বগটুইয়ে তৃণমূলের উপপ্রধানকে খুন এবং তার বদলা নিতে দশজনকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার মতো গণহত্যার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে রামপুরহাট আদালতে। গণহত্যার মামলায় সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে গত বুধ এবং মঙ্গলবার। তৃণমূলেরই এক পক্ষ হত্যা করেছিল অন্যপক্ষের পরিবার পরিজনদের।
গত বুধবার মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন স্বজনহারা পরিবারের সদস্য তথা মামলার মূল সাক্ষী মিহিলাল সেখ, বাণিরুল সেখ ও সেখলাল সেখ। এই মামলায় জেল হেপাজতে থাকা অভিযুক্তদের অধিকাংশকেই হাজির করানো হয়েছিল আদালতে। তারা যে অপরাধের সঙ্গে যুক্ত তা স্বীকার করেননি সাক্ষী তিনজনের কেউই।
আইনজীবী মহল সূত্রে জানা গেছে, মিহিলাল সেখ আদালতে দাঁড়িয়ে বলেছেন যে তিনি অভিযুক্তদের প্রতিবেশী হিসাবে চিনলেও, তারা অপরাধ সংঘটিত করেছিল কি না দেখেননি তিনি। কারণ, সেই সময় পালিয়ে গিয়েছিলেন।
স্বাভাবিকভাবেই নৃশংস হত্যালীলায় স্ত্রী, সন্তানকে হারানো মিহিলাল সেখের এমন অবস্থান বদলের পেছনে নানান সম্ভাবনা, ‘চাপ’,‘বোঝাপড়া’র তত্ত্বই খাড়া করা হয়েছে। একইভাবে মঙ্গলবার ছিল আরও তিনজনের সাক্ষ্যগ্রহণ। যার মধ্যে অন্যতম বগটুই গণহত্যায় মাকে হারানো খুশি খাতুন। তিনি আবার ঘটনাই অস্বীকার করেছেন!
অথচ এই খুশি খাতুন ঘটনার পরপরই, তাঁর পরিবারের সদস্যরা যখন হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছিলেন, তখন সংবাদ মাধ্যমের সামনে রীতিমত নাম ধরে ধরে অভিযুক্তদের পরিচয় প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার সময় সম্পূর্ণ পালটে গিয়েছে তাঁর অবস্থান।
এদিন এছাড়াও সাক্ষ্য দিয়েছেন নেকলাল সেখ। তিনিও হারিয়েছেন স্ত্রীকে। তিনিও একই পথে হেঁটেছেন বাকিদের মতই। তবে সিবিআই’র কাছে তিনি যে গোপন জবানবন্দী দিয়েছিলেন (১৬৪নং ধারায়) তা অবশ্য অস্বীকার করেননি। জবানবন্দী যে তাঁর, তা-ও অবশ্য স্পষ্ট বলেছেন আদালতে। বগটুই গণহত্যা মামলায় সাক্ষ্যদানের শুরুতেই এমন ভোলবদলে বিচারের ভবিষ্যত কী হবে স্বাভাবিকভাবেই সেই প্রশ্ন তুলেছেন সকলে। তবে সিবিআইয়ের আইনজীবী পার্থ তপস্বী বলেছেন, ‘‘অভিযুক্তরা সহজে রেহাই পাবে না। সিবিআইয়ের কাছে পর্যাপ্ত তথ্য প্রমাণ আছে। আরও অনেক সাক্ষী আছে। সংখ্যাটা ৬৬। তবে এভাবে চাপ দিয়ে, সাক্ষীদের প্রতিকূল অবস্থায় নিয়ে যাওয়া খুবই খারাপ। কেউ বলছেন ঘটনা ঘটেইনি, কেউ বলছেন অভিযুক্তদের প্রতিবেশী হিসাবে চিনলেও তারাই যে বোমা ছুঁড়েছিল এমন ঘটনা দেখেননি।’’
BOGTUI EYEWITTNESS
‘ঘটেইনি’,‘দেখিনি’!বগটুই গণহত্যায় ভোলবদল সাক্ষীদের!
×
Comments :0