সমুদ্রতলের তাপমাত্রা বেনজির মাত্রায় পৌঁছেছে। অন্তত তিনটি মহাদেশ জ্বলছে দাবদাহে। বিজ্ঞানীদের একাংশ জানাচ্ছেন, বিশ্বের নথভুক্ত ইতিহাসে এই জুলাই উষ্ণতম।
আবহাওয়াবিদদের আন্তর্জাতিক সংগঠন ডব্লিউএমও’র সেক্রেটারি জেনারেল পেট্টেরি টালাস বলেছেন, ‘‘এবারের জুলাই শেষ নয়। আরও বাড়বে তাপমাত্রা।’’ তিনি বলছেন, ‘‘জলবায়ু পরিবর্তনের কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি আমরা। বিশ্বকে তপ্ত করছে যে গ্রিনহাউস গ্যাসগুলি, কমাতেই হবে সেগুলির নির্গমন। জলবায়ু এখন আর কোনও বিলাসিতা নয়, বেঁচে থাকার বাস্তবতা।’’
ডব্লিউএমও’র সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস তৈরি করেছে এই রিপোর্ট। বলা হয়েছে, উত্তর গোলার্ধে তীব্র দাবদাহ জুলাইয়ে বিশ্বকে নথিভুক্ত ইতিহাসে উষ্ণতম করেছে।
রিপোর্ট বলছে, চলতি জুলাইয়ের প্রথম ২৩ দিনে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা ১৬.৯৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর মধ্যে উত্তর এবং দক্ষিণের বরফে ঢাকা মেরু অঞ্চল রয়েছে। জুলাইয়ে এই উত্তাপ অস্বাভাবিক। এর আগে ২০১৮’র জুলাইয়ে সবচেয়ে বেশি গড়া তাপমাত্রা নথিভুক্ত হয়। তখন গড় তাপমাত্রা ছিল ১৬.৬৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
জুলাইয়ে উত্তর আমেরিকায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায় একের পর এক এলাকা জ্বলেছে দাবানলে। ইউরোপে ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে গ্রিস, স্পেন বা ইতালিতে তীব্র তাপমাত্রায় জ্বলেছে বনাঞ্চল। তীব্র তাপমাত্রায় এই দেশগুলিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হতেও দেখা গিয়েছে। স্পেনের সদ্য শেষ নির্বাচনে জলবায়ু পরিবর্তন একটি আলোচ্যও হয়ে উঠেছে।
উষ্ণতায় জ্বলছে এশিয়ার বহু এলাকা। তার জেরে খাদ্য সঙ্কটের আশঙ্কা বাড়ছে বিশ্বে। কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্চ সার্ভিসের বিজ্ঞানীরা বলছেন যে তাঁরা ১৯৪০ থেকে নথিভুক্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখছেন প্রত্যেক গ্রীষ্মেই তাপমাত্রা বাড়ার প্রবণতা রয়েছে। তবে নথিভুক্ত ইতিহাসের অনেক আগে, গত ১ লক্ষ ২০ হাজার বছরে বিশ্বে এত উষ্ণ জুলাই দেখা যায়নি।
গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সহকারী প্রধান সামান্থা বার্জেস বলেছেন, ‘‘সমুদ্রের উপরতলের তাপমাত্রা বেনজির হারে বাড়ছে। সমস্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে সামনের বছর।’’
Comments :0