পরপর হত্যা এবং অস্ত্র লুটের আবহে মণিপুরে শফর শুরু করছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। সোমবার পৌঁছে বুধবার পর্যন্ত উত্তর-পূর্বের হিংসা কবলিত এ রাজ্যে থাকার কথা তাঁর। শাহের সফরের ঠিক মুখে এক পুলিশ আধিকারিক সহ পাঁচ নাগরিক নিহত হয়েছেন সশস্ত্র আক্রমণে।
রবিবার মণিপুরের বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং বলেন যে চল্লিশ জন ‘সন্ত্রাসবাদীকে’ হত্যা করা হয়েছে দু’দিনে। সুরক্ষা বাহিনীর গুলিতে নিহতরা কুকি উগ্রপন্থী হিসেবে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। কিন্তু হিংসা থামেনি।
রবিবার রাতে, শাহের সফরের ঠিক মুখে, মণিপুরে অন্তত পাঁচজনের মৃত্যুর খবর এসেছে। এক বিধায়কের বাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। মণিপুর রাইফেলসের অস্ত্রাগার থেকে প্রায় ১ হাজার অস্ত্র, অন্যান্য সরঞ্জাম লুটের খবর এসেছে। আইনের শাসন কোথায়, মণিপুরে এই প্রশ্ন তুলছেন সাধারণ নাগরিকরা।
বীরেন সিংয়ের সাংবাদিক সম্মেলনের পর রাজ্যের একাধিক কুকি সংগঠন দাবি করেছে সুরক্ষাবাহিনী বহু নিরীহকে হত্যা করছে। তাতে হিংসা থামার বদলে আরও বাড়ছে। খবর মিলেছে যে মণিপুর রাইফেলসের দু’টি ঘাঁটি, খাবেইসই এবং দেউলাহলান, থেকে সব অস্ত্র লুট করা হয়েছে।
কুকি এবং মেইতেই জনগোষ্ঠীর বিবাদ হিসেবে দেখানো হলেও রাজ্যের বহু অংশই মনে করিয়েছেন যে ক্ষোভ মাথাচাড়া দিয়েছে আগেই। রাজ্যের বানঞ্চল থেকে দীর্ঘদিনের বাসিন্দা জনগোষ্ঠীগুলিকে হটিয়ে দিতে থাকে বীরেন সিং সরকার। বিজেপি সরকারের পদক্ষেপে ক্ষোভ তীব্র হয় আদিবাসী কুকিদের মধ্যে। বহু মানুষকে বাস্তুচ্যুত হতে হয়। হারাতে হয়েছে জীবিকা। এরপর মেইতেইদের আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতির দাবি সামনে আসতে বিক্ষোভ জাতিহিংসার চেহারা নিয়েছে।
সুরক্ষা বাহিনীকে উদ্ধৃত করে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, কুকি উগ্রপন্থীদের সঙ্গে টানা গুলিবিনিময় চলছে বিভিন্ন জায়গায়। চিরুণি তল্লাশিতে বাহিনী নামার পর সংঘাত তীব্রতর হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং বলেছেন, উগ্রপন্থীদের হাতে অত্যাধুনিক ‘এম সিক্সটিন’, ‘একে ফর্টিসেভেন’ রাইফেল রয়েছে। রবিবার জরুরি ভিত্তিতে তিনি বৈঠকও করেন সেনাপ্রধান মনোজ পাণ্ডে এবং ইস্টার্ন কমান্ডের সেনা কমান্ডার আরপি কলিতার সঙ্গে। সিং নিহত ‘সন্ত্রাসবাদীদের’ কুকি বলে চিহ্নিত না করলেও বলেছেন, ‘‘মেইতেই এবং কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে লড়াই হচ্ছে না। লড়াই হচ্ছে কুকি উগ্রপন্থী এবং সুরক্ষা বাহিনীর সঙ্গে। কেন্দ্র এবং রাজ্যের সুরক্ষা বাহিনী মিলিতভাবে লড়ছে।’’
Comments :0