প্রবীর দাস- হাড়োয়া
ভয় ভাঙছে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের রাস্তায় মানুষ। বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের বামফ্রন্ট মনোনিত জাতীয় কংগ্রেস সমর্থিত সিপিআই(এম) প্রার্থী নিরাপদ সরদারকে জয়ী করতে উচ্ছ্বাসের উত্তাপে মেজাজ এবার একটু অন্যরকম। ভোট লুট করতে দেব না। দৃপ্ত উচ্চারণের অনুরণন সোনাপুকুর শঙ্করপুর, বকজুরি,শালিপুর, কুলটিতে। বিভাজনের তাস খেলতে আসরে বিজেপি। কুলটির গ্রামে গ্রামে রামনবমী পালনে পর্দার আড়ালে আরএসএস, হিন্দুমহাসভা। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দীর্ণ তৃণমূল। ফলে বিজেপির পালে হাওয়া দিতে তৎপর মিনাখাঁর বিধায়ক ঘনিষ্ঠরা। দীর্ঘ ১৩ বছর হাড়োয়া দেখেছে সন্ত্রাস, মিথ্যা মামলা, সিপিআই(এম), কৃষকসভার কার্যালয় দখল ভাঙচুর লুটপাট, গ্রামছাড়া করা, পাট্টা ,বর্গাজমি লুট, লিজের টাকা আত্মসাতের নিদারুণ ছবি। সময়ের সাথে সাথে বদলেছে ছবিটা। হাড়োয়ার ক্যানভাসে চোখে চোখ রেখে পাল্টা হক ছিনিয়ে নিতে লড়াইয়ে প্রস্তুতি ঘরে ঘরে। এমনই এক আবহে তীব্র দাবদাহ উপেক্ষা করে গ্রামে গ্রামে প্রচারে নিরাপদ সরদার। হাড়োয়ার বিদ্যাধরী সেতু সংলগ্ন নজরনগরে তখন প্রচারের প্রস্তুতি চলছে। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য হালকা হুমকি দিয়ে বলে গেলেন প্রচার করুন কিন্তু চোর বলবেন না। মানছি কেউ কেউ অন্যায় করেছে।
সোনাপুকুর শঙ্করপুরের নজরনগর থেকে শুরু হলো পায়ে হেঁটে প্রচার। হাড়োয়া ফেরিঘাট বাজারে প্রার্থী নিরাপদ সরদার গেলে সবজি মাছ মুদি সহ অন্যান্য ব্যবসায়ীদের চোখে মুখে আনন্দের ছাপ। কেউ কেউ আনন্দাশ্রু ফেলে করমর্দন করে বললেন হাড়োয়ায় শান্তি ফেরাতে হবে আপনাকে। বছরের পর বছর ভোট দিতে না পারার যন্ত্রণা মেটাতে হবে। নিরাপদ বললেন আমরা পাশে আছি। নুসরত জাহান বলেছিলেন ডাকলেই আসবেন। আসেন নি। বরং লুটতরাজে মদত দিয়েছেন। বর্তমান হাড়োয়ার বিধায়ক হাজি নুরুল ইসলাম লোকসভার প্রার্থী হয়েছেন। সাংসদ থাকাকালীন যার হাত ধরে দেগঙ্গায় দাঙ্গার পরিবেশ তৈরি হয়েছিল সেই ক্ষত এখনো দগদগে। আমরা হাড়োয়া মিনাখাঁয় দাঙ্গা চাই না।
শনিবার মিনাখাঁ বিধানসভার হাড়োয়া থানার অধীন, শালিপুর, বকজুরি, সোনাপুকুর শঙ্করপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় সিপিআই (এম) প্রার্থী তথা কৃষক, খেতমজুর, আদিবাসী অধিকার মঞ্চের নেতা নিরাপদ সরদারের সমর্থনে প্রচার কর্মসূচি সংগঠিত হয়। প্রচারে বারবার উঠে এলো সন্দেশখালির মা বোনদের আপোষহীন লড়াইয়ের কথা। উঠে এলো মা বোনেদের সেই আন্দোলন ভেঙে দিতে রেখা পাত্রকে প্রার্থী করে বিজেপির নোংরা রাজনীতির কথা। কৃষকের ফসলের দাম না পাওয়া, খেতমজুরের মজুরি বৃদ্ধি না হওয়ার কথা। ভুল বুঝে বা মনোক্ষুন্ন হয়ে যারা চলে গেছেন তাদের ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে চোর লুটেরা, দুর্নীতিগ্রস্ত ,সন্ত্রাসবাদী তৃণমূল ও সাম্প্রদায়িক বিজেপিকে হটাতে কাঁধে কাঁধ দিয়ে লড়াই করি। কোথাও মুষ্ঠিবদ্ধ হাত কোথাও হাসি মুখে হাত তুলে উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়ে নমস্কার জানিয়েছেন পথচলতি মানুষ ঘরের বধূরা। কাঁকড়া বৈদ্যপাড়ায় জল বাতাসা নিয়ে গ্রামের মানুষ। মোড়ে মোড়ে দেখা গেল বামফ্রন্ট প্রার্থীকে মোবাইলে বন্দি করতে। খাড়ুবালা, কাঁকড়া বৈদ্যপাড়া গ্রামে প্রচারের গাড়িতে দাঁড়িয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখলেন নিরাপদ সরদার। দেশ ও সংবিধান রক্ষায় চাইলেন ভোট।
Comments :0