রয় নেয়। পুরুলিয়ার বোরো থেকে বাঁকুড়ার ফুলবেরিয়া ধানাঢ়া হয়ে ছোট একটি নদী পেরিয়ে জিনাত বাঁকুড়ার ঢোকে। গোঁসাইডিহির ঝোপে ঢোকার পর থেকেই কার্যত বন্দি হয়ে পড়েছিল বাঘিনী। অবশেষে রবিবার বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ ঘুমপাড়ানি গুলি ছোঁড়ে বনদপ্তরের কর্মীরা। কাবু হয় বাঘিনী। কিছুক্ষণের মধ্যেই অত্যন্ত সন্তর্পনে জাল পেতে খাঁচায় বন্দি করা হয় বাঘিনী জিনাতকে। বনদপ্তর সূত্রে জানা গেছে সুস্থ রয়েছে জিনাত।
গত ১৫ নভেম্বর বাঘিনী জিনাতকে মহারাষ্ট্র থেকে ওড়িশার সিমলিপাল টাইগার রিজার্ভে আনা হয়। সিমলিপালে জঙ্গলের সীমানা ছাড়িয়ে ঝাড়খণ্ডের চাকুলিয়া রেঞ্জ ঘুরে ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ির জঙ্গলে প্রবেশ করে বাঘিনী। সেখান থেকে পুরুলিয়ার রাইকা জঙ্গলে পৌঁছে যায় বাঘিনী জিনাত। শনিবাবর ভোর চারটে নাগাদ পুরুলিয়ার জঙ্গল থেকে বাঁকুড়ার রানিবাঁধে গোঁসাইডিহির একটি ঝোপে আশ্রয় নেয়। উড়িশার সিমলিপাল এলাকা থেকে বের হয়ে ঝাড়ঘন্ড, বাংলার ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়ার বিস্তৃর্ণ এলাকা ঘুরে ধীর্ঘ আটদিন পর বাঁকুড়ার গোঁসাইডিহির ঝোপে ধরা পড়ল তিন বছরের বাঘিনী জিনাত।
মুখ্যবনপাল কুনাল ডাইভাল সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, ‘‘জিনাত ধরা পড়েছে, সুস্থ আছে। তাকে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এরাজ্যে ৮ দিন আগে বাঘিনী ঢুকেছিল। বনদপ্তর, পুলিশ ও অন্যান্য সরকারি আধিকারিক, স্থানীয় মানুষজনের ঘুম উড়ে গিয়েছিলো, চেষ্টা করা হচ্ছিল সুস্থ ভাবে একে ধরা। একাধিক জায়গায় বাঘটা আশ্রয় নিয়েছিল। বিভিন্ন টিম কাজ করছিল বাঘটিকে ধারার জন্য। অবশেষে বাঘটি আমরা ধরতে পেড়েছি। মানুষজনও হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন।’’
উল্লেখ্য, রবিবার বাঁকুড়ার রানীবাঁধের গোঁসাইডিহির জঙ্গলে ঢোকার পর থেকেই কার্যত বন্দী হয়ে পড়েছিল বাঘিনী। পুরো জঙ্গল নেট দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়। ওই দিন ও রাতে একাধিকবার ঘুমপাড়ানি গুলি ছোঁড়া হলেও কাজ হয়নি। অবশেষে রবিবাসরীয় বিকেলে বাগে আনা গেল বাঘিনীকে।
Comments :0