MANIPUR OPPOSITION PM YECHURY

মণিপুর মনে করাচ্ছে সেই গুজরাটকে, তাই কী পালাচ্ছেন মোদী? প্রশ্ন ইয়েচুরির

জাতীয়

MANIPUR OPPOSITION PM

সেভাবেই একটি অংশের ভয়াবহ তাণ্ডবকে মদত দিচ্ছে প্রশাসন। মদত দিচ্ছে পুলিশ। সেভাবেই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান একটি অংশকে ‘রক্ষা’ করতে বলছেন। বস্তুত বৈধতা দিচ্ছেন সংখ্যাগুরু অংশের হিংসাকে। 

২০০২’র গুজরাট গণহত্যার সঙ্গে তুলনায় চলে আসছে আজকের মণিপুর। সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি প্রশ্ন তুললেন, ‘‘সেজন্যই কী সংসদের মুখোমুখি হচ্ছেন না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী? যিনি ২০০২’র গণহত্যার সময় ছিলেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী।’’ 

ইয়েচুরি বলেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী সংসদে বিবৃতি দিতে রাজি হচ্ছেন না, সংসদে বিরোধীরা প্রতিবাদে মুখর। সংসদ চলছে না। মোদী সরকারকে সংসদের কাছে জবাদিহি করতে হবে।’’

মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং নিজে আদিবাসী কুকিদের অনুপ্রবেশকারী বলে এসেছেন দীর্ঘদিন। সংখ্যাগুরু মেইতেই জনগোষ্ঠীর দুষ্কৃতীবাহিনী যখন তাণ্ডব চালাচ্ছে, নীরব থেকেছে প্রশাসন। বিবস্ত্র করে হাঁটিয়ে পরে ধর্ষণের যে ঘটনাটি ছড়িয়েছে, সেখানেই আক্রান্ত কুকি পরিবারের সদস্যরা এই অভিযোগ তুলছেন। পুলিশই তাঁদের উন্মত্ত বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছিল। ৩ মে থেকে সংঘর্ষে প্রতিদিন রক্তাক্ত হয়েছে মণিপুর। কার্যকরী কোনও ব্যবস্থা নেয়নি কেন্দ্রে আসীন মোদী সরকারও। বস্তুত এই ভিডিও সামনে আসার আগে, একটি কথাও বলেননি প্রধানমন্ত্রী। অথচ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্সে গিয়ে ভাষণ দিয়েছেন মোদীই।

মণিপুরের ঘটনা ভয়াবহ। একটি বা দু’টি নয়। হঠাৎ করেও হয়নি। ৩ মে থেকে মানুষের জীবন, নারীদের সম্মান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিপন্ন। বন্ধ করে রাখতে হচ্ছে ইন্টারনেট। প্রধানমন্ত্রী কেন বিশদে বিবৃতি দেবেন না? কেন বিশদে আলোচনা করতে দিতে রাজি নয় সরকার? 

বিজেপি এবং কেন্দ্রে তাঁদের মন্ত্রীদের বক্তব্যের পালটা এমনই প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। এদিন লোকসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিরোধীদের দায়ী করেন সংসদে অচলাবস্থার জন্য। পরপর তিনদিন হয়নি বাদল অধিবেশনের কোনও আলোচনা। শাহ বলেছেন, ‘‘আমি আলোচনার জন্য তৈরি। বিরোধীরা আলোচনা করতে দিতে রাজি নয় কেন বুঝতে পারছি না।’’

সেই সুরেই লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা বলেছেন, ‘‘সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী আলোচনায় রাজি আছেন। তারপরও সংসদ চলতে না দেওয়া অনুচিত।’’ 

সরকারের বক্তব্যকে মেনে নিচ্ছেন না বিরোধীরা। কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশও সরব হয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’-র সব দলই প্রতিবাদে শামিল হয়েছে। সংসদভবনে গান্ধীমূর্তির সামনে বসেছে অবস্থানে। আসলে ভারত এবং মণিপুরের জনতার অনুভূতিই প্রকাশ করছে বিরোধীরা। প্রধানমন্ত্রী কেন বিশদে বিবৃতি দেবেন না। কোনও একটি মন্ত্রকের মন্ত্রীর বিষয় নয়, মণিপুরের অবস্থা ভয়ঙ্কর।’’ 

রমেশ বলেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আসলে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। জনতা চাইছে সংসদে বিশদে আলোচনা হোক, যন্ত্রণা প্রকাশিত হোক দেশের সংসদে। তিনি বারবার নিজের দায় অন্যের ওপর ঠেলে দেন, অন্যকে দায়ী করেন। মূল ঘটনা থেকে নজর অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেন। এই কৌশল চলবে না।’’ 

বিরোধীরা বলছেন, সংসদ পরিচালনার ২৬৭ ধারায় করতে হবে আলোচনা। সরকার বলছে, ১৭৬ ধারায় আলোচনা হলে রাজি, সেক্ষেত্রে আধ ঘন্টা মাত্র চলবে আলোচনা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বিবৃতি দেবেন। সরকারের মনোভাবের কড়া নিন্দা করেছেন রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা এবং কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খারগে। তিনি বলেছেন, ‘‘২৬৭ ধারায় বিশদে আলোচনা করা যায়, প্রয়োজনে পরের দিনও আলোচনা করা যায়। ভোট করারও সুযোগ থাকে। তাতে সরকার রাজি হবে না কেন। মণিপুরের ঘটনা অন্য কোনও কিছুর সঙ্গে তুলনা করা যায় না। সরকার পালাতে পারবে না।’’  

Comments :0

Login to leave a comment