ANAYAKATHA | KRISHANU BHATTACHAJEE | ROKEYA SAKHAWAT HOSSAIN | MUKTADHARA | 2025 DECEMBER 8 | 3rd YEAR

অন্যকথা — কৃশানু ভট্টাচার্য্য — ও আলোর পথযাত্রী — মুক্তধারা — ৮ ডিসেম্বর ২০২৫, বর্ষ ৩

নতুনপাতা/মুক্তধারা

ANAYAKATHA  KRISHANU BHATTACHAJEE  ROKEYA SAKHAWAT HOSSAIN  MUKTADHARA  2025 DECEMBER 8  3rd YEAR

অন্যকথা  


মুক্তধারা

  ---------------------------- 
  ও আলোর পথযাত্রী
  ---------------------------- 

কৃশানু ভট্টাচার্য্য

ডঙ্কা বাজছে চারিদিকে। ডঙ্কার তালে তালে হচ্ছে দুর্দমনীয় নৃত্য। এপার ওপার ভাঙছে, তুমি আমি আর এক সঙ্গে নেই- তুমি খুঁজে নাও তোমার বন্ধু ,আমি খুঁজে নেব আমার। বন্ধু খুঁজতে গিয়ে বিচারে প্রথম যে প্রশ্নটি উঠে আসবে সে হল তুমি কোন ধর্মের? সে দিন চলে গেছে, যেদিন এই বাংলায় কেউ গলা উঁচু করে বলেছিলেন, ডুবন্ত মানুষের ধর্ম জিজ্ঞাসা করার কোন প্রয়োজন নেই, তারা প্রত্যেকেই আমার ভাই। এখন এই অন্ধকারে হাতড়াতে হাতড়াতে পথ চলতে চলতে সবার আগে চিনতে হবে টিকি , টুপি , দাড়ি, কাছা। 
এই অন্ধকার সুরঙ্গের একদম শেষ প্রান্তে জ্বলছে একটা মোমবাতি। জ্বলছে বলা ভুল প্রায় নিভতে নিভতে জ্বলছে। প্রশ্ন সেই আলো পর্যন্ত আমরা পৌঁছতে পারবো তো? চিনতে পারবো তো মোমবাতি হাতে ধরা মানুষগুলোকে? যে মানুষগুলো একদিন অন্ধকারের বুক চিরে আলোর যাত্রা পথে আমাদের কে উৎসাহিত করেছিলেন। ‌ তাদের নাম? রাজা রামমোহন রায়, পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও, রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন এবং আরো অনেকে। আমাদের চারপাশে এই ধরনের আলোর পথযাত্রীর সংখ্যা কিন্তু কম নয়। অথচ চারপাশের ডংকানিনাদ  আমাদের ভুলিয়ে দিতে চাইছে এদের নাম।‌ এর পিছনে রয়েছে একটি 
দীর্ঘমেয়াদী চক্রান্ত। 
এর মধ্যে দাঁড়িয়েই আমাদের পথচলা- আমরা ওই আলোর হাতছানিতে মাতোয়ারা হয়ে এই অন্ধকারের দিন শেষ করব - এটাই শপথ। 
পথ কঠিন। কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু কলকাতা শহরের বুকে গত শতাব্দীর প্রথম তিন দশক রাজাবাজার পার্ক স্ট্রিট বেনিয়াপুকুর এর মত জায়গায় হোঁচট খেতে খেতে,  রক্তাক্ত হতে হতে আলোর শিখা পৌঁছে দিয়েছিলেন এক নারী।‌ প্রথমে ছিলেন একা, এরপর এক থেকে অনেক হয়েছিলেন। বুঝিয়ে দিয়েছিলেন নারীদের ঐক্যবদ্ধ শক্তি নাড়িয়ে দিতে পারে সমাজের অচলায়তন। মুসলিম মহিলাদের একত্রিত করে গড়ে তুলেছিলেন আনজুমানে খাওয়াতেন ই ইসলাম সংগঠন। ‌ লক্ষ্য শুধু এক হওয়া নয়, মেয়েদের উপার্জনক্ষম করে সমাজে স্বাধীনভাবে উপস্থাপিত করা। সফল হয়েছিলেন।
এ বাংলা রোকেয়ার বাংলা। ‌ তাই এই বাংলায় অন্ধকারকে ভেদ করে আলোর উৎসের দিকে ধাবিত হওয়াটাই স্বাভাবিক। আমরা জানি, এ বালুর চরে চিরকাল আমরা মাথা গুঁজে পড়ে থাকবো না। আলো জ্বলবে , আলো জ্বলবেই।

Comments :0

Login to leave a comment