তপন বিশ্বাস- ইসলামপুর
শনিবার রাত নটা নাগাদ তৃণমূল কংগ্রেসের দুই নেতাকে ব্ল্যাক পয়েন্ট রেঞ্জ থেকে গুলি করে পালালো দুষ্কৃতীরা।
ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর ব্লকের মাদারীপুর এলাকায়। জানা যায় বাপি রায় ও মহম্মদ সাজ্জাদ দুই তৃণমূল নেতা মাদারীপুরে অবস্থিত একটি হোটেলে ছিলেন। অভিযোগ হঠাৎ করেই নয় থেকে দশ জনের এক দুষ্কৃতীর দল তাদের এসে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি চালায়। বাপি রায় ও সাজ্জাদের গুলি লাগে। দুজনকেই ইসলামপুর মহাকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বাপি রায়কে মৃত বলে ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় সাজ্জাদকে ভর্তি করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর এলাকার একটি লাইন হোটেলে তৃণমূল নেতৃত্ব বসে গল্প করছিলেন। সেই সময় ৯-১০ জনের একটি সশস্ত্র দল ওই হোটেলে হামলা চালায়। তারা এলোপাথারি গুলি করে। গুলি বাপি রায়ের গলায় বুকে লাগে । আততায়ী রা পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে। তাদের মুখ ঢাকা ছিল না। এলোপাথাড়ি গুলি করে তারা গাড়ি করে গা ঢাকা দেয়। এরপর দ্রুত দুইজনকে উদ্ধার করে ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সাজ্জাদ জানান, ''যারা গুলি করেছিল তাদের মুখ খোলা থাকা সত্ত্বেও তাদের চেনা যায়নি। মনে হচ্ছে তারা বহিরাগত।'' হাসপাতাল সূত্রে খবর সাজ্জাদের অবস্থা স্থিতিশীল।
ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে আছেন উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইয়ালা লাগারওয়াল, তৃণমূল ব্লক সভাপতি জাকির হোসেন সহ অন্যান্য নেতৃত্বরা। শাসকদলের নেতারা যেখানে সুরক্ষিত নয় সাধারণ মানুষের সুরক্ষা কোথায় এই প্রশ্নে তৃণমূলের জেলা সভাপতি কানাইয়া লাল আগরওয়াল বলেন, আমাদের মনে হচ্ছে শুটাররা ভাড়া করা। কি কারণে আমাদের ওই দুই কর্মীকে গুলি করা হলো তা এখনই স্পষ্ট নয়। ওই হোটেলে সিসিটিভি রয়েছে। তার ফুটেজ দেখলে স্পষ্ট হয়ে যাবে। পুলিশকে বলেছি অবিলম্বে দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। এলাকার শান্তি বজায় রাখতে যা যা করা প্রয়োজন সব ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পুলিশকে অনুরোধ করা হয়েছে।
ঘটনা প্রসঙ্গে সিপিআই(এম) ইসলামপুর ১ নম্বর এরিয়া কমিটির সম্পাদক আব্দুল করিম বলেন, ''শনিবার রাত নয়টা তৃণমূলের প্রধানের স্বামী মহম্মদ সাজ্জাদ ও পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যার স্বামী বাপি রায়কে গুলি করল দুষ্কৃতিরা। বিষয়টি সত্যি দুর্ভাগ্যজনক। তৃণমূল এলাকায় হিংসার প্রশ্রয় দেওয়ার ফল আজ আমাদের দেখতে হচ্ছে। তার মাশুল গুণতে হলো তাদের দলীয় কর্মীদেরই। এর চাইতে লজ্জার কি হতে পারে। অবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তার ও উপযুক্ত সাজার দাবি তুলছি। এলাকার আইন-শৃঙ্খলা যে ভেঙে পড়েছে সেই দাবি তুলে আমরা সোমবার জেলা পুলিশ সুপারের কাছে ডেপুটেশন দেবো।''
ইসলামপুর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থেন্ডুপ শেরপা বলেন, ঘটনাস্থলে গুলি চলে। গুলিতে একজন মারা গেছেন। ঘটনা তদন্ত শুরু হয়েছে। আশা করছি ঘটনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে যারা তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।
Comments :0