‘‘কাটমানি তুলেছে তৃণমূল আর বিজেপি সরকারে এসে সেই প্রক্রিয়াকেই আইনি স্বীকৃতি দিয়েছে। নির্বাচনী বন্ডের তোলাবাজিতে দু’দলের গাঁটছড়া বাঁধা রয়েছে।’’ শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলনে এ কথা বলেছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।
নির্বাচনী বন্ড প্রসঙ্গে সেলিম বলেন, ‘‘সিপিআই(এম) গোড়া থেকে এই লড়াই করেছে। একেবারে বিল পেশ হওয়া থেকে সংসদের ভেতরে বাইরে চলেছে লড়াই। সংসদে এই বিলের বক্তব্য রেখেছিলেন, সে সময়ে, এ রাজ্যের সাংসদ সীতারাম ইয়েচুরি। যে যে আশঙ্কা তিনি জানিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের রায়ে সেগুলিই স্বীকৃত হয়েছে।’’
সংবাদমাধ্যম প্রসঙ্গে সেলিম বলেন, ‘‘নির্বাচনী বন্ডের টাকা দিয়েই কেনা হয়েছে মিডিয়া-কে। বিজেপি এবং তৃণমূল দু’দলই সবচেয়ে সুবিধা পেয়েছে। সে জন্যই সংবাদমাধ্যম চুপ।’’
তিনি মনে করিয়েছেন ব্যবসায়িক সংস্থাগুলি, কর্পোরেট রাজনৈতিক দলকে দেওয়া টাকা উসুল করেছে জনতার ঘাড় ভেঙে। কলকাতার আরপি সঞ্জীব গোয়েঙ্কা গোষ্ঠী ২০১৯ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত ৬৬৪ কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ড কিনেছে। ৫৬৪ কোটি টাকার বন্ড কিনেছে গোষ্ঠীর পাঁচটি সংস্থা। আরও ১০০ কোটি টাকা খরচ করেছে একটি নির্বাচনী ট্রাস্টের মাধ্যমে।
সেলিম বলেন, ‘‘আমাদের পকেট থেকে এই টাকা উসুল করা হয়েছে। কলকাতা এবং রাজ্যে বিদ্যুতের দাম সবচেয়ে বেশি। এমনই হয়েছে বিভিন্ন ওষুধ সংস্থার ক্ষেত্রে। ওষুধের দাম সমানে বেড়েছে, নির্বাচনী বন্ডে এদের টাকা ঢুকেছে, সরকারি দাম নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা শিথিল হয়েছে। পরিবেশ বিধি ভেঙে স্থানীয় মানুষকে বিপর্যস্ত করে যারা প্রকল্প চালিয়েছে, বন্ডে টাকা ঢেলেছে সেই সংস্থাগুলিও।’’
উল্লেখ্য, ২০১৭’তে, সে সময়ে অর্থমন্ত্রী, অধুনা প্রয়াত অরুণ জেটলি এই বিল পেশ করেন। গোড়ার দিন থেকে সিপিআই(এম) বিরোধিত করেছে। সেলিম বলেন, ‘‘রাজ্যসভায় তখন গরিষ্ঠতা ছিল না বিজেপি’র। রাজ্যসভা যাতে আটকাতে না পারে তার জন্য নির্বাচনী বন্ডের বিলকে ‘অর্থবিল’ বলে পেশ করে বিজেপি সরকার। আমরা তারও বিরোধিতা করেছি।’’
রাজনীতি দুর্নীতিকে স্বীকৃত করার এই ব্যবস্থা প্রসঙ্গে সেলিম বলেন, ‘‘কর্পোরেট গোষ্ঠীগুলি কিনছে সাংসদ, বিধায়কদের। শুধু তা-ই নয়। প্রধানমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রীদের কর্পোরেটের ‘বন্ডেড লেবার’ বা দাসশ্রমিক করে দিচ্ছে।’’
সিপিআইএম) নির্বাচনী বন্ডে কোনও অর্থ নেয়নি। প্রশ্ন ছিল, বন্ডে অর্থ নিয়েছে এমন দলের সঙ্গে সিপিআই(এম) আসন সমঝোতা করছে কেন। সেলিম বলেন, ‘‘কোনও রাজনৈতিক রঙ দেখে আমরা দুর্নীতির বিরোধিতা করিনি।’’
উল্লেখ্য, ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চেও সিপিআই(এম) নির্বাচনী বন্ডে গোপন অস্বচ্ছ লেনদেনের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার অবস্থানই জানিয়েছে। বস্তুত বিজেপি এবং তৃণমূল কংগ্রেসের ছাড়া প্রায় সব দল সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়েছে। যে রায় এই বন্ডকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে বাতিল করে দেয়। তথ্য প্রকাশেরও নির্দেশ দেয়।
electoral bond Salim
নির্বাচনী বন্ডের তোলাবাজিতে গাঁটছড়া তৃণমূল-বিজেপি’র: সেলিম
×
Comments :0